বাঁশের সুদিন ফেরাতে প্রস্তুত বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র

বাঁশপণ্যের শিল্প রক্ষায় পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট নীলফামারীর ডোমারে নির্মাণ করেছে আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ছবি: লেখক
বাঁশপণ্যের শিল্প রক্ষায় পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট নীলফামারীর ডোমারে নির্মাণ করেছে আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ছবি: লেখক

বাঁশের তৈরি পণ্যের এখন আর তেমন কদর নেই বললেই চলে। ঐতিহ্য হারাতে বসেছে বাঁশ নিয়ে তৈরি পণ্য। একসময় গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসাক্ষেত্রে বাঁশের তৈরি পণ্য ব্যবহার করলেও এখন তা কমে এসেছে। প্রায় বিলুপ্তির পথে এ শিল্প। তবে শিল্পটি রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট।

নীলফামারীর ডোমারে নির্মাণ করা হয়েছে আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে দুই একর জমির ওপর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে ভবনটির।

বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা কেন্দ্রটি। ইতিমধ্যেই ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হয়েছে। বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে ভবনের কক্ষগুলো। বাঁশের তৈরি সোফাসেট, চেয়ার, টেবিলগুলো দেখতে অবিকল কাঠের আসবাবপত্রের মতোই। বাঁশ চাষ, বাঁশ ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ করে মূল্যবান ও আকর্ষণীয় পণ্য তৈরীকরণ, উন্নত জাতের বাঁশ চাষে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে চাষিদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করাই হবে এর লক্ষ্য।

বর্তমান দেশে ৩৩ জাতের বাঁশ রয়েছে। এসব বাঁশ নিয়ে গবেষণা করে চাষিদের উৎসাহিত করা হবে। বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ডোমার শহরের বন বিভাগের কাছেই গবেষণা কেন্দ্রটি হওয়ায় এলাকাটি এখন আলোয় ভরে উঠেছে। বিকেল থেকেই লোকজন ভিড় করে নতুন ভবনটি দেখার জন্য।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীন ডোমার উপজেলা আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম। ২০১৬ সালে এর কাজ শুরু হয়।

আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ভবনের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে ভবনটি। আমরা চাষিদের বাঁশ চাষে উৎসাহিত করব এবং বাঁশের আসবাবপত্র তৈরিসহ যাবতীয় প্রশিক্ষণ দেব। আবার তাদের কাছ থেকেই আমরা এসব পণ্য কিনব। ফলে, বাঁশ চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হবে। দূর হবে বেকারত্ব।’

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে গবেষণা কেন্দ্রটির ল্যাবরেটরি উদ্বোধন করা হবে বলে প্রকল্প পরিচালক ড. মো. রফিকুল হায়দার জানিয়েছেন।