সরাইলে নদী রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে

সরাইল উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী রাজাপুর গ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর গ্রাম পর্যন্ত ‘নদী তীর রক্ষা বাঁধ’ নির্মাণ করা হচ্ছে। ছবি: এম মনসুর আলী
সরাইল উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী রাজাপুর গ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর গ্রাম পর্যন্ত ‘নদী তীর রক্ষা বাঁধ’ নির্মাণ করা হচ্ছে। ছবি: এম মনসুর আলী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদীর তীরবর্তী রাজাপুর থেকে সিঙ্গাপুর গ্রাম পর্যন্ত ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নদী তীর রক্ষা বাঁধ’ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর, কাকরিয়া, সিঙ্গাপুর ও চরকাকরিয়া গ্রাম নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে।

ইতিমধ্যে বাঁধ নির্মাণের মালামাল আনা শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের থাকার জন্য ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণের খবরে নদী তীরবর্তী চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। গ্রামবাসী তাঁদের দুঃখ লাঘবের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি স্থানীয় ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাকিমকে নিয়ে তাঁরা গর্ববোধ করছেন। কারণ, এ বাঁধ নির্মাণে ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছেন তিনি।

রাজাপুর গ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর গ্রাম পর্যন্ত ‘নদী তীর রক্ষা বাঁধ’ নির্মাণ করা হলে নদীভাঙন থেকে রক্ষা পাবে গ্রামবাসী। ছবি: এম মনসুর আলী
রাজাপুর গ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর গ্রাম পর্যন্ত ‘নদী তীর রক্ষা বাঁধ’ নির্মাণ করা হলে নদীভাঙন থেকে রক্ষা পাবে গ্রামবাসী। ছবি: এম মনসুর আলী

কাকরিয়া গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আসিফ ইকবাল বলেন, ‘মূলত আমাদের বাড়ি ছিল রাজাপুর গ্রামে। ৪৫ বছর আগে নদীভাঙনে ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেলে আমরা কাকরিয়া গ্রামে নতুনভাবে বাসস্থান গড়ে তুলি। শুধু আমরাই নই, নদীভাঙনে এ গ্রামের অন্তত দুই শতাধিক পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছেন। এখনো এখানে নদীভাঙন অব্যাহত আছে।’

আবদুল হাকিম বলেন, ‘এখানকার নদীভাঙনে আমার বাপ-দাদার ভিটেমাটি ১৯৭২ সালে বিলীন হয়ে গেছে। মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থানসহ রাজাপুর গ্রামের শত শত বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। আমার অঙ্গীকার ছিল আমাদের মতো এখানকার নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোর আর কোনো পরিবার যেন ভিটেমাটিহারা না হন। সবার সহযোগিতায় আমি এতে সফল হয়েছি। এতে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’

বাঁধ নির্মাণ করা হলে অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর, কাকরিয়া, সিঙ্গাপুর ও চরকাকরিয়ান গ্রাম নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে। ছবি: এম মনসুর আলী
বাঁধ নির্মাণ করা হলে অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর, কাকরিয়া, সিঙ্গাপুর ও চরকাকরিয়ান গ্রাম নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে। ছবি: এম মনসুর আলী

এ বিষয়ে গত রোববার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, মেঘনা নদীর তীরবর্তী রাজাপুর থেকে সিঙ্গাপুর গ্রাম এলাকা পর্যন্ত ৩৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এ কাজ তিন স্তরে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের টেন্ডার পেয়েছে ঢাকার মেসার্স ডলি কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তৃতীয় স্তরের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে পাথরের ব্লক তৈরির কাজ শুরুর পর বাঁধ নির্মাণ করা হবে।