করোনায় ঘরবন্দী কেন, ঘরের মানুষ হোন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনার কারণে স্কুল–কলেজ বন্ধ, অফিস–আদালত বন্ধ। সাধারণত, এমন হলে পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় ভিড় লেগে যায়। কিন্তু এখনকার এই ছুটি কোনো আনন্দ–উৎসবের জন্য নয়। এবারের ছুটি আসলে ঘরে থাকার জন্যই। ঘরে থাকলেই এখন আমরা নিরাপদ থাকব।

তাই সাধারণত যারা ঘরের বাইরে থাকে, তাদের এখন বাধ্য হয়ে হলেও ঘরে থাকতে হচ্ছে। অনেকের কাছেই তাই নিজেদের ঘরবন্দী মনে হচ্ছে। কিন্তু এমন তো নাও হতে পারে। আমাদের পরিবারের নারীরা সব সময় ঘরে থাকেন, তারা তো নিজেদের বন্দী মনে করতে পারে না। তারা সারা দিন সারা জীবন ঘরে কাটিয়ে দেয়, আমরা এখন তাদের কষ্ট বুঝতে পারি। আমরা এখন তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি।

সাধারণত, অনেকের বাড়িতেই কাজের লোক থাকে। এখন কোথাও কাজের লোক নেই। সতর্কতার অংশ হিসেবে কাজের লোক রাখা বন্ধ করা হয়েছে সব জায়গাতেই। কিন্তু তার জন্য তো কাজ কমেনি, বরং কাজ বেড়েছে। এখন বাসায় বেশি মানুষ থাকছে, সেই জন্য খাবার থেকে শুরু করে সবকিছুই বেশি বেশি করতে হচ্ছে। তাই তাদের কাজও অনেক বেড়ে গেছে।

ঘর তো নারীদের একার নয়। ঘর তো আমাদেরও, আমাদের ঘরের কাজ আমরা কেন করতে পারি না! চাইলে আমরাও এখন হতে পারি ঘরের কাজের সহযোগী।

সাধারণত, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। এই বিষয়টাতে আমরা বিশেষ নজর দিতে পারি। নিয়মিত বাসার বিভিন্ন জায়গা পরিষ্কার করা, বাইরে কিছু কিনতে গেলে সেগুলো পরিষ্কার করার কাজ আমরাই করতে পারি।

এই সময় বাচ্চারাও বাসায় থাকছে, তাই ওদের প্রয়োজন বাড়তি নজর দেওয়া। বাচ্চাদের সাধারণত এমনিতেই অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়। এর পাশাপাশি এখন করোনার জন্য প্রয়োজন বাড়তি সচেতনতা। নারীরা যেহেতু বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকবে, সেহেতু আমরাই পারি বাচ্চাদের দিকে বাড়তি নজরটা দিতে।

নিজেদের কাপড়চোপড় এখন নিজেরাই ধোয়া থেকে শুরু করে ইস্তিরি করার কাজ আমরাই করতে পারি। সময় যেহেতু আছে সেহেতু এসবের জন্য লন্ড্রিকে টাকা দেওয়ার কী দরকার! আর এখন মানুষের হাতের ছোঁয়া থেকে দূরে থাকা অনেক জরুরি। আর লন্ড্রিতে যেতে হলে ঘরের বাইরে যাওয়া আসা থেকে শুরু করে অনেক ধরনের ঝামেলা। তাই এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।

বাসায় অনেকের বারান্দা রয়েছে। সেই বারান্দায় অনেকের আবার ছোটখাটো বাগান রয়েছে, অনেকের রয়েছে ছাঁদবাগান, সেসব জায়গায় এখন পরিচর্যা করার দারুণ সুযোগ। তার পাশাপাশি যাদের বাগান নেই, তারা বাগান করার কাজেও হাত লাগাতে পারে।

ছোটবেলায় বা ছাত্র বয়সে অনেকেই রান্নাবান্না টুকটাক করেছে। সেই রান্নার হাতটা এখন আরেকবার পরীক্ষা করে দেখাই যেতে পারে। হয়ে যাওয়া যেতে পারে রাঁধুনি।

সর্বোপরি নিজের ঘরে নিজে কেন বন্দী হতে হবে? নিজের ঘরে নিজেদের কাজগুলো করতে কোনো লজ্জা নয় বরং সাহস করা উচিত।