চার রাত তিন দিনে খাগড়াছড়ি-সাজেক-রাঙামাটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা

পুরো দিন নৌকায় করে কাপ্তাই লেকের ওপর ভেসে বেড়ানো যায়। দুই পাশে পাহাড় আর সামনে অজানা এক দিগন্ত। ছবি: লেখক
পুরো দিন নৌকায় করে কাপ্তাই লেকের ওপর ভেসে বেড়ানো যায়। দুই পাশে পাহাড় আর সামনে অজানা এক দিগন্ত। ছবি: লেখক

আমরা ১৩ জনের একটি দল চার রাত তিন দিনে খাগড়াছড়ি-সাজেক-রাঙামাটি ঘুরে বেড়িয়েছি। সাজেকে পানি ও বিদ্যুতের কিছুটা সমস্যা থাকলেও ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অসাধারণ।

আমরা চেষ্টা করেছি ট্যুরটা যতটা সম্ভব সাশ্রয়ী করতে। সবাই শিক্ষার্থী। তবে বুদ্ধি করে চললে অল্প খরচে বেশ ভালোভাবে ঘুরে আসা যায়। কিন্তু খাবারের ক্ষেত্রে আমরা লোভ সামলাতে পারিনি বলে একটু খরচ বেশি হয়েছে।

ভ্রমণ শুরুর আগেই খাগড়াছড়ি যাওয়ার বাসের টিকিট কাটা, সাজেকে থাকার জায়গা বুক করা আর রাঙামাটি কোথায় থাকব, সেটাও ঠিক করে ফেলেছিলাম ঝামেলা এড়ানোর জন্য। সাজেকে রিসোর্টের অভাব নেই। আদিবাসীরা কম খরচে তাদের নিজেদের বাসায়ও থাকতে দেয়। সেনাবাহিনীর তৈরি রিসোর্টেও থাকা যায়। তবে রুইলুই পাড়ার দিকে খরচ তুলনামূলক কম।

আমরা ছিলাম মেঘমাচাং আর লুসাইতে। বর্ষাকাল হলে আপনি মেঘমাচাং থেকে মেঘ ধরতে পারবেন। অন্য সময় হলেও ভালো ভিউ পাবেন। লুসাই রিসোর্টটার মাঝখানে বসার জায়গাটাও ভালো। বর্তমান প্রজন্মের ভাষায় অস্থির! জম্পেশ আড্ডা দেওয়া যায়। তবে যেখানেই থাকেন একটু আগেভাগে বুক দিলে ভালো।

বন্ধুরা মিলে ঘুরতে গেলে মজাই আলাদা। ছবি: সংগৃহীত
বন্ধুরা মিলে ঘুরতে গেলে মজাই আলাদা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা থেকেই চাঁদের গাড়ি ঠিক করে রেখেছিলাম। অনুপম দা আর সুজন দার গাড়ি। অমায়িক লোক, ব্যবহার নিজের ভাইদের মতো আর চালানোও ভালো। ১২ সিটের গাড়িতে আমরা ১৩ জন গিয়েছিলাম। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়ে যাওয়ার কারণে ওই গাড়িতে চড়েই রাঙামাটি রওনা হই। কারণ খাগড়াছড়ি থেকে রাঙামাটির সর্বশেষ বাস বেলা তিনটার দিকে ছিল। তাড়াহুড়া করে বাস ধরতে গেলে খাগড়াছড়িও ঘোরা হতো না। রাঙামাটিতে থাকার হোটেলের অভাব নেই। আমাদের এক বন্ধুর আত্মীয়ের মাধ্যমে রাঙামাটি সার্কিট হাউসে ছিলাম। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আমাদের ভ্রমণ।

