গোবিন্দগঞ্জে অভিনব চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার সমাপ্তি

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীতে সম্পূর্ণ পৃথিবী স্থবির। জীবন ও জীবিকা দুইটাই হুমকির মুখে। সহজ এবং স্বাভাবিক দিনের প্রতীক্ষায় প্রতিটা প্রাণ স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু এই মহামারীতে কোমলমতি শিশু, কিশোর এবং বৃদ্ধদের জীবন একঘেয়েমিতে পূর্ণ।

শিশু কিশোরদের একঘেঁয়েমি কাটাতে আর তাদের কোমল জীবনে সুখকর স্মৃতির যোগান দিতে একদল তরুণের এক নতুন উদ্যোগের প্রয়াস।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কিছু স্বপ্নবাজ তরুণের হাতে তৈরি 'ঝিলপাড়া রয়েল'স ক্লাব' র অধীনে হয়ে গেল বাংলাদেশব্যাপী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় তিনটি বিভাগ (কেজি, প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি)। সাত দিনে মোট ১৪৫ টি চিত্র স্থান পায় প্রতিযোগিতায়।

প্রতিটি চিত্র প্রতিযোগিদের বয়সের একটা সমসাময়িক আবেগ, ইচ্ছা ও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি উপহার দিয়েছে।

বিচারকদের বিশ্লেষণ শেষে সেরা ১০ জনের হাতে উঠে সনদ, ক্রেস্টসহ উপহার। বিচারক হিসেবে ছিলেন টরেন্টোর কালার্স হ্যাপি আর্ট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সোয়াথিকা আনানদান এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ফ্যাকাল্টি ভিজুয়াল আর্টিস্ট বিপুল মল্লিক।

বিচারক বিপুল মল্লিক বলেন, শিশু-কিশোরদের একঘেয়েমী দূর করতে চিত্রাঙ্কন হতে পারে আদর্শ পন্থা। শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন বিশ্লেষণ খুব একটা কঠিন বিষয়। প্রতিযোগিতার কারণে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় করা তাছাড়া আমার কাছে সবাই বিজয়ী।

শাম্মি আক্তার একজন অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে সালিলুল কবির সাবির, শিশু বিভাগে প্রথম হয়েছে। ও প্রথম না হলেও আমার খারাপ লাগত না। কেননা আমি মনে করি সব কিছুর মাঝে শিক্ষা আছে। করোনা কালে এমন একটি প্রতিযোগিতা শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশে কাজ করবে। ক্লাব কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।

ঝিলপাড়া রয়েল'স ক্লাবের সভাপতি শামীন ইস্তিয়াক জানান, করোনার শুরু থেকে আমরা অসহায় মানুষদের সেবাই কাজ করে যাচ্ছি। ক্লাবের নিজেস্ব উদ্দ্যোগে ১৫৫ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য তুলে দিতে চেষ্টা করেছি। এইসাথে তার কিছুদিন পরে বিদ্যানন্দের সাথেও আমরা কাজ করছি। শিশু কিশোররা করোনায় অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। তাদেরকে একটু অনন্দ দেও য়ার জন্য আমাদের এই অনলাইন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। যেখানে ঘরে বসে চিত্রাঙ্কন করে আমাদের অফিসিয়াল মেইলে পাঠিয়েছেন। অনেক সাড়া পেয়েছি আমরা। আমাদের এই আয়োজন শিশু-কিশোরদের যদি একটুখানি প্রশান্তি দিতে পারে এতেই আমাদের স্বার্থকতা।

তিন বিভাগে সাত দিনে পরে মোট ১৪৫টি আঁকা ছবি জমা পড়ে। প্লে বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে ঈশ্বরদীর সালিলুল কবির সাবির। প্রাথমিক বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে ভারতের জলপাইগুডির সার্থক দাস। মাধ্যমিক বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাফিস সাদিক অঙ্কন। সর্বমোট দশজনের বিজয়ী পায় সনদ, ক্রেস্ট, এবং উপহার। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী সকলকে অনলাইনের মাধ্যমে সনদ প্রদান করা হয়।

*লেখক: সাংগঠনিক সম্পাদক, ঝিলপাড়া রয়েল'স ক্লাব