বৃক্ষপ্রেমিক শিক্ষক আকবর আলী
ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকবর আলী আহসান। গাছের প্রতি ভালোবাসার কারণে তাঁর বিভাগের ছাত্রছাত্রীসহ ক্যাম্পাসের সবার কাছেই তিনি পরিচিত ও প্রিয় মুখ। আর বৃক্ষরোপণের নেশায় মুখর এই শিক্ষক নিজের অর্থায়নে রোপণ করেন গাছ।
আকবর আলী আহসান ২০১৮ সাল থেকে বৃক্ষরোপণ শুরু করেন। এরপর থেকে গাছ লাগানোই তাঁর নেশা। এ নেশা আর পিছু ছাড়েনি। দুই বছর ধরে তিনি সরকারি পতিত জমি, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ও পুকুর পাড়ে গাছের চারা রোপণ করে যাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপকে সঙ্গে নিয়ে ছুটির দিনে ফুলপুর উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে দেখা যায়, দেশি ও নানা প্রজাতির কিছু বৃক্ষরোপণ করতে। এর মধ্যে আবার কিছু গাছ আছে ঔষধি গুণসম্পন্ন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নিম, হরীতকী, বহেড়া, কামরাঙা, পেঁপে, আমড়া ইত্যাদি। শুধু তাই নয়, বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে রোপণ করেন তালগাছ ও বিচি। প্রতিটি গাছের পেছনে তিনি সময় দেন এবং নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসেন। প্রায় দুই বছর ধরে নিজের অর্থায়নে রোপণ করছেন ফলদ ও বনজ বৃক্ষ। তাঁর লাগানো কিছু কিছু গাছে এখনই ফল ধরেছে। বৃক্ষরোপণ আন্দোলনে বিপ্লব আনতে কাজ করে যাচ্ছেন আকবর আলী আহসান। তিনি ফুলপুর উপজেলার চড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
প্রতি শুক্রবার আকবর আলী আহসানকে দেখা যায় বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে চারা রোপণ করতে। ইতিমধ্যে তিনি এলাকায় ‘বৃক্ষপ্রেমিক’ নামে সুনাম অর্জন করেছেন। তাঁর বৃক্ষপ্রীতির কথা ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মুখে মুখে। একজন শিক্ষক হয়েও নিজ অর্থায়নে গাছ লাগিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন তিনি।
গাছের চারা রোপণে সামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ‘ব্রহ্মপুত্র ব্লাড কল্যাণ সোসাইটি’ আকবর আলী আহসানকে সম্মাননা স্মারকে ভূষিত করেন। দারিদ্র্যকে পেছনে ফেলে প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ করছেন। বৃক্ষরোপণ করেই তৃপ্তি পান তিনি।
আকবর আলী আহসান বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতার হ্রাসে ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই। তা ছাড়া বৃক্ষ থেকে আমরা প্রচুর ফল, ফুল ও কাঠ পাই যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই প্রয়োজন। আমার প্রত্যাশা ফুলপুরসহ বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তর সবুজের সমারোহে ছেয়ে যাক, পৃথিবী পাক তার আপন স্বরূপ।’