কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন নিয়ে সাবেকদের ভাবনা

মো. মেহেদি হাসান। ছবি: সংগৃহীত
মো. মেহেদি হাসান। ছবি: সংগৃহীত

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সমাবর্তন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া। দিনটি ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক অন্য রকম আবেগ কাজ করে। আর সে সমাবর্তন যদি বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের প্রথম সমাবর্তন হয়, তাহলে আনন্দ ও ভাবনা আরও বাড়িয়ে তোলে। দেশের মধ্য-পূর্বাঞ্চলের বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৭ জানুয়ারি।

প্রথম সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ। প্রথম সমাবর্তন নিয়ে গ্র্যাজুয়েটরা তাঁদের ভাবনার কথা জানিয়েছেন।

এমদাদুল বারী। ছবি: সংগৃহীত
এমদাদুল বারী। ছবি: সংগৃহীত

ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. মেহেদি হাসান বলেন, ‘প্রথম সমাবর্তন হোক ভালো মানুষ হওয়ার প্রত্যয়ে ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত করানোর সবচেয়ে বড় মিলনমেলা। অনেক বড় আয়োজন হোক। কনসার্ট ও নাচ–গানের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হোক সমাবর্তন বক্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে। সমাবর্তন নিয়ে যেন গ্র্যাজুয়েটদের আগ্রহ না কমে, সেদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও অ্যালামনাইদের সুদৃষ্টি রাখা বাঞ্ছনীয়।’

অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এমদাদুল বারী বলেন, ‘প্রথম সবকিছুরই একটি আলাদা আনন্দ ও বৈশিষ্ট্য থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলাম, সে হিসাবে অনেক ভাগ্যবান মনে করব নিজেকে। ভাগ্য আর সুপ্রসন্ন হলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম সমাবর্তন পাচ্ছি। প্রত্যাশা থাকবে সমাবর্তনসংক্রান্ত সব কমিটির কাছে, আমাদের মূল সার্টিফিকেট, যেটি দেওয়া হবে, তাতে কোনো সমস্যা যেন না হয়, সেদিকে খুব ভালোভাবে নজর দেওয়ার জন্য।’

সমাবর্তনের আগের দিন থেকে সমাবর্তনের দিন পর্যন্ত গ্র্যাজুয়েটদের আবাসনব্যবস্থা এবং যাতায়াতব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান এমদাদুল বারী।

আমেনা বেগম। ছবি: সংগৃহীত
আমেনা বেগম। ছবি: সংগৃহীত

ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আমেনা বেগম বলেন, ‘২৭ জানুয়ারি সেই আকাঙ্ক্ষিত দিন আসছে। প্রাণের ক্যাম্পাসে একটু উপভোগ করতে শত ব্যস্ততার মধ্যেও ছুটে আসবে গ্র্যাজুয়েটরা। কালো গাউন, ক্যাপ পরে রেখে যাওয়া স্মৃতিগুলোকে ফিরে পেয়ে হবে উচ্ছ্বসিত। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, সমাবর্তন বক্তা ও আমন্ত্রিত গুণী ব্যক্তিবর্গকে একঝলক দেখার জন্য মুখিয়ে আছি। শিক্ষাজীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রদান করা হবে ডিগ্রি। সমাবর্তনের এই ধারাবাহিকতা যেন ভবিষ্যতেও বজায় থাকে।’

মোহাম্মদ মহসিন। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ মহসিন। ছবি: সংগৃহীত

নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘সমাবর্তন একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থীর জন্য কতটুকু আগ্রহের, কতটুকু আবেগের, সেটা সাবেক একজন শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেই অনুভব করছি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আবেগের, ভালোবাসার। সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ ঘোষণার পর থেকেই গুনতে শুরু করেছি কখন আসবে সেই অনুভূতিতে মিশে থাকা দিনটি। প্রথম সমাবর্তনের সফলতা কামনা করে একটি কথাই বলব, সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে আয়োজক কমিটি আয়োজন করবে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত সমাবর্তন, যা হবে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে।’

রফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
রফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি যদি বলি, সেটা প্রথম সমাবর্তন। এ সমাবর্তনকে ঘিরে আনন্দের শেষ নেই। তবে সমাবর্তন বক্তা সাধারণত হয় কোনো নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব, নিজ পেশায় সফল ও অনুকরণীয় বা দুনিয়াজুড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নিরপেক্ষ কোনো ব্যক্তি, যাঁর প্রতিটি কথা, প্রতিটি শব্দ সবার মনে দাগ কাটবে, প্রেরণা জোগাবে, উৎসাহ প্রদান করবে। সমাবর্তনপ্রাপ্ত গ্র্যাজুয়েটরাও সমাবর্তন বক্তার চমকপ্রদ সব কথায় অনুপ্রাণিত হওয়ার মতো সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না।’


*এ বি এস ফরহাদ; শিক্ষার্থী, কুবি