গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ফানুসে ঝলমলে আকাশ
সন্ধ্যা নামতেই শত মানুষের আনাগোনা। জটলা বেঁধে কয়েকজন করে দাঁড়িয়ে আছেন। হলুদ, নীল, গোলাপি রঙের কাগজ হাতে। কিছুক্ষণ পর পর ঝলকে ওঠে আলো। নানান রঙের ফানুস উড়ে মুহূর্তেই। গোধূলি আলোতে যেন গোটা আকাশ রঙিন হয়ে উঠেছিল ফানুসে।
সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় (১০ ফেব্রুয়ারি) সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) ট্রান্সপোর্ট চত্বর যেন একটু অচেনাই মনে হলো। শুধু ট্রান্সপোর্ট চত্বর নয়, গবির আকাশ ফানুসময় হয়ে ওঠে ওই দিন। সঙ্গে ছিল আতশবাজি আর মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের সংগঠন গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (গবিসাস) সপ্তম বর্ষপূর্তি ও অষ্টম বর্ষে পদার্পণ করেছে। এই উপলক্ষে দুপুর থেকে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে ছিল নানা আয়োজন।
দিনভর আয়োজনে ছিল কেক কাটা, ফিচার প্রদর্শনী, বেলুন উড্ডয়ন, আলোচনা সভা ও ব্যান্ড পাটির তালে শোভাযাত্রা। সন্ধ্যায় আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানোর উৎসব।
তানভীর আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলছিলেন, ফানুস ওড়ানো সবার জন্য আনন্দের ব্যাপার। আমি আজ প্রথম ফানুস ওড়ালাম। প্রথমবারেই আমি প্রেমে পড়ে গেছি ফানুস উড়ানোর প্রতি। ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়িয়েছি, এই বয়সে ইট-পাথরের শহরে ওড়ালাম রঙিন ফানুস। অসম্ভব ভালো লাগছিল, মুহূর্তটি অসাধারণ ছিল। এটি ঘুড়ি উড়ানোর মতোই মজা। আবার ছোট বেলায় ফিরে যাব সেটা কল্পনাতেও ছিল না। ফানুস উৎসব ছিল আমার বাল্যকালে হারিয়ে যাওয়া। ফানুস উড়িয়ে হৃদয়ের দুঃখ-কষ্ট উড়িয়ে দিচ্ছিলাম।
গবিসাস সভাপতি মোহাম্মদ রনি খাঁ জানান, ভালোবাসা দিবসের আগমন বার্তায় হৃদ গহিনে লুক্কায়িত ভালোবাসা যেটি আমার প্রাণের স্পন্দনে থাকা গবিসাস কার্যালয়ে খুঁজে পাই। ফানুস উৎসব অনেকটা সেই ভালোবাসার সজাগ করিয়ে দিচ্ছিল। সারা দিনের ব্যস্ততা এবং ক্লান্তির পর এক টুকরো স্মৃতিময় ভালোবাসা এ সময় খুঁজে পেয়েছিলাম। চারদিকে মিশে থাকা অন্ধকার পরিবেশটা যেন ফানুসে বিন্দুবিসর্গ আলোতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। রাতের প্রহরী হিসেবে পথের সঞ্চারিত করে দিয়েছিল।
সন্ধ্যা থেকে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিভিন্ন রঙের ফানুস ওড়ানো হয়। এ সময় গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (গবিসাস) উপদেষ্টামণ্ডলী ও গবিসাস সদস্যবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশ ফানুস ওড়ানোর উৎসব উদ্যাপন করে।