রাবির সাবেক সাংস্কৃতিক কর্মী সম্মিলনে সংবর্ধিত সেলিনা হোসেন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাংস্কৃতিক কর্মীদের সম্মিলনে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, আগারগাঁও, ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি। ছবি: ফাত্তাহ তানভীর রানা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাংস্কৃতিক কর্মীদের সম্মিলনে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, আগারগাঁও, ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি। ছবি: ফাত্তাহ তানভীর রানা

‘এসো মিলি প্রাণের টানে’—এ স্লোগান সামনে রেখে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক সাংস্কৃতিক কর্মী সম্মিলন। সম্মিলনে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক কর্মী সম্মিলনে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেলিনা হোসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় তাঁর ব্যক্তিজীবন, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন।

যদিও সাংস্কৃতিক কর্মী কখনো সাবেক হয় না, কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিমণ্ডলে যাঁরা বিভিন্ন সময় নাটক, গান ও বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের অভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আনার এ প্রয়াসে উপস্থিত ছিলেন তিন শতাধিক মানুষ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মো. শহীদুল ইসলাম সেলিনা হোসেনের সাহিত্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ভাবধারা এবং সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিচর্চার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আজম শান্তনু বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে যাঁরা সাংস্কৃতিক চর্চা করছেন, তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের অতিমাত্রায় পাঠে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও প্রখ্যাত নজরুলসংগীতশিল্পী ফাতেমাতুজজোহরা। তাঁর নজরুলসংগীত ও অন্যান্য গানে উপস্থিত শ্রোতারা মুগ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া সংগীত পরিবেশন করেন লাইসা আহমেদ লিসা, আব্দুর রশীদ, উম্মে রুমা ট্রফি, গোলাম কাওসার, সুমি প্রমুখ।

সাংস্কৃতিক কর্মীদের সম্মিলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটারের পরিবেশনা। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, আগারগাঁও, ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি। ছবি: ফাত্তাহ তানভীর রানা
সাংস্কৃতিক কর্মীদের সম্মিলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটারের পরিবেশনা। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, আগারগাঁও, ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি। ছবি: ফাত্তাহ তানভীর রানা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক সাংস্কৃতিক কর্মী সম্মিলন আলোকিত করে উপস্থিত ছিলেন নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম, অভিনেতা আবদুল আজিজ, সিনেমা পরিচালক হাবিবুর রহমান হাবিব, আবৃত্তিকার মাসকুর এ সাত্তার কল্লোল, শিশুসাহিত্যিক আনজীর লিটন, অভিনেতা আমিনুর রহমান বাচ্চু, লেখক দীপু মাহমুদ, অভিনেতা কামাল আহমেদ, অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ। তাঁরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক চর্চাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছেন।

অনুষ্ঠানে সম্প্রতি প্রয়াত আবু ভাইয়ের (রাবির আবুর ক্যানটিন) জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান সময়ে যাঁরা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত রয়েছেন, তাঁরাও এসেছিলেন সম্মিলনে। সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল সমকাল নাট্যচক্র, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার, রুডা, স্বনন, তীর্থকের পরিবেশনা। নাচ পরিবেশন করেন সংবাদপাঠক সাবিনা পুথি।

সংবাদপাঠক শামসুজোজাহা ও সুমনার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল ইসলাম, এটিএন বাংলার প্রধান উপদেষ্টা মো. শামসুল হুদা, ব্যবসায়ী মনোয়ারুল হক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, রাকসুর সাবেক সিনেট সদস্য জহুরুল ইসলাম, শামীম রেজা খান, কাজল সিদ্দীকী প্রমুখ।