প্রথম দিন
সকাল সাতটার দিকে শাপলা চত্বরে পৌঁছায় আমরা। খাগড়াছড়িতে পৌঁছেই সাজেকে দুপুরের খাবারের অর্ডার দিই। চাঁদের গাড়িতে করে দীঘিনালা পৌঁছে সকালের নাশতা সেরে নিই। মেন্যু পরোটা, মিক্সড সবজি, ডিম ভাজি আর চা। এরপর আমরা বাঘাইছড়ি উদ্দেশে রওনা হই। যাওয়ার পথেই হাজাছড়া ঝরনা পড়ে। শীতকাল হওয়ায় তেমন পানি ছিল না বললেই চলে। কিছুক্ষণ থেকে ছবি তুলে আমরা আবার বাঘাইছড়ির উদ্দেশে রওনা হই। বাঘাইছড়ি থেকে সেনারা সব চাঁদের গাড়িগুলো একত্রে সাজেকে নিয়ে যান। এটা শুধু দুবার হয়, সকাল সাড়ে দশটার দিকে আর বেলা তিনটার দিকে। আমরা এক ঘণ্টার মতো বাঘাইছড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এর ফাঁকে আমরা পাশেই বয়ে চলা কাসালংয়ের কিছুটা অংশ দেখে নিই। সাজেকে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের বেলা একটা গড়িয়ে যায়। এরপর দ্রুত রিসোর্টে গিয়ে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিই। বেলা দুইটার দিকে মারুয়াতি দিদির রেস্তোরাঁয় দুপুরের খাবার খেতে যাই। মেন্যু ছিল ভাত, সবজি, ডাল আর মুরগির মাংস। রান্না অসাধারণ, তবে মাংসে ঝাল ছিল।

পাহাড়ের চূড়ায় আমরা। চারপাশে আকাশ। ছবি: সংগৃহীত
পাহাড়ের চূড়ায় আমরা। চারপাশে আকাশ। ছবি: সংগৃহীত

এরপর পরই চাঁদের গাড়িতে করে রওনা দিই কংলাক পাহাড়ের উদ্দেশে। একটা নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত চাঁদের গাড়ি যায়, এরপর থেকে পায়ে হাঁটা উঁচু পথ। ছোট ছোট ছেলেমেয়ে চিকন বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ওখান থেকে ১০ টাকা করে বাঁশ ভাড়া করতে পারেন পাহাড়ে ওঠার জন্য (যদি লাগে)। কংলাক পাহাড়ে বর্ষাকালে ওঠা দুরূহ। আর চেষ্টা করবেন স্পঞ্জ টাইপের কিছু যেন পায়ে না থাকে। কংলাকের চূড়ায় ওঠার পথে কয়েকটি কবরও আছে। ছোটখাটো দোকানও আছে খাবারদাবারের। কংলাক থেকে নেমে আমরা সাজেক হেলিপ্যাডে গিয়েছিলাম। চারদিকে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। আমরা অনেকক্ষণ ছিলাম সেখানে। ওটার পাশেই একটা সুন্দর পার্ক ছিল। ২০ টাকা প্রবেশমূল্য দিয়ে ঢুকতে হয়। আমাদের এক বন্ধুর আত্মীয় সাজেক আর্মি ক্যাম্পে ছিলেন। তাই সন্ধ্যাটা কাটিয়েছি সাজেক আর্মি ক্যাম্পে সূর্যাস্ত দেখে। নাশতার ব্যবস্থা ছিল, সেই সঙ্গে অনেক দিন পর ব্যাডমিন্টনও খেললাম সেখানে। এরপরে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবারের কথা শুনতে গেলে দিদি বলে, তাদের জেনারেটর নষ্ট, খাবার পেতে পেতে রাত ১১টা বাজবে। সেটা শুনে তাড়াতাড়ি রিসোর্টে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম। একটা দোকানে হালকা কিছু নাশতা খেয়ে একটু ঘোরাঘুরি করলাম এদিক–সেদিক। রাতে ড্রাইভারদের সাথে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেলাম। ডিনারে ভাত, ডাল, সবজি আর ডিম ভুনা। আপনি ইচ্ছা করলে রাতে বারবিকিউও খাওয়ার ব্যবস্থা আছে এখানে। কিন্তু এর জন্য অবশ্যই আগেই বলে রাখা ভালো। ডিনার শেষে চলে গেলাম সাজেক হেলিপ্যাডে। রাত ১২টা–১টা বাজে। চারদিকে খাঁ খাঁ করছে। পাশের আর্মি ক্যাম্পে কিছুটা আলো দেখা যাচ্ছে। আরেক পাশে বিএসএফের একটি টিমটিম লাল আলো জ্বলে রয়েছে। আর মাথার ওপর দ্বাদশীর চাঁদ। চারদিকের প্রকৃতি সব মিলিয়ে যেন এক অদ্ভুত আদিমতার সৃষ্টি করেছিল। আর সেই সঙ্গে যদি গায়ক বন্ধুরা থাকে, তাহলে আর কী লাগে! আমার জীবনে কাটানো সেরা রাতগুলোর একটা! অনেকক্ষণ থেকে ফিরে গেলাম রিসোর্টে। ঘুমোতে চাইলেও কি এত সহজে ঘুম আসে? ব্যালকনিতে বসে ছিলাম অনেকক্ষণ, চারদিকের রহস্যময় প্রকৃতি।


