আনন্দের হাট বসছে লাল পাহাড়ের সবুজ ক্যাম্পাসে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের গাউন ও ক্যাপ পরিধান করে দল বেঁধে আনন্দে ক্যাম্পাসে বিচরণ করছেন ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের গাউন ও ক্যাপ পরিধান করে দল বেঁধে আনন্দে ক্যাম্পাসে বিচরণ করছেন ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সোমবার অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সমাবর্তন। ফলে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণে সরগরম ক্যাম্পাস।

সমাবর্তনে ৬টি অনুষদের মোট ৫ হাজার ৬৪৮ শিক্ষার্থীকে মূল সনদ প্রদান করা হলেও ২ হাজার ৮৮৮ জন গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী সমাবর্তনে নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী ১ হাজার ২২৩ জন এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ১ হাজার ৬৬৫ জনের অংশগ্রহণে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, গ্র্যাজুয়েটরা নিজ নিজ বিভাগ থেকে সমাবর্তনের পোশাক সংগ্রহ করছেন।

সোমবার বেলা তিনটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তনের মূল পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের সনদ প্রদান করতে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তনে প্রধান বক্তা হিসেবে গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। পাশাপাশি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ।

তবে মূল অনুষ্ঠানের আগেই ক্যাম্পাসজুড়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীরা সমাবর্তনের গাউন ও ক্যাপ পরিধান করে দল বেঁধে, পরিবার-পরিজন নিয়ে মনের আনন্দে বিচরণ করছেন। সব জায়গায় উড়ছে কালো ক্যাপ। অনুষ্ঠানের এক দিন বাকি থাকলেও অপেক্ষা যেন সইছে না তাঁদের। গাউন পেয়েই মুহূর্তগুলো স্মরণীয় করে রাখতে বিভিন্ন আঙ্গিকে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তাঁরা।

যে যেভাবে পারছেন, প্রথম সমাবর্তনের স্মৃতি ধরে রেখার চেষ্টা করছেন। ছবি: সংগৃহীত
যে যেভাবে পারছেন, প্রথম সমাবর্তনের স্মৃতি ধরে রেখার চেষ্টা করছেন। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব। তিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসার হিসেবে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাস জীবনে সাংবাদিকতা করেছি। সেই সুবাদে প্রিয় এ ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রাণের সঙ্গে যেন আমার অনন্তকালের আত্মার বন্ধন। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির বিস্তর ফারাককে পাশ কাটিয়ে প্রথম সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে সহপাঠী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, জুনিয়র ভাই-বোনসহ সকলে মিলে আনন্দের হাট বসবে লাল পাহাড়ের সবুজ ক্যাম্পাসে। এ আনন্দে মনোচিত্তে আজ আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের অভূতপূর্ব শিহরণ জাগছে।’

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, অনেক শিক্ষার্থী পরিবার–পরিজন নিয়ে ক্যাম্পাসে এসেছেন। প্রথম সমাবর্তনকে সামনে রেখে বাড়তি আনন্দ যেন জোগান দিচ্ছে তাঁদের মধ্যে। সবার সঙ্গে অনেক বছর পর দেখা হচ্ছে। এ মিলনমেলা যেন উদ্বেলিত করছে প্রাক্তন অনেক শিক্ষার্থীকে।

তা ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ১৪ শিক্ষার্থী প্রথম সমাবর্তনে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্য মো. আবদুল হামিদের কাছ থেকে এ স্বর্ণপদক গ্রহণ করবেন তাঁরা।