বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাবে। ছবি: সংগৃহীত
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাবে। ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ আলোচনার সভার আয়োজন করা হয়েছিল।

সাব-সেক্টর কমান্ডার অধ্যক্ষ গাজী মো. দেলওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির নেই যে, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু দেশের স্বাধীনতার শত্রুরা তাই করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো করে যাচ্ছেন। সবার উচিত প্রধানমন্ত্রীর কাজ ও সিদ্ধান্তগুলোকে সমর্থন দেওয়া।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ। তিনি বুঝতে পরেছিলেন, এই বাংলা একদিন পাকিস্তানি কলোনি হবে, তাই তিনি আগেই ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের মতো শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, একটি দেশের উন্নতি তখন হয়, যখন তাঁর কৃষি উৎপাদন পর্যাপ্ত থাকে ও পরিবহনব্যবস্থা উন্নত থাকে। তাই তিনি তাঁর শাসনকালে কৃষি পুরস্কার চালু করেন ও পরিবহনব্যবস্থা ঠিক করার জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

মসিউর রহমান বলেন, ‘কৃষির উন্নতি ছাড়া দেশ পরনির্ভর হয়ে পড়ে। তাই সহজ শর্তে কৃষিঋণ দিতে হবে। কৃষক টাকা না পেলে উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং দেশও অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ে। তাই এই খাতে এখনই নজর দেওয়া জরুরি। আমাদের দুর্ভাগ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি আরও কিছুদিন থাকতেন, তাহলে ভালো হতো। কিন্তু এ দেশের শত্রু ও স্বাধীনতার শত্রুরা তাঁকে বাঁচতে দেয়নি। সবার কাছে আমার আবেদন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে করে যাচ্ছেন। তাই সবার উচিত হবে প্রধানমন্ত্রীর কাজ ও সিদ্ধান্তগুলোকে সমর্থন দেওয়া।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএমএর সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এই দেশ হতো ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত ও একটি উন্নত দেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার অভিপ্রায়ে অক্লান্ত কাজ করে চলেছেন।

অধ্যক্ষ গাজী মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে নজির নেই যে জেলখানার মধ্যে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এই দেশের স্বাধীনতার শত্রুরা তা–ই করেছে। তারা মনে করেছিল, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বেঁচে থাকলে এই দেশ একদিন ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু তাদের এ স্বপ্ন ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। আজ বাংলার ঘরে ঘরে লাখ লাখ হৃদয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সুর ধ্বনিত–প্রতিধ্বনিত ও অনুরণিত হয় অবিরাম। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা যখন থাকব না, তখন আমাদের সন্তানেরা এ আদর্শ ধারণ করে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জি এম কামরুল ইসলাম এসপিপি (অব.) বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য একটা সুযোগ এসেছে, এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। নীতি–নৈতিকতা থেকে আমরা যে পিছিয়ে পড়েছি, তার উত্তরণ ঘটাতে হবে। যা আমাদের সন্তানদের জন্য একটি ভালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন, কৃষিবিদ আবদুস ছাত্তার, ইমদাদুল হক খন্দকার, ফয়জুল আমীন নান্টু, জয়পুরহাটের জেলা জজ এম এ রব হাওলাদার, আলাউদ্দিন সরদার প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের ক্রেস্ট দেওয়া হয়।