'ইট বালু দি তালি দিল, কয় দিন থাকিল'

এটি কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা মার্কাজ রোডের ছবি। ছবি: লেখক
এটি কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা মার্কাজ রোডের ছবি। ছবি: লেখক

‘ছবি তুলি কী অইবো? কিছু করতে পারবেন না। কিছুদিন আগে ইট বালু দি তালি দিল। কয় দিন থাকিল? এখন ধান চাষ করলে ভালা অইতো।’

আজ রোববার সকালে কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা মার্কাজ রোডের ছবি তুলতে গিয়ে এমন কথা শুনতে হলো স্থানীয় রিকশাচালক রহিম মিয়ার কাছে।

চকরিয়ার ডুলাহাজারা ও লামা উপজেলার বৃহৎ জনগোষ্ঠীর একমাত্র চলাচলের এ সড়কে মার্কাজ রোড। এলাকার মার্কাজ মসজিদের পর থেকে কার্পেটিং ও ইটের প্রলেপহীন হয়ে বড় বড় গর্ত এবং এঁটেল মাটির জমিতে পরিণত হওয়ায় ক্ষোভ নিয়েই এসব কথা বলছিলেন ওই রিকশাচালক।

রহিম মিয়ার কথার সূত্র ধরে স্থানীয় কলেজছাত্র কায়সার কায়েস বলেন, ‘এ জমিতুল্য রাস্তায় কেউ হাটতে চায় না, বাধ্য হয়ে হাটে। কেউ যদি ভুলে পড়ে যায়, তাহলে কাদা মেখে ভাস্কর্য হয়ে যেতে হয়! কারও কষ্টের শেষ নাই। তবু নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।’

চলাচলে ভোগান্তির কারণে সড়কটি নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই সাধারণ মানুষের। ছবি: লেখক
চলাচলে ভোগান্তির কারণে সড়কটি নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই সাধারণ মানুষের। ছবি: লেখক

শুধু রহিম মিয়া কিংবা কায়সার কায়েস নন, এ সড়ক নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই স্থানীয় সাধারণ মানুষের। কিছুদিন আগে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে জোড়াতালি সংস্কারের মাত্র সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই আবারও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক আগের অবস্থা ফিরে পাওয়ায় এবার আন্দোলনের কথাই ভাবছেন তাঁরা।

আজ রোববার সকাল থেকে সরেজমিনে এ সড়ক ঘুরে ছোট-বড় খানাখন্দ, ঝুঁকি নিয়ে চলা যানবাহন এবং যাত্রী-পথচারীদের ভোগান্তির খণ্ড খণ্ড দৃশ্য চোখে পড়ে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে শুরু হওয়া এ রাস্তা লামা উপজেলার বৃহৎ জনগোষ্ঠীরও যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন হওয়ায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ মোকাবিলা করেই হাজারো যাত্রীকে চলাচল করতে হচ্ছে। নাভিশ্বাস উঠেছে স্থানীয় পথচারীদেরও।

স্থানীয় লোকজন জানান, মহাসড়ক থেকে মার্কাজ মসজিদ পর্যন্ত মাত্র কয়েক শ মিটার রাস্তা কিছুদিন আগে সংস্কার করা হলেও বাকি ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার সংস্কারের বিষয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।

চকরিয়ার ডুলাহাজারা ও লামা উপজেলার জনগোষ্ঠীর একমাত্র চলাচলের সড়কটির কারণে ভোগান্তি সাধারণ মানুষের।
চকরিয়ার ডুলাহাজারা ও লামা উপজেলার জনগোষ্ঠীর একমাত্র চলাচলের সড়কটির কারণে ভোগান্তি সাধারণ মানুষের।

স্থানীয় অটোরিকশাচালক মো. আজিম বলেন, ‘বড় বড় গর্তের কারণে ওই অংশ পুকুরের মতো অবস্থা হওয়ায় প্রতিনিয়তই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক যানবাহন বিকলও হচ্ছে। আমাদের এই দুরবস্থা দেখার নেই কেউ।’

স্থানীয় একাধিক যানবাহনের চালক জানান, ছোট-বড় গর্তগুলো ইট, সুরকি ও বালু দিয়ে ভরাট করে দিলে কোনো রকমে যানবাহন চলাচল করতে পারত। কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। অবস্থা এমন, ওই গর্তগুলোয় ছোট ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়!

গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের করুণ দশা সম্পর্কে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘সাময়িক কাজ করে এ সড়ক ঠিক করা যাবে না। আমরা ঊর্ধ্বতন মহলে অবহিত করেছি। সেখান থেকে ঘোষণা এলেই কাজ শুরু হবে।’