এ কেমন ভুল করল বিসিবি

সৌম্য সরকার
সৌম্য সরকার

সৌম্য সরকারকে ছাড়াই ৮ মার্চ কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ১৬ জনের নাম ঘোষণা করে বিসিবি। সেখানে সৌম্য সরকারের নাম না থাকাটা বড় চমকই ছিল। তবে চুক্তিতে না থাকলেও কোনো খেলোয়াড় দলের সঙ্গে থাকলে তিনি চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়ের মতোই বেতন পান। তাই সৌম্যের চুক্তিতে থাকাটাও তাঁর জন্য ততটা গুরুত্বপূর্ণও ছিল না। গত বছরও কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ছিলেন না তিনি। কিন্তু এ বছর সৌম্যের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা উচিতই ছিল। যেসব ক্রিকেটার এ বছর নিয়মিত জাতীয় দলে খেলবেন, তাঁদেরই তো থাকার কথা কেন্দ্রীয় চুক্তিতে। আর সৌম্যর দলে নিয়মিত খেলার সম্ভাবনাই তো বেশি।

গত বছর তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের খেলা ৩০ ম্যাচের মধ্যে ২৫টিতেই ছিলেন সৌম্য। কিন্তু তাঁকেই নাকি ভুল করে চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার প্রধান নির্বাচক তাঁকে সাদা বলের চুক্তিতে রাখার কথা জানিয়েছেন। একজন জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে ভুলে গিয়ে কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকায় রাখা হয়নি। আপনি এটা বিশ্বাস করেন? আর এই ঘটনায় নির্বাচকদেরই দুষছেন ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান।

এখন কথা হচ্ছে, নির্বাচকেরা সব সময়ই ক্রিকেটারদের আশপাশে থাকেন। আর না থাকলেও সৌম্যকে তো তাঁদের কোনোমতেই ভুলে যাওয়ার কথা নয়। এই সৌম্যকেই কিন্তু তাঁরা আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের স্কোয়াডে রেখেছেন, শেষ ওয়ানডেতেও স্কোয়াডে ডেকেছিলেন তাঁকে। তাহলে তাঁকে কীভাবে ভুলতে পারেন তাঁরা! নির্বাচকেরা ২৪ জনের তালিকা জমা দিয়েছিলেন বিসিবির কাছে। আর সেখান থেকে ১৬ জনকে বাছাই করেন বিসিবি কর্তারা। এখানে আরেকটা প্রশ্ন, বিসিবি কর্তারাও কি ভুলে গিয়েছিলেন সৌম্যকে?

তবে এই ১৬ জনের তালিকা প্রকাশ করার পরের দিনই এই ভুলের কথা জানানো হয়েছিল এবং সৌম্যকে সাদা বলের চুক্তিতে অন্তর্ভুক্তির কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক। আর সেদিন সৌম্য সরকার ৬২ রান করে হয়েছিলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। এ জন্য অনেকেই হয়তো মনে করছিলেন সৌম্যের পারফরম্যান্সের কারণেই তাঁকে আবার চুক্তিবদ্ধ করা হলো কি না। কিন্তু ম্যাচ শেষে সৌম্য জানান, ম্যাচ শুরুর আগেই নাকি তিনি জেনেছিলেন তাঁর চুক্তিতে থাকার ব্যাপারটা।

বাংলাদেশে দর্শক-গণমাধ্যমের আলোচনা বা দাবির কারণে বিসিবির অনেক সিদ্ধান্তই বদলেছে। যদিও বিসিবি তা বলেনি। মনে করতে পারেন? একবার ইমরুল কায়েসকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। আর পরে আবার দলে রাখাও হয়েছিল, মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে করা প্রতিবেদনের কারণে ও দর্শকদের দাবিতে। সৌম্যকেও এই ভুলে যাওয়ার ঘটনাকে ভুল মনে হয় না। এটাকেও এই দর্শক-গণমাধ্যমের দাবির ফল বলেই মনে হচ্ছে।

আর ভুল হলেও কেন্দ্রীয় চুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে কীভাবে ভুল হয়? বিসিবি সভায় এত এত কর্মকর্তা ছিলেন তাঁদের কারও কি সৌম্যের কথা মনে পড়েনি? নাম ঘোষণা করার আগেও বিসিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা হয়তো নামগুলো আবার পড়েছিলেন, তখনো মনে হয়নি?

বিসিবির এই ভুলের কথা পড়ে আপনিও হয়তো অবাক হয়ে নিজেকে বলেছিলেন বা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এ কেমন ভুল। কিংবা আপনি এটাকে ভুল মনেই করেননি!

*লেখক: সিলেটের এমসি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী