বিজয় দিবসে জাবিয়ানদের প্রথম ফিস্ট উৎসব

বিজয় দিবসের শোভাযাত্রার মাধ্যমে সাবেকদের ফিস্ট উৎসব শুরু হয়। মঙ্গলবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো ও নতুন শিক্ষার্থীরা আয়োজন করে প্রথমবারে মতো ফিস্ট উৎসব। ছবি: লেখক
বিজয় দিবসের শোভাযাত্রার মাধ্যমে সাবেকদের ফিস্ট উৎসব শুরু হয়। মঙ্গলবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো ও নতুন শিক্ষার্থীরা আয়োজন করে প্রথমবারে মতো ফিস্ট উৎসব। ছবি: লেখক

মহান বিজয় দিবসের আগের দিন ফেসবুকে একটি পোস্ট, ‘এবারের বিজয় দিবসের ফিস্ট খেতে চাই’। বাকিটা ইতিহাস! মাত্র এক দিনের মধ্যে জাবিয়ান পারস্পরিক ভালোবাসা আর প্রচেষ্টায় প্রথমবারের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফিস্ট উৎসব’।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো ও নতুন শিক্ষার্থীরা আয়োজন করে প্রথমবারে মতো ফিস্ট উৎসব। দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয় কুপন বিক্রি। নামমাত্র মূল্যে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটরিয়ায় যে মেনু পরিবেশন করা হয়, এটা কী করে সম্ভব হলো তা ভাবতেও শিউরে উঠতে হয়।

চলছে টোকেন বিক্রি। ছবি: লেখক
চলছে টোকেন বিক্রি। ছবি: লেখক

বিকেল পাঁচটায় বর্ণাঢ্য বিজয় দিবসের শোভাযাত্রার মাধ্যমে সাবেকদের ফিস্ট উৎসব শুরু হয়। পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি আর বিশ্বাসের জায়গা কতটা মজবুত হলে স্বল্প সময়ের নোটিশে এত বড় অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব, ফিস্ট উৎসবে যাঁরা গেছেন, বলতে পারবেন তাঁরাই।

জাবিয়ান সম্প্রীতির কাছে কোনো কাজই কঠিন নয়, এটা আবারও প্রমাণিত হলো। যাঁরা এ কাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকে এ উৎসবকে সাফল্যমণ্ডিত করেছেন, তাঁদের অনেক অনেক অভিনন্দন ও ভালোবাসা।

এখন প্রশ্ন হলো কীভাবে হলো অসাধ্যসাধন? ফেসবুক স্ট্যাটাসটি ছিলো বন্ধু জেবির। জেবি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ক্যাম্পাসের প্রিয়মুখ মেহেদী জামিল (২৪ ব্যাচ দর্শন) ভাইয়ের সঙ্গে। পাশাপাশি উৎসাহ জোগান মিন্টু সম্রাট ভাই (২৭ ব্যাচ)। মাঝরাত পর্যন্ত বিভিন্ন আলোচনা, সংযোজন–বিয়োজন শেষে সিদ্ধান্ত ফাইনাল ১৬ ডিসেম্বরে সাবেকদের বিজয় ফিস্ট হবে এবং তা নিজেদের উদ্যোগে।

রাতে ফানুস ওড়ানো হয়। ছবি: লেখক
রাতে ফানুস ওড়ানো হয়। ছবি: লেখক

যেমন কথা তেমন কাজ। পোস্ট দেওয়া হলো ‘আমরাই জাহাঙ্গীরনগর’ গ্রুপে। পোস্টের পর মুহূর্তেই ব্যাপক সাড়া পড়ে যায় ফেসবুকে। এরপর কয়েকজনের ইচ্ছেটা ধীরে ধীরে পাখা মেলতে শুরু করে, ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মূলত মেহেদী জামিল ভাইয়ের কাছ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ার পর দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসেন দেহলভী (৩৩), ছোট ভাই হিমেল (৩৪), মশিউর (৩৪), উত্তম (৪২), সানি (৩৯), রনি (৪১), মাহী (৪৫), যূথীসহ (৪৫) আরও অনেকেই। এ রকম একটা আনন্দ আয়োজনের শুরু থেকে বন্ধু কাশেম ম্যাক, রফিক, রাজীব, তানজীরের সঙ্গে নিজেও সরাসরি সম্পৃক্ত থাকতে পেরে জাবিয়ান হিসেবে নিজেকে আবারও ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

সাবেকদের ফিস্ট উৎসব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নতুন সম্ভাবনার জায়গা তৈরি করে দিল। অটুট থাকুক জাবিয়ান সম্প্রীতি। আর এ গল্পের শেষ বলে কিছু নেই। চলতে থাকুক বছরের পর বছর এই সম্প্রীতির মিলনমেলা। ভালোবাসাগুলো ছুঁয়ে যাক প্রতিটি জাবিয়ানের হৃদমাঝারে।

*শরীফ মেহেদী হাসান রানা, শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়