মাশরাফি একটা বই

মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফাইল ছবি
মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফাইল ছবি

বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’য় অনিল কাপুর রাজদণ্ড ফিরিয়ে আনতে কত কসরতই না করেছেন পুরো সিনেমাজুড়ে। অদৃশ্য হয়েছেন, ভিলেনকে ঘোল খাইয়েছেন। ত্যাগও নেহাত কম শিকার করতে হয়নি। মাশরাফি বিন মুর্তজাও তেমনই। ফিরে এসেছেন, হারিয়ে গেছেন। বিজ্ঞাপনের সংলাপে তুলে ধরেছেন নিজেকেই। অনুপ্রাণিত করেছেন দেশের মানুষকে, ক্রিকেট দলকে। পা দুটো বেইমানি করলেও ঘাড়ের রগটা বাঁকা করে চ্যালেঞ্জ করেছেন নিজেকেই। মাশরাফির পুরো ক্যারিয়ারই চ্যালেঞ্জিং।

যদি প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক কে?
উত্তর: মাশরাফি।
বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রেরণা কে?
এবারও উত্তর: মাশরাফি।

কে এই মাশরাফি
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গলদঘর্ম হতে হবে। খাবি খাওয়াটা অনিবার্য! মাশরাফিকে কয়েক শব্দে সংজ্ঞায়িত করা অসম্ভব। তিনি আস্থার উৎস, আশার প্রদীপ, ডুবতে বসা জাহাজের নাবিক। ২০১৪ সালের জয় ভুলে যাওয়া সময়ে ক্রিকেটকে ছাইয়ের গাদা থেকে তুলে এনেছেন, ২০১৫ বিশ্ব আসরে বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন একদল সৈন্য নিয়ে। প্রথম বাংলাদেশি অধিনায়ক, যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন দুটি বিশ্বকাপে। তাহলে এবার ‘মাশরাফি কে?’ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যাক...।

মাশরাফি একটা বই। বুকশেলফে সবচেয়ে প্রিয় যে বইটা, সেই বইয়ের প্রতিটি শব্দ আমাদের মুখস্থ। আমরা সেটি অসংখ্যবার পড়ি। মন ভালো থাকলে পড়ি। মন খারাপ থাকলে পড়ি। পড়ে পুলকিত হই। মন হালকা হয়। আমরা তাতে আত্মস্থ হই। ‘মাশরাফি বিন মুর্তজা কৌশিক’ তেমনই একটি বই। ডায়েরিও বলা যেতে পারে৷ পুরুষদের কাছে প্রেমিকাতুল্য, নারীদের কাছে প্রেমিকও হয়ে ওঠেন তিনি। মাশরাফি, যিনি একসুতোয় গাঁথেন সবাইকে, যার গোটা গল্প আমরা জানি।

ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে একটা দিকে এই মাশরাফির তুলনা এসে যায়। ক্রিকেটে শচীন ঈশ্বরতুল্য, কৌশিক সেখানে বড়জোর ক্রিকেটদেবতা। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে ম্যাশ ওই শচীনের চেয়েও এগিয়ে। লিটল মাস্টারের ক্যারিয়ারে ইনজুরি প্রভাব ফেলেনি। ১৮ বছরের যাত্রায় ইনজুরি বহুবার বাগড়া দিয়েছে দুরন্ত নড়াইল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে। ধুঁকে ধুঁকে এগিয়েছেন। এবার থামছেন। অধিনায়কত্বের স্টেশনে যতিচিহ্ন আঁকছেন। খেলোয়াড় হিসেবে হয়তো আরও কটা দিন থাকবেন। তাঁকে নিয়ে গেল বছরজুড়ে সমালোচনা কম হয়নি। সেগুলো অযৌক্তিকও নয় একেবারে। সেসব আলোচনা শেষ হয়ে গেল গতকাল শুক্রবার সিলেটে, বিদায়ের প্রথম রাগ বাজিয়ে...।