দুই দৈত্যে ভারত-চীনকে নিয়েই নেপালের বিকাশ করা উচিত: বাবুরাম ভট্টরাই

নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই। ছবি: সংগৃহীত
নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই নেপালের জনগণ ও নেপালে আলোচিত একজন সমাজতন্ত্রী রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। জনপ্রিয় এ নেতার আরও বিশেষ পরিচয় আছে। দীর্ঘদিন নেপালের অভ্যন্তরে জেঁকে বসা রাজতন্ত্র ও ভারত প্রভাবযুক্ত লাগানো আধা উপনিবেশ মার্কাযুক্ত শাসনপদ্ধতির বিরুদ্ধে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (মাওবাদী) পুষ্প কমল দহলের সঙ্গে দীর্ঘ এক যুগের অক্লান্ত পরিশ্রম ও পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি বিপ্লবকে পূর্ণ রূপ দিতে পেরেছিলেন। ভারতীয় আশীর্বাদযুক্ত অদ্ভুত সিস্টেমের ও রাজতন্ত্রকে নেপালের জনগণের বুকের ওপর থেকে অপসারণ করে সাধারণ নেপালিদের কাছে তিনি ও পুষ্প কমল দহল জনতার নায়কে পরিণত হয়ে যান। নেপালে ২০১৫ সালে জনগণের জন্য নতুন সংবিধান ঘোষণার পর তিনি আকস্মিক পুষ্প কমল দহল ও নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গ ত্যাগ করেন। গড়ে তোলেন নতুন দল ‘নয়াশক্তি’। এই দলের সঙ্গে নেপালের সংঘিয়া সমাজবাদী ফোরামের মতো দলগুলো যুক্ত হয়ে মোর্চা তৈরি করে অগ্রসর হয়েছেন বৃহত্তর একট সমাজবাদী পার্টি গঠনের দিকে। বাবুরাম ভট্টরাই নেপালের এই সমাজবাদী দলটির সভাপতি।

২০১১ সালের আগস্ট থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত নেপালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বাবুরাম ভট্টরাই।


কয়েক মাস আগে কাঠমান্ডু পোস্টে বাবুরাম ভট্টরাই একটি সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে নেপালের ভবিষ্যৎ, চীন ও ভারতের মতো প্রতিবেশীদের প্রসঙ্গ, বর্তমান কমিউনিস্ট পার্টির পররাষ্ট্র নীতিসহ নানা প্রসঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই। কাঠমান্ডু পোস্টের (https://kathmandupost.com/interviews/2019/11/12/baburam-bhattarai-our-mission-is-to-create-a-new-force-based-on-an-alternative-ideology) সাংবাদিক ‘টিকা আর প্রধান’ সাক্ষাৎকারটি নেন।

কমিউনিস্ট পার্টি ছেড়ে নতুন দল নয়াশক্তি গড়ার পর পুরোনো দলের সঙ্গে মিলে বিকল্প নতুন মোর্চা সমাজবাদী দলের প্ল্যাটফর্ম তৈরির অভিজ্ঞতার বিষয়ে যদি কিছু বলেন?

বাবুরাম: আমি ও আমার সহযোদ্ধারা একটি ব্যাপক জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। জনগণের জন্য নেপালকে একটি ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত করেছি, যার জন্য আমি গর্বিত। ধারাবাহিকভাবে নেপালের আজকের অবস্থান আমাকে আনন্দ দেয়। নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় নেপাল দেশটি একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। আমি মনে করি, একটি নতুন আদর্শকে ধারণ করে একটি নতুন ধাপে প্রবেশ করার অর্থ আমার কাছে পুঁজিবাদ ও কমিউনিস্টের চেয়েও বেশি কিছু। গণতান্ত্রিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত সবার অংশগ্রহণমূলক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে কার্যত একটি গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র বিনির্মাণ করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। নয়াশক্তি মূলত দলের নাম নয়, আসলে নতুন একটি ‘শক্তির কনসেপ্ট’কে বোঝাতে চেয়েছি। এখন আমরা বিভিন্ন সমমনা দলগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।


এর মাধ্যমে আপনি কি বিদ্যমান দলগুলোর বিকল্প তৈরি করছেন?

