স্মৃতিতে জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী

শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশসহ বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের সব উদ্যোগে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন অগ্রগামী। প্রথম আলো ফাইল ছবি
শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশসহ বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের সব উদ্যোগে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন অগ্রগামী। প্রথম আলো ফাইল ছবি

চলে গেলেন দেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও প্রকৌশলী জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। দেশের এই কীর্তিমান প্রকৌশলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না লিল্লাহি রাজিউন। আমার দেখা সবচেয়ে ভালো মানুষদের একজন। স্যারের সঙ্গে এক দশকের পরিচয় ভালো কথা ও ভালো কাজ ছাড়া কোনো দিন তাঁর মুখে মানুষের গিবত শুনিনি।


বাংলাদেশ আজীবন এই মহান ব্যক্তির কাছে ঋণী। দেশের সব বড় বড় স্থাপনায় তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই মহান মানুষটির সঙ্গে ছবি আমি ফেসবুকে প্রোফাইলে দিয়ে রেখেছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন, রোজা রাখতেন।


সরকারের অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করেছেন জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিন্তু প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সুচারুভাবে সম্পাদন করেছেন। স্যার অত্যন্ত সময়–সচেতন একজন মানুষ ছিলেন। তাঁকে একনজরে দেখার জন্য এবং তাঁর মুখের মূল্যবান কথা শোনার জন্য তিনি যেখানে যেতেন, সেখানে তাঁর ভক্তরা হাজির হতেন। স্যার আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভলান্টিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশের (ভাব বাংলাদেশ) চেয়ারম্যান ছিলেন।


অত্যন্ত কাছ থেকে স্যারকে দেখেছি। আমাকে মিটিংয়ের মধ্যে ডেকে বিভিন্ন বিষয় জিজ্ঞেস করতেন এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্কুলের খবর নিতেন। আর কোনো দিন স্যার জিজ্ঞেস করবেন না। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, স্যারকে তাঁর ভালো কাজের জন্য জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। জীবনে অনেক বড় বড় অফার পেয়েছেন বিদেশ থেকে কিন্তু দেশপ্রেমিক এ মানুষটি কখনো দেশ ছেড়ে যাননি। দেশের সেবায় নিরলসভাবে নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন। স্যারের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। বাংলাদেশে কম্পিউটার শিক্ষার হাতেখড়ি হয় স্যার ও বুয়েটের আরেকজন অধ্যাপকের মাধ্যমে। আমি স্যারকে নিয়ে পত্রিকায় একটা লেখা দিয়েছিলাম, সেখানে এই বিষয়ে শুধু স্যারের নাম লিখেছিলাম। স্যার লেখা পড়ে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ফোন করে বললেন, আলিম, তুমি তো কৃতিত্ব শুধু আমাকে একা দিয়েছ, এর কৃতিত্ব শুধু আমার একা না আমার সঙ্গে উমুক (নামটা এখন স্মরণ করতে পারছি না) অধ্যাপক ছিলেন। এত বড় মাপের একজন মানুষ ছিলেন। তাঁর শূন্যস্থান কোনো দিন পূরণ হবে না।


স্যারের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। স্যারের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করছি। মহান আল্লাহ নিশ্চয় উত্তম প্রতিদান দেবেন।

*লেখক: সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ভাব বাংলাদেশ