ফুলপুরে সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে নবান্ন-পিঠা উৎসব

ফুলপুরের গ্রামাউস মডেল একাডেমিতে ফুলপুর সাহিত্য পরিষদ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে। ছবি: লেখক
ফুলপুরের গ্রামাউস মডেল একাডেমিতে ফুলপুর সাহিত্য পরিষদ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে। ছবি: লেখক

ফুলপুরের গ্রামাউস মডেল একাডেমিতে ঢুকতেই আমেজটা বোঝা গেল। শীতের দুপুরের রৌদ্র ঠান্ডা হিম বাতাসে উৎসবে নতুন মাত্রা পেল। ময়মনসিংহ ফুলপুর সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া পিঠা উৎসবে এমন আমেজ পাওয়া গেল।

ষড়ঋতুর এ দেশে শীত অন্য রকম এক ঋতু। শীতেই বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়। শহুরে সমাজে সেই ঐতিহ্যের ধারা কিছুটা মলিন হয়ে গেলেও সাহিত্য পরিষদের এমন পিঠা উৎসবের আয়োজন বাঙালি ঐতিহ্য আর রীতিনীতিকে কিছুটা মনে করিয়ে দেয়। উৎসবের আমেজ লাগে মনে।

উৎসবের প্রবেশমুখেই নানা পিঠার ঘ্রাণে জিবে জল আসার জোগাড়। উৎসবস্থলে ঢোকামাত্রই দেখা গেল বাঙালি ঐতিহ্যের নানা রকম পিঠা। পুলি, ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, মাংস পিঠা, নকশা, পাকন, শামুক, ডিম প্রভৃতি পিঠার সমাহার। মনে পড়ে গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিঠা উৎসবের স্টলগুলোর কথা। যেমন রংধনু পিঠাঘর, এইউএসটি পিঠা ঘর, রসের হাঁড়ি, পিঠা বিলাস, হাও-মাও পিঠা খাও, মিঠাই ঘর, নবান্ন পিঠা, ককটেল, ইট পিঠা বি মিঠা, পৌষাল, পিঠাওয়ালা, প্রজাপতি পিঠা, পিঠাঞ্জলি।

নবান্ন পিঠা উৎসবে পুলি, ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, মাংস পিঠা, নকশা, পাকন, শামুক, ডিম প্রভৃতির সমাহার ছিল। ছবি: লেখক
নবান্ন পিঠা উৎসবে পুলি, ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, মাংস পিঠা, নকশা, পাকন, শামুক, ডিম প্রভৃতির সমাহার ছিল। ছবি: লেখক

উৎসবের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। ফুলপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি আকবর আলী আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নবান্ন-পিঠা উৎসবে আরও উপস্থিত ছিলেন ফুলপুর পৌরসভার মেয়র মো. আমিনুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহ্ কুতুব চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য আবদুল খালেক, ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তর (ওসি) ইমারত হোসেন গাজী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া পারভীন লাকি, ফুলপুর মহিলা ডিগ্রি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ রওশন আরা বেগম, গ্রামাউসের উপপরিচালক হাবিবুর রহমান হবি, ফুলপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরমুজ আলী চৌধুরী, পয়ারী গকুল চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী, ফুলপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ নিগার সুলতানাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সাংবাদিক, সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টা, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা ও সাহিত্য পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পিঠা উৎসবে নানা পিঠার সমাহার নিয়ে হাজির ছিল সাহিত্য পরিষদ। সাহিত্য পরিষদের সভাপতি আকবর আলী আহসান বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা পিঠা উৎসব করে থাকি। ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে শীত আমাদের অনেকের কাছেই প্রিয়। বাঙালি ঐতিহ্যগত কারণে এ ঋতুর সঙ্গে পিঠার অন্য রকম যোগসূত্র আছে। তাই শীতকে আমরা বরণ করে নিই এই পিঠা উৎসবের মাধ্যমে। তা ছাড়া পিঠা উৎসবের মাধ্যমে মিলনমেলা তৈরি হয়।’

পিঠা উৎসবে প্রচুর লোকের সমাগম ঘটে। সব পেশার মানুষের সমাগমে উৎসব প্রাণচাঞ্চল্য পায়। উৎসবে আসা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পিঠা খেয়ে বলেছেন, প্রতিবছরই এ উৎসব হয়। ভালো লাগে এমন উৎসবে আসতে। শীতে বাড়িতেও মা পিঠা বানান। তবে এ রকম উৎসবে সবার সঙ্গে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা।