পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে চার দাবি

পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজিউমার্স সোসাইটির (সিসিএস)। রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি তুলে ধরে সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ। উপস্থিত ছিলেন সিসিএসের গবেষণা দলের সমন্বয়ক জয়ন্ত কৃষ্ণ ও শরিফুল ইসলাম।

‘পেঁয়াজের মূল্য সিন্ডিকেটের নৈরাজ্য’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত চার মাসে অব্যাহতভাবে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। ১২২ দিনে মোট ২৪ বার পণ্যটির দাম ওঠা–নামা করেছে। এই সময়ে ভোক্তার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। চার মাসে পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে ৪০০ গুণ। আর গত এক মাসে দৈনিক ৫০০ কোটি টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি খুচরা বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। যা দেশের ইতিহাসে পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম। কোথাও কোথাও পেঁয়াজ এখন ‘হালি’ দরে বিক্রি হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের পক্ষে এখন পেঁয়াজ দুর্লভ পণ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পেঁয়াজের মূল্যের এই ওঠা-নামার পেছনে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে উল্লেখ করে পলাশ মাহমুদ বলেন, গত চার মাসে বাণিজ্যমন্ত্রী অন্তত পাঁচবার স্বীকার করেছেন, পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে সিন্ডিকেট কাজ করছে। চট্টগ্রামে সিন্ডিকেটের ১৩ সদস্যকে চিহ্নিত করা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যা ভোক্তাকে হতাশ, ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করে।

দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই উল্লেখ করে সিসিএসের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশে বছরে ২৪ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর দুই–তৃতীয়াংশ বা ১৬ লাখ মেট্রিক টনের চাহিদা দেশি পেঁয়াজে পূরণ হয়। কোনো দেশ রপ্তানি বন্ধ করলে দেশি পেঁয়াজ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার বা কমে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমদানি খরচ বৃদ্ধির অজুহাতও প্রযোজ্য নয়। ফলে সরবরাহ কম ও আমদানি খরচ বৃদ্ধির অজুহাতে ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভারত পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ও পরে রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বাড়ানো হয়। এক দিনেই বর্ধিত দামের পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসা সম্ভব নয়। এর পরপরই ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ এক মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু দেশের বাজারে এখনো ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। এতেই প্রমাণিত হয়, পেঁয়াজের সরবরাহ যথেষ্ট ছিল এবং আছে।