স্বপ্নের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নায়ায়নকুল ড্রিম স্কুল

‘ড্রিম স্পিকার’ হিসেবে স্কুলে এসেছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ছবি: ছবি: সংগৃহীত
‘ড্রিম স্পিকার’ হিসেবে স্কুলে এসেছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ছবি: ছবি: সংগৃহীত

জাপানের পার্লামেন্ট সদস্য মিকি ওয়াতানাব প্রতিষ্ঠিত স্বপ্নের এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো গাজীপুরের নায়ায়নকুল ড্রিম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কথা হয়তো এ দেশের অনেকের কাছেই আজও অজানা। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।

জাপানের পার্লামেন্ট ডায়েটের সদস্য মিকি ওয়াতানাব স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান নায়ায়নকুল ড্রিম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। দেশটির স্বনামধন্য ‘ইকুবুনকান ইউমে গাকুয়েন’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আদলে গড়ে উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটি শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপট বলতে গেলে অবশ্যই বলতে হবে জাপানের সংসদ সদস্য মিকি ওয়াতানাবের জনহিতকর প্রচেষ্টার কথা। তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষের দেওয়া ‘ধন্যবাদ’ জীবনের এক বড় প্রাপ্তি। সে লক্ষ্যেই তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন নার্সিং কেয়ার হোম, বৃদ্ধদের জন্য ক্যাটারিং সার্ভিস, কৃষিখামারসহ আর অনেক প্রতিষ্ঠান। তার প্রতিষ্ঠিত ‘স্কুল এইড জাপান’-এর আদলে নেপাল ও কম্বোডিয়ায় অসংখ্য স্কুল পরিচালিত হয়। বিশিষ্ট এ শিক্ষানুরাগী জাপানে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘ইকুবুনকান ইউমে গাকুয়েন’–এ পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তিদের ‘ড্রিম স্পিকার’ হিসেবে আমন্ত্রণ জানান। নোবেল বিজয়ের পর সেই নিমন্ত্রণে ডাক পেয়েছিলেন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর তাঁর প্রস্তাবেই মিকি ওয়াতানাব বাংলাদেশে টিম পাঠালেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করা যাবে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করতে।

চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজও ‘ড্রিম স্পিকার’ হিসেবে স্কুলে এসেছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজও ‘ড্রিম স্পিকার’ হিসেবে স্কুলে এসেছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অবশেষে শুরু হলো স্কুলটির যাত্রা। ২০১৮ সালে খুলল কলেজ শাখা। জীবনে সংগ্রাম করে বড় হওয়া মিকি ওয়াতানাবে যেন গরিবদের এক কাছের মানুষ। তাই বাংলাদেশে তাঁর স্কুলের পদচারণ শুরু হলো অসহায় দরিদ্র মানুষের ছেলেমেয়েদের নিয়ে। যেসব ছেলেমেয়ে বলতে গেলে ঝরে পড়েছিল, তারাও পেল একদমই ফ্রিতে পড়ার সুযোগ।

স্বপ্নের স্কুল এগিয়ে যেতে লাগল। এখানেও ‘ইকুবুনকান ইউমে গাকুয়েন’–এর মতো স্বপ্নজয়ী মানুষেরা আসেন তাঁদের স্বপ্নপূরণের কথা বলতে আর শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে। স্কুলে ঢুকতেই চোখে পড়ে ‘ড্রিম স্পিকার’ বোর্ডটি। বোর্ডে সাংবাদিক ও কৃষি উন্নয়ন কর্মী শাইখ সিরাজ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাতসহ আরও অনেক ব্যক্তিত্বের ছবি। এরা স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে এসে অবাক হয়েছেন। সুন্দর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেখে বলে গেছেন তাঁদের নিজেদের স্বপ্ন ও স্বপ্নপূরণের কথা।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি স্কুলের ইনডোর স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেছেন। এ সময় জাপান পার্লামেন্টের সদস্য স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মিকি ওয়াতানাব, সাংসদ মেহের আফরোজ চুমকিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি স্কুলের ইনডোর স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেছেন। এ সময় জাপান পার্লামেন্টের সদস্য স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মিকি ওয়াতানাব, সাংসদ মেহের আফরোজ চুমকিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি স্কুলের ইনডোর স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেছেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে না এলে আমি জানতাম না, বাংলাদেশে এত চমৎকার এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে।’

এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখতে, স্বপ্ন অন্বেষণ করতে এবং স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করা। স্বপ্নের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এগিয়ে যাক—এই প্রত্যাশা এখানকার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অন্য সবার।