বাবুরাম:
নেপালের রাজনীতিতে নেপাল কংগ্রেস মূলত একটি পুঁজিবাদী দল, তবে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এটি সমাজকল্যাণের কিছু বৈশিষ্ট্য যুক্ত করার চেষ্টা করেছে। আমরা সমাজতন্ত্রকেও অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তবে এটি কেবলই শুধু আমাদের জন্য আদর্শ না হয়ে একটি লক্ষ্য হবে। আমরা পরোক্ষ গণতন্ত্রের পক্ষে নই, আমাদের অবস্থান সরাসরি এমন এক গণতন্ত্র, যেখানে একজন রাষ্ট্রপতি জনগণের দ্বারা সরাসরি নির্বাচিত হবেন। এখন দেশে নেপালি কংগ্রেসের অবস্থান পরোক্ষভাবে গণতন্ত্রের পক্ষে। কিন্তু নামধারী কমিউনিজমের অবস্থান সর্বহারা শ্রেণির একনায়কতন্ত্রে। এটাই সত্য। আমি বলব, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি যদি চরিত্র হারিয়ে জনগণের পক্ষে না থাকে, তবে তাদের উচিত কার্ল মার্ক্সের প্রতিষ্ঠিত সংজ্ঞাটি পরিবর্তন করে ফেলা। তারা সব সময় নিজেদের একটি ‘কমিউনিস্ট’ দল বলে আসছে, অথচ যা কোনোভাবেই সমাজতন্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমাদের সমাজতন্ত্র হচ্ছে জনগণের অন্তর্ভুক্তি এবং অংশগ্রহণের ভিত্তিতে।

আপনার দলের একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে কী বলবেন?

বাবুরাম:
প্রক্রিয়াটি অন্তর্ভুক্তির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কিছু কংগ্রেস ও কমিউনিস্টদের একটি অংশের আধিপত্য রয়েছে। আমরা বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি সরাসরি নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থার পক্ষে রয়েছি। সংসদ হবে পুরোপুরি আনুপাতিক হারে এবং রাষ্ট্রপতি সরাসরি মানুষের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন। যদি আমরা এই মডেলটি অনুসরণ করে নেপালের বর্তমান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারি, তাহলে আমরা এই উদ্যোগ সমর্থনকারী এমন দলের সঙ্গে বৃহৎ আকারে ঐক্যবদ্ধ হব। ঐক্যবদ্ধ ব্যাপারটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। দলগুলো একীভূত হওয়ার আগে আমাদের নয়াশক্তি দুই বছর ধরে রাজনীতির লক্ষ্য ও বিভিন্ন অভিন্ন লক্ষ্যের খুঁটিনাটি নিয়ে সংঘিয়া সমাজবাদী ফোরামের বিভিন্ন দলের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন আলোচনা করেছিল। ইতিমধ্যে আমরা নেপালের রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ করছি এবং আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগিয়ে চলছে। আমাদের সংলাপ শিগগিরই একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাবে।


সমাজবাদী পার্টি কি সরকারকে ছেড়ে যাবে বলে মনে করেন কি?

বাবুরাম: আমরা যদি বিকল্প শক্তি হতে চাই, তবে আমরা সরকারে থাকতে পারি না। তা ছাড়া স্মরণ করাতে চাই যে সংবিধান সংশোধন করা খুব জরুরি হয়ে পড়ায় সংঘিয়া সমাজবাদী ফোরাম সরকারকে দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে সরকারে যোগ দিয়েছিল। প্রায় দুই বছর সরকারে থাকার পরও প্রতিশ্রুত সংস্কারের কিছুই করা হয়নি। আবার আমরা শেষবারের মতো ক্ষমতাসীন দলকে অনুরোধ করব দ্রুত সংবিধান সংশোধন করতে। করবেই আমি মনে করি না। সে ক্ষেত্রে আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুতই আমরা রাস্তায় নেমে যাব। রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টির সঙ্গে একীকরণ প্রক্রিয়া চলাকালীন আমরা সরকার ত্যাগ করব।

আপনি কেন ভাবেন ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিশ্রুতি দিতে ব্যর্থ হচ্ছে?

বাবুরাম: একটি বড় কারণ, তারা তাদের বিপ্লবী ইচ্ছাশক্তি হারিয়েছে। দ্বিতীয়ত, তারা তাদের একচেটিয়া চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হয়েছে। কোন কোন বেসরকারি সংস্থাগুলোর জন্য কোন সেক্টরকে অনুমতি দেওয়া উচিত এবং কোন সেক্টরেকে স্বয়ং সরকারকে দেখাশোনা করা উচিত, তা নিয়েও তারা বিভ্রান্ত। বড় ব্যাপার যে সঠিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতাও নেই।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই চান ভারত ও চীনকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যাক নেপাল। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই চান ভারত ও চীনকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যাক নেপাল। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি প্রশাসনের বিদেশ নীতি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

বাবুরাম: বৈদেশিক নীতি ব্যক্তিগত বিষয় নয়; এটি এমন কিছু, যা জাতি তার স্বার্থকে মাথায় রেখে বিকাশ করে। বিস্তৃত জাতীয় স্বার্থের পরিবর্তে অলির সিদ্ধান্তগুলো তাঁর জাতীয় ও পক্ষপাতমূলক স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হয়। নেপালের সুনাম ও গৌরব প্রভাবিত হয়েছে, কারণ অলির বারবার নীতি পরিবর্তন করাতে। এবং দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। দুটি দৈত্যের মধ্যে অবস্থিত, আমাদের ভারত ও চীনকে অর্থনৈতিক সেতু হিসেবে বিবেচনায় নিয়েই নেপালের বিকাশ করা উচিত। এই দিকে যেহেতু সুস্পষ্ট দৃষ্টি নেই, তাই নেপালের বিদেশ নীতি প্রশ্নে আমাদের স্পষ্টতার অভাব রয়েছে।

এর অর্থ কি অলি প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক ভারসাম্য করতে ব্যর্থ হয়েছেন?
বাবুরাম: অলির নেতৃত্বাধীন সরকার বৈদেশিক সম্পর্কের গতিশীলতা এবং ক্ষমতার আঞ্চলিক ভারসাম্যের পরিবর্তন নিয়ে এখনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। নেপাল তার নীতিগুলো পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করতে এবং ভারত, চীন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যথাযথভাবে বোঝাতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারেনি। যদি আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে নেপালের পররাষ্ট্রনীতি কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ জাতির স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে না, তবে আমরা আমাদের নিকটবর্তী প্রতিবেশীদের থেকে এবং আমেরিকা থেকে সুবিধা পেতে পারি।

একসময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ঘাটতিগুলো সমাধানে তখন আপনি কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন?
বাবুরাম: আমি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পরিস্থিতি অন্য রকম ছিল। দেশটি একটি নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরি করার এবং মাওবাদী যোদ্ধাদের নেপাল সেনাবাহিনীতে সংহত করার জন্য শান্তি প্রক্রিয়া সমাপ্তির প্রান্তে মনোনিবেশ করেছিলাম। তবু আমি সর্বদা সজাগ ছিলাম যে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে পরিবর্তিত সম্পর্কের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে ভারত ও চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার অপরিহার্যতা। চীন একটি পরাশক্তি হিসেবে উঠছে এবং ভারতও অনেক উন্নতি করছে। আর আমেরিকা বিশ্ব শক্তি, যে ১৯৬০–এর পর আবারও এই অঞ্চলের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছে। আমাদের এই পরিস্থিতিটি দেখতে হবে, যেখানে তিনজন জায়ান্ট একটি সুযোগ হিসেবে আগ্রহ দেখায়।

