গবেষণার জন্য পড়তে পারেন ঢাবির জেনোসাইড স্টাডিজে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

যুগ যুগ ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটে যাওয়া জেনোসাইড নিয়ে গবেষণা করতে চাইলে পড়তে পারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগে। বিশেষ করে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্মম গণহত্যা বিষয়ে গবেষণার জন্য গবেষক তৈরিতে এই কোর্সটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিভাগ। প্রতিষ্ঠার নয় বছরেও সাউথ এশিয়ার একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতিমধ্যে বিশ্বে সুনাম অর্জন করেছে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা, মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী চালানো গণহত্যা, সম্প্রতি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জেনোসাইড, কালচারাল জেনোসাইড, এথনিক ক্লিনজিং বিষয়ে বিভিন্ন গ্রন্থ ও জার্নাল থেকে পড়ানো হয় কোর্সটিতে। এ ছাড়া বাংলাদেশ, বসনিয়া, আর্মেনিয়া, হলোকাস্ট, সার্বিয়া, নানকিং, কম্বোডিয়া, রুয়ান্ডা, দারফুর, রাজা লিওপোল্ডের গণহত্যাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটে যাওয়া গণহত্যা বিষয়ে ক্লাস নেন শিক্ষকেরা। কোর্স শেষে কৃতকার্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা (পিজিডি) সনদ প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

গত ১২ জুলাই ছিল নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সনদ বিতরণী অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান কোর্স সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিশ্বের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাঙালির অধিকার আদায়, আন্দোলন, সংগ্রামে অবদান রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।

সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগের ক্লাসে শিক্ষার্থী। ছবি: সংগৃহীত
সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগের ক্লাসে শিক্ষার্থী। ছবি: সংগৃহীত

সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, কোর্সটি ছাড়াও প্রতিবছর আমরা চেষ্টা করি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের সেমিনার আয়োজন করার। সেখানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষকবৃন্দ তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঠিক একইভাবে আমাদের পক্ষ থেকেও বিশ্বের মাঝে গবেষণাভিত্তিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ২৫ মার্চে গণহত্যা, রোহিঙ্গা ইস্যু এর মধ্যে অন্যতম। আমরা চেষ্টা করছি শুধু সাউথ এশিয়া নয়, বিশ্বের মাঝে স্বনামধন্য একটি গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর।

সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা জি এম আরিফুজ্জামান জানালেন, প্রতিবছর দুইটি সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ থাকে। তিন মাস মেয়াদি এই কোর্সের আসনসংখ্যা ৪৮ টি। আবেদন ফি দুই শত টাকা এবং ভর্তি ফি একাকালীন ২০ হাজার টাকা।

সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগে প্রতি শুক্র ও শনিবার ক্লাস হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বনামধন্য আইনজীবী, গবেষক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকেরা এই কোর্সটিতে নিয়মিত ক্লাস নেন।

ইমাম মেহেদী: মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ([email protected])।