দ্বিতীয় দিন
পরের দিন ভোরে উঠতে পারলে সূর্যোদয় মিস করতে হয়। সূর্যোদয় দেখতে যেতে হয় হেলিপ্যাডে। আমাদের রিসোর্টের (মেঘমাচাং) ব্যালকনিতে থেকেও সূর্যোদয় উপভোগ করা যায়। দূরের পাহাড়ে ঘেরা বাড়ি, তার ওপর দিয়ে কুয়াশা! অসাধারণ এক চিত্রে মনটাই ভালো হয়ে যাবে। ব্রেকফাস্ট সেরে সাজেকের আরও কিছু জায়গা দেখে নিয়েছি। স্টোন গার্ডেন, রুইলুইপাড়া গির্জাসহ আশপাশের এলাকাগুলো ঘুরেছি। খাগড়াছড়ির সিস্টেম রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার অর্ডার করে রাখা ছিল আমাদের। দ্রুত ব্যাগপ্যাক রেডি করে সাড়ে ১০টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম আর্মি চেক পয়েন্টে। এরপর সেখান থেকে চাঁদের গাড়িতে খাগড়াছড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে একটার মতো বেজে গেল। সিস্টেম রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেলাম। এখানকার হাঁসের মাংস আর মাশরুম না খাওয়া চরম বোকামি। দুপুরে আসলেই বেশি খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। ভাত, ডাল, সবজি, মাশরুম, মুরগির মাংস, কয়েক বাটি হাঁসের মাংস, ধনেপাতার ভর্তা—সব মিলিয়ে অসাধারণ। এত কিছু খেয়েও বিল দিয়ে বাইরে বের হয়ে মনে হয়েছে, তারা বিল করতে ভুল করেছে। বিল আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল।

ব্যাম্বু চিকেনের স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে। ছবি: লেখক
ব্যাম্বু চিকেনের স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে। ছবি: লেখক