অনেকে চীনের সি চিন পিংয়ের সফরকে ঐতিহাসিক হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু আপনি বলেছিলেন, এত খুশির দরকার নেই। কেন বলেছিলেন?
বাবুরাম: যেকোনো শক্তিশালী ও মর্যাদাপূর্ণ অতিথির আগমন সর্বদা ভালো। তবে আমাদের সম্পর্কগুলো একটি নতুন পদ্ধতিতে সংজ্ঞায়িত করা দরকার। যখন আমি প্রধানমন্ত্রী ছিলাম, চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও নেপাল সফরকালে আমাকে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে ভারত ও চীনকে নিয়ে নেপালের সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার। এবারও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভারতের মহাবালীপুরমে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরই নেপালে এসেছিলেন, যা কি না নেপালের কাছে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই না করার স্পষ্ট বার্তা। চীন জানে যে তাদের বাণিজ্যিক ট্র্যাকটি ভারতের বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত না হলে তারা নেপালের সঙ্গে রেলপথ থেকে কোনো উপকার পাবে না। সুতরাং চীন যতক্ষণ না ভারতের আস্থা অর্জন করবে, ততক্ষণ অপেক্ষা করবে। এই সত্যটা আমাদের বুঝতে হবে।

চীনের সঙ্গে করা চুক্তিগুলো কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
বাবুরাম: সাধারণভাবে, সরকার কর্তৃক স্বাক্ষরিত ১৪ দফা যৌথ যোগাযোগ ও ২০টি চুক্তি হয়েছিল। এগুলো রাজনৈতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে ইতিবাচক ছিল। আরেকটা ভালো দিক যে উন্নয়নে চীন নেপালকে স্থল-সংযুক্ত হওয়ার প্রয়াসে সমর্থন করতে রাজি হয়েছে। প্রতীকী হলেও, এর দীর্ঘমেয়াদি তাৎপর্য থাকবে। দ্বিতীয়ত, ‘ব্যাপক অংশীদারত্বের’ পরিবর্তে ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ শব্দটি ব্যবহার করে চীন নেপালের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে চায়। তবে আমাদের এটি জানতে হবে যে এতে সামরিক ও সুরক্ষাসংক্রান্ত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কি না। কারণ, তারা বিতর্ককে আমন্ত্রণ জানাতে পারে। তবে চুক্তিতে অনেক কিছুর অভাব ছিল এবং তারা যেভাবে দৃশ্যত প্রকাশিত হয়েছিল, আসলে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য ছিল না।

আপনি রেলের জন্য ঋণ না নেওয়ার কথা বলেছেন। চীনের ঋণ না নিয়ে কি রেলপথ তৈরি করা নেপালের পক্ষে সম্ভব?
বাবুরাম: প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নে আমাদের সহজ শর্তের ঋণ গ্রহণ করা উচিত। আর চীনা সীমানা পেরিয়ে রেলপথ নির্মাণ করা খুব ব্যয়বহুল একটি প্রকল্প। তিব্বত নিজেই চীনের একটি বড় বাজার নয়, এবং রেলপথটি এখানে পৌঁছাতে হিমালয় পার হতে হবে। আমরা যদি ঋণ নিয়ে রেলপথটি নির্মাণ করি, তবে এর অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপগুলো তার যথেস্ট স্বার্থ বা লাভজনক হবে না রিটার্নের দিক দিয়ে। পুরো বাজেটের কিছুটা ঋণ হিসেবে, বাকি অংশ অনুদান হিসেবে গ্রহণ করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। চীন একটি বড় দেশ এবং রেলপথ নির্মাণে আরও বেশি উপকৃত হবে তারাই। সুতরাং এটি কেবল তাদের আরও বেশি বিনিয়োগের জন্য যুক্তিযুক্ত করে তুলবে।

* লেখক: রাজনৈতিক, অর্থনীতি ও উন্নয়ন গবেষক