শিকলবন্দী আমিরকে উদ্ধার করলেন ইউএনও

বাবাকে বছরের পর শিকলবন্দী করে টয়লেটে রেখেছিলেন ছেলে ও তাঁর পরিবার। ছবি: নাজমুল হাসান
বাবাকে বছরের পর শিকলবন্দী করে টয়লেটে রেখেছিলেন ছেলে ও তাঁর পরিবার। ছবি: নাজমুল হাসান

ভারসাম্যহীন বাবাকে বছরের পর শিকলবন্দী করে টয়লেটে রেখেছিলেন ছেলে ও তাঁর পরিবার। গতকাল বুধবার নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ওয়াপদা বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিকলবন্দী আমির আলীকে উদ্ধার করে তাঁর বাড়িতেই ভালো একটি ঘরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তমাল হোসেন।

আমির আলীকে নোংরা জায়গায় বন্দী রাখার ব্যাপারে পরিবারের লোকজন ভুল শিকার করেছেন। পরবর্তী সময়ে আর তাঁকে এমনভাবে রাখা হবে না বলে ইউএনও ও এলাকাবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞা করেন।

শিকলবন্দী আমির আলী ওয়াপদা বাজারের আমির আলী সুপার মার্কেটের মালিক। শিকলবন্দী আমিরের এক ছেলে, দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সংসার।

আমির আলীর ভাগনে রহিমের অভিযোগ, দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ মামা আমির আলীকে কোনো চিকিৎসা না করিয়ে নোংরা জায়গায় বন্দী করে রেখেছিলেন তাঁর ছেলেমেয়ে ও স্ত্রী।

আমির আলীর ছেলে মঞ্জু আলী ও স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, আমির আলী ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাঁকে এমনভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে। ১৪ বছর আগে তাঁকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। এরপর আর কোনো চিকিৎসা করা হয়নি।

ইউএনও মো. তমাল হোসেন জানান, দীর্ঘ ১০ বছর আমির আলীকে তাঁর পরিবারের লোকজন একটি অস্বাস্থ্যকর কুঁড়েঘরে শিকলবন্দী করে রেখেছিলেন। বৃষ্টি হলেই সেই ঘরে হাঁটুসমান পানি জমত। শুধু তা–ই নয়, যে ঘরে আমির আলীকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল, সে ঘরেই তাঁর শোয়ার জায়গা ও টয়লেট স্থাপন করা হয়েছিল। ভাঙা কুঁড়েঘরে টয়লেট, গোসল, খাবারসহ পোকামাকড়ের কামড় খেয়েই কাটিয়েছেন ১০ বছর।