এরপর চলে যাই আলুটিলা গুহায়। আলুটিলা গুহার ভেতরে ঘুরতে ১৫–২০ মিনিটের মতো লেগেছে। মশাল কিনতে পাওয়া যায়, ইচ্ছা করলে মোবাইলের ফ্ল্যাশও ব্যবহার করতে পারেন গুহার মধ্যে। আলুটিলায় সময় নষ্ট না করে চলে যাই রিসাংয়ে। এ ঝরনার অবস্থা শীতকালে মোটামুটি ভালোই থাকে। পারলে ঝরনার উৎপত্তিস্থল পর্যন্ত দেখে আসা যায়। রিসাংয়ের পথটা ঢালু, তাই ফেরার পথে কষ্ট হতে পারে। ওখানে ভাড়ায় মোটরসাইকেল পাওয়া যায়, যেগুলো আপনাকে সমতল পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যাবে। তবে বেশি অসুবিধা না হলে মোটরসাইকেলে না ওঠাই ভালো। এরপর দ্রুত আমরা চাঁদের গাড়িতে করেই রাঙামাটির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি। সন্ধ্যা নাগাদ আমরা সার্কিট হাউসে পৌঁছে যাই। এরপরই রাঙামাটির বোট ভাড়া করার জন্য কথা বলি সাগর ভাইয়ের সঙ্গে। তিনি রাঙামাটি কলেজে তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। তিনি একই সঙ্গে গাইড আবার বোটও ভাড়া দেন। তাঁর সঙ্গে সন্ধ্যায়ই কথা ফাইনাল করলাম কোথায় কোথায় ঘুরব। আমাদের সময় ছিল মাত্র এক দিন। তাই আমরা কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্র, ঝুলন্ত ব্রিজ, রাজবন বিহার এবং চাকরা রাজার বাড়ি দেখব বলে ওনার সঙ্গে ডিল করি। তিনিই আমাদের রাঙামাটি থেকে ঢাকার টিকিট কেটে দেন। রাতে ফ্রেশ হয়ে আমরা বের হই বার্মিজ মার্কেটগুলো ঘুরে দেখার জন্য। বিশেষ করে তব্দল ছড়ায়! আপনি ইচ্ছামতো এখানে কেনাকাটা করতে পারবেন। অধিকাংশ জিনিসের দাম তুলনামূলক বেশি এবং এখানে বার্গেইনিংয়ের তেমন কোনো সুযোগ নেই। রাতে সার্কিট হাউসে ফিরে ডিনার করি। মেন্যু ছিল ভাত, ডাল, ভাজি, মুরগির মাংস, খাসির মাংস। এরপর বাইরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে ফিরে এসে ঘুমিয়ে পড়ি।


তৃতীয় দিন
ভোর ছয়টার দিকেই উঠি। উঠে ফ্রেশ হয়ে সবাই মিলে চলে যাই বনরূপার একটি রেস্তোরাঁয় সকালের নাশতা করতে। খরচ নর্মাল খাবারদাবারের মতোই। ওখানেই সাগর ভাই আসেন। আর পাশেই একটা ছোট ঘাট আছে, ওখান থেকেই নৌকায় উঠে পড়ি আমরা। নৌকার ওপরে ছাদ আছে, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট আছে, আর কি লাগে! এরপর থেকেই আসলে ঘটনাগুলো শুরু।

ট্যুরের সবচেয়ে আকর্ষণের জায়গাটা ছিল এই রাঙামাটি। পুরোটা দিন আমরা নৌকা করে কাপ্তাই লেকের ওপর ভেসে বেড়িয়েছি, কর্ণফুলী নদীর জল ছুঁয়েছি, দুপাশে পাহাড় আর সামনে অজানা এক দিগন্ত। মনের অজান্তেই গেয়ে ওঠে সবাই, ‘মাঝি বাইয়া যাও রে, অকূল দরিয়ার মাঝে আমার ভাঙা নাও রে মাঝি, বাইয়াআ যাও রে।’ কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢোকার জন্য আপনি আগে থেকে কারও মাধ্যমে বিজিবির পারমিশন নিয়ে রাখতে পারেন। ওখানে গিয়ে অনুমতি পেতে কিছুটা ধকল পোহাতে হয়। যাহোক, বিজিবির এরিয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে ভেতরে ঘুরি আমরা। কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে বাঁধটাও দেখলাম। এরপর গেলাম ঝুলন্ত ব্রিজের ওখানে। মাত্র দুটি ভার্টিক্যাল পিলার, আর পুরা ব্রিজটা ঝুলে আছে রডের মাধ্যমে! এটার আশপাশে কিছু ঘোরার জায়গা আছে। ছবি তোলার জন্য খুবই ভালো একটা জায়গা! সেখান থেকে ফিরে গেলাম মেজাং রেস্টুরেন্টে। চারপাশে নদী, মাঝখানে অপরূপ ডেকোরেশনের একটি রেস্টুরেন্ট। ক্ষুধায় পেট তখন চোঁ চোঁ করছে। ভাত, ডাল, ব্যাম্বু চিকেন, চাপিলা ভর্তা, পাহাড়ি সবজিতে পেট পুরে খেলাম। এখানের চাপিলা ভর্তাটা মিস করা ঠিক নয়, এটা অস্থির। ব্যাম্বু চিকেনের (বাঁশের মধ্যে ছোট ছোট মুরগির মাংস রেখে রান্না করা হয়) এখনো মুখে আছে। কাচকি ফ্রাইটাও চাইলে চেখে দেখে নিতে পারেন যে কেউ।

