চাঁদার টাকার সাঁকো দিয়েই চলে ১০ গ্রামের মানুষের পারাপার

নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীর ওপর তৈরি সাঁকোটি যুক্ত করেছে গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলাকে। ছবি: নাজমুল হাসান
নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীর ওপর তৈরি সাঁকোটি যুক্ত করেছে গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলাকে। ছবি: নাজমুল হাসান

একটি সেতুর জন্য অপেক্ষা ২০ বছরের। কিন্তু মিলছে না সেতু। অবশেষে এলাকাবাসীর চাঁদার টাকায় তৈরি হয়েছে বাঁশের সাঁকো। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ওয়াপদা বাজারের পাশে নন্দকুঁজা নদীর ওপর তৈরি করা সাঁকো দিয়েই ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সব মানুষকে।

গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীর পশ্চিম অংশে এ সাঁকোটি গুরুদাসপুর ও সিংড়া এ দুই উপজেলাকে যুক্ত করেছে। দুই উপজেলার মানুষের পারাপারের জন্য নেই কোনো সেতু বা ব্রিজ। গুরুদাসপুর অংশে শ্যামপুর, কুঠিপাড়া, চন্দ্রপুর, ঠাকুরপাড়া ও ময়মনসিংহপাড়া এবং সিংড়া অংশের মাটিকোবা, শালিখা, চামারি, মণ্ডলপাড়া ও টলটলিপাড়ার মানুষ এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন।

দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানোর পরও সেতু না পেয়ে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। এই সাঁকো দিয়েই ১০ গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোর ওপর নির্ভর করে ঝুঁকি নিয়ে এলাকার স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে চলাচল করতে হয়। দীর্ঘদিন এভাবেই পারাপার হয়ে আসছে সীমান্তবর্তী এই দুই উপজেলার মানুষ। এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো এখন এই এলাকার মানুষের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা।

নন্দকুঁজা নদীর গুরুদাসপুর অংশের ওয়াপদা বাজারে বসে হাট। সপ্তাহে দুই দিন এ হাটে সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার হাজারো মানুষ কেনাকাটা করেন।

সেতু পরিচালনা কমিটির ক্যাশিয়ার মো. আকতার হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকে কেবল শুনে আসছি এখানে একটি ব্রিজ হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। আমাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত, চলাফেরা, হাটে পণ্য আনা-নেওয়ায় অনেক কষ্ট হয়। অসুস্থ রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই আমরা এলাকাবাসী মিলে নিজেদের চাঁদার টাকায় বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছি।

সেতু পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. শাজাহান আলী বলেন, ‘এ এলাকায় একটি ব্রিজ না হওয়ায় আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। চলাচলের জন্য এলাকাবাসীর চাঁদার প্রায় ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা এবং ৫০০ বাঁশ সংগ্রহ করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। তার পরও প্রতিবছর সংস্কার করতে ব্যয় হয় অর্থ। অতি দ্রুত এখানে একটি ব্রিজ দরকার।

নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু বলেন, ওই জায়গায় ব্রিজ নির্মাণ অতি প্রয়োজন। ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী আ. ন. ম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।