দীপনপুরে কবি শামীম আজাদ সন্ধ্যা

দীপনপুরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘কবি শামীম আজাদ সন্ধ্যা’। ছবি: সংগৃহীত
দীপনপুরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘কবি শামীম আজাদ সন্ধ্যা’। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর কাঁটাবনে দীপনপুরে গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘কবি শামীম আজাদ সন্ধ্যা’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় এ আয়োজনে কবির লেখালেখি, নিজের জীবন, সমাজ ভাবনা, স্মৃতির কথা নিয়ে আলোচনা হয়।

আয়োজনের শুরুতেই প্রিয় ‘মা’ কে নিয়ে কথা বলেন শামীম আজাদ। কল্পনায় আনেন একজন মায়ের কিশোরী রূপ। তিনি বলেন, মায়েরাও কিন্তু একসময় কিশোরী থাকেন। তাঁদেরও ভালোবাসা থাকে, অনুভূতি থাকে। সেগুলোর মমতা এসে পড়ে সন্তানের ওপর। এরপর সেই সন্তানও একদিন মা–বাবা হন, নানা–নানি হন। পরম্পরায় কেটে যায় সময়। এ সময় তিনি ৩টি পরম্পরা (মা-মেয়ে-নাতনি) নিয়ে পাঠ করে শোনান নিজের লেখা সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার একটি কবিতা।

সত্তর ও আশির দশকে ঢাকায় শিল্প-সাহিত্য-সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল শামীম আজাদের। বাংলাদেশে ফ্যাশন সাংবাদিকতাও এসেছে অনেকটা তাঁর হাত ধরেই। কবি বলেন, আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারগুলো সব সময়ই একটু গম্ভীর। সেই জায়গাটাকে উৎসবমুখর করা, দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে নিজেকে সুন্দর করে সাজানো যায়, অফিসের টিফিনটা কীভাবে নেওয়া যায়, স্বামীর পাঞ্জাবিতে সাদার পরিবর্তে একটু রং আনাসহ এমন বিষয়গুলো মাথায় নিয়েই শুরু হয় কাজ করা।

প্রশ্ন ওঠে, একুশ শতকে এসেও লেখকদের তাঁর লেখার উত্তর হিসেবে চাপাতি দিয়ে হত্যা করা হয়! লেখার পরিবর্তে লেখা দিয়ে উত্তর না দিয়ে হত্যা করা কেন? ঘাটতিটা কোথায়?

এই পর্যায়ে লেখকের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলেন কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল। তিনি বলেন, আমরা মুখে বললেও প্রকৃত অর্থে আমাদের শিশুদের স্বাধীনতা দিই না। তাদের প্রতিটি বিষয় আমরা নির্ধারণ করে দিই। ফলে শিশুকাল থেকেই তার মধ্যে এক প্রকার সহিংসতা ঢুকে পড়ে। তাই শৈশবের সামাজিকীকরণ এবং মা–বাবার শিশুশিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ পালন করে এ ক্ষেত্রে।

কবি পাঠ করেন হুমায়ুন আজাদকে নিবেদিত একটি বাংলা কবিতা। উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ারকে নিবেদিত করে একটি ইংরেজি কবিতাও পাঠ করেন তিনি। দর্শক-শ্রোতাদের শোনান নিজের প্রেম, ভালোবাসা, মেয়েবেলার স্মৃতি আর ইংল্যান্ডের রানির সঙ্গে দেখা করা গল্পও।

সন্ধ্যার এই আয়োজনে দীপনপুরে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রকাশনা সংস্থা সময় প্রকাশনের প্রধান নির্বাহী ফরিদ আহমেদ, স্থপতি সাঈদা সুলতানা এ্যানি, প্রয়াত প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের সহধর্মিণী এবং বুকশপ ক্যাফে ‘দীপনপুর’-এর প্রতিষ্ঠাতা রাজিয়া রহমান জলি, মুক্ত আসরের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আবু সাঈদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক, কবি জুয়েল মাজহারসহ বরেণ্য কবি, লেখক এবং কবি শামীম আজাদের শুভানুধ্যায়ীরা।