রাঙামাটির ঝুলন্ত ব্রিজ এলাকা। ছবি: সংগৃহীত
রাঙামাটির ঝুলন্ত ব্রিজ এলাকা। ছবি: সংগৃহীত

এরপর আমরা রওনা হলাম রাজবন বিহারের উদ্দেশে। রাজবন বিহারের ভেতরে কিছু সুন্দর জায়গা আছে দেখার মতো। এত কিছু বলব না, গিয়েই দেখবেন। এরপর গেলাম চাকমা রাজার বাড়ি। এখানে গেলে আসলে আপনি দেখতে পারবেন চাকমা সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধি এবং নিজস্বতা! এখানে প্রয়াত চাকমা রাজগুরু ভদন্ত অগ্রবংশের উপাসনালয়, চাকমা রাজ কার্যালয়, স্বর্গ ভবন, সীমাঘরসহ আরও কয়েকটি ঐতিহাসিক এবং চাকমাদের ধর্মীয় ভবন রয়েছে। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, যা যা আছে ভেতরে।

এরপর আমরা সবাই ফিরলাম সার্কিট হাউসে। আমাদের ফিরতি বাস ছিল সাড়ে আটটার দিকে। তাই সন্ধ্যার দিকে সার্কিট হাউসের বিপরীতেই সেনাবাহিনীর একটি ছোট রেস্টুরেন্ট ছিল, সেখানে বারবিকিউ আর কফি খেলাম। এরপর সাড়ে নয়টার দিকে আর্মি চেকপোস্ট থেকে বাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলাম।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো
১.
ব্যবহারেই বংশের পরিচয়। যেখানেই যান না কেন, স্থানীয় লোকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন। ভুলেও কোনো প্রকার আপত্তিকর আচরণ করবেন না।
২.
ছবি তোলার ক্ষেত্রে সাবধান। স্থানীয় লোকজনের বিশেষ করে নারীদের ছবি তুলবেন না।
৩.
সাজেকে পানির এবং বিদ্যুতের সংকট রয়েছে। এ ছাড়া সবকিছুর দামও তুলনামূলকভাবে বেশি। চেষ্টা করবেন পানি ও বিদ্যুৎ কম খরচ করার। পারলে খাগড়াছড়ি থেকে পানি কিনে নিয়ে যেতে পারেন।
৪.
সাজেকে মোবাইল নেটওয়ার্কে সমস্যা করে। তাই রবি–এয়ারটেল সঙ্গে নেবেন।

রাজবন বিহার। ছবি: লেখক
রাজবন বিহার। ছবি: লেখক


৫.
উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে কোথাও অহেতুক চিল্লাপাল্লা করবেন না। যেখানেই যাবেন, চেষ্টা করবেন সবাই একসঙ্গে থাকার।
৬.
চেষ্টা করবেন চাঁদের গাড়ির ছাদে না ওঠার জন্য।
৭.
চার্জ নিয়ে দুশ্চিন্তা হলে পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে যেতে পারেন।
৮.
ভেজা কাপড় রাখার জন্য পলিথিন সঙ্গে রাখতে পারেন।
৯.
আর অবশ্যই চেষ্টা করবেন দর্শনীয় স্থানগুলো অপরিষ্কার না করার জন্য। দেশটা তো আমাদেরই, তাই না।

কাপ্তাই লেকে নৌকায় ভেসে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা, জল ছোঁয়া আর দুপাশে পাহাড় আর সামনে অজানা এক দিগন্ত সারি।
কাপ্তাই লেকে নৌকায় ভেসে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা, জল ছোঁয়া আর দুপাশে পাহাড় আর সামনে অজানা এক দিগন্ত সারি।

লেখক: শিক্ষার্থী, বুয়েট