অটিজম কিন্তু ট্যাবু নয়

বিশেষ শিশুদের সঙ্গে লেখিকা। বিশেষ শিশুদের সংযুক্ত রাখতে তৈরি করতে হবে বিশেষ কারিকুলাম।
বিশেষ শিশুদের সঙ্গে লেখিকা। বিশেষ শিশুদের সংযুক্ত রাখতে তৈরি করতে হবে বিশেষ কারিকুলাম।

শিশুরা যেন অফুরন্ত প্রাণশক্তির ভান্ডার, সব সময় চঞ্চল। ‘শিশু’ শব্দটি আমাদের বলে দিচ্ছে যে শিশুরা হচ্ছে এমন এক প্রাণ, যা কিনা দুরন্ত আর উড়ন্ত পাখি, প্রশ্নমুখী ও চঞ্চলতাপূর্ণ। জন্মের পর থেকেই একজন মানবশিশুকে তার মা তাকে কাঁদতে ও হাসতে দেখে। দিন যেতে যেতে সে যখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিকভাবে বাড়তে শুরু করে, ঠিক তেমনি তার মানসিক বিকাশও একইভাবে ঘটতে থাকে। টুকটুক করে কথা বলতে বলতে একদম ধ্বনি থেকে শুরু করে শব্দ-বাক্য বলা শেখে। কী সুন্দর মানবশিশুর এই বেড়ে ওঠা! তবে এ রকম সুন্দর বেড়ে ওঠার গল্প সবার ক্ষেত্রে এক রকম হয় না। কিছু শিশুর ব্যতিক্রম জীবনধারা থাকে।

চলুন অল্প পরিসরে একজন ব্যতিক্রম মানবশিশুর জীবনধারা জেনে নিই। শ্রাবণ (ছদ্মনাম) ৯ বছর বয়সী ফুটফুটে মেয়ে। জন্মের পরপর মায়ের হাততালির শব্দে সে কোনো সাড়া দিত না। মা ডাকলে সে মায়ের দিকে তাকাত না। তার যখন দুই বছর বয়স হলো, তখনো এক শব্দে কথা বলেনি সে। মা বুঝতে পারলেন যে কোথাও সমস্যা তো আছে! এখন শ্রাবণের বছর ৯ বছর। তার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে বৈশিষ্ট্য আকারে জানান দিচ্ছি—

এক.
শ্রাবণ যোগাযোগ করতে ভীষণ অপারগ। পরিবারে তার মা, বাবা, শিক্ষক ছাড়া সে আর তেমন কারও কথা শোনে না বা কারও কথার তোয়াক্কা করে না।
দুই.
রুটিন মাফিক কাজ করার একটা বিশেষ প্রবণতা আছে তার। এই যেমন ধরুন, সকালে ডাইনিং টেবিলের বড় এবং রাজকীয় চেয়ারটায় বসে চামচ দিয়ে টেবিলে ১০ বার আঘাত করবে। এ কাজটি করার ক্ষেত্রে তার কোনো দিন রুটিনের এদিক–সেদিক হয় না। সে প্রতিদিন এটা করে। কখনো এর ব্যতিক্রম ঘটলে, সে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলার মতো অবস্থা করে।
তিন.
মাইক্রোওয়েভ অন করলে সেখান থেকে যে মৃদু আওয়াজটা বের হয়, সেটা শুনলে শ্রাবণ খুব ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
চার.
বারান্দায় গাছে পানি দেওয়ার কাজটি শ্রাবণ ছাড়া অন্য কেউ করলে সবগুলো গাছ ভেঙে ফেলা ছাড়াও আরও নানা আক্রমণাত্মক কাজ শ্রাবণ করে থাকে।
পাঁচ.
শ্রাবণ কেবল বলে, ‘আমি সাবন’, ‘ভালো আছি’। সে নিজ থেকে আর কোনো কথা বলে না।
ছয়.
ছোটবেলা থেকেই কারও চোখের দিকে তাকিয়ে কোনো যোগাযোগীয় পরিবেশে অংশগ্রহণ করে না সে।
সাত.
সে কারও সঙ্গেই কোনো কথা বলে না। তার কোনো শ্রবণগত সমস্যা নেই।
৮.
ছবি আঁকতে ও লিখতে পছন্দ করে। পড়তে চায় না। চোখের দিকে তাকায় না। প্রতিটি আদেশের প্রতিধ্বনি করে। যেমন মা যদি বলেন যে ‘শ্রাবণ, লক্ষ্মী মেয়ে, এদিকে আসো’, সে ও বলবে, ‘শ্রাবণ, লক্ষ্মী মেয়ে, এদিকে আসো।’

শ্রাবণের এমন জীবনব্যবস্থার একটি নাম রয়েছে। এর নাম ‘অটিজম’। অটিজম আসলে একটি স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার। ফলে শিশুর ভাষিক, সামাজিক ও আচরণগত দক্ষতা প্রভাবিত হয়। আমাদের সামাজিক অবস্থানের কারণে অটিজম নিয়ে অনেক কুসংস্কার আছে। ট্যাবু হিসেবে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আমাদের অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও ব্যক্তিদের অবরুদ্ধ করে রাখছে। অটিজম আক্রান্ত শিশুর ভাষিক, সামাজিক ও আচরণগত দক্ষতাগুলো স্বাভাবিক শিশুদের মতো প্রকাশিত হয় না। এটি কোনো মানসিক রোগ নয়। এটি শিশুর ভাষিক, সামাজিক যোগাযোগ ও আচরণের বিকাশগত সমস্যা। অটিজম আক্রান্ত শিশুর দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই অটিজমের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। যদি প্রথম থেকেই আমরা লক্ষণগুলো চিহ্নিত করতে পারি, তবে তার সীমাবদ্ধতাগুলো কমিয়ে তার জীবনযাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক করতে পারি। এ ক্ষেত্রে শিশুর পিতা–মাতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। কোনো শিশুর অটিজম সমস্যা নিয়ে কোনো সন্দেহ হলে ১৮ মাস বয়সে নিন্মোক্ত উপায়ে তা পরীক্ষা করা যেতে পারে।

খেয়াল করুন
১. আপনার শিশু রান্না রান্না খেলা, গাড়ি গাড়ি খেলা বা অন্য কোনো ভাবনা দিয়ে এসব কল্পনা খেলা খেলতে পারে কি না?
২. আপনার শিশুটি তার পছন্দের জিনিস আঙুল দিয়ে দেখাতে পারে কি না?
৩. শিশুটি কি আপনার চোখে চোখে তাকায়?
৪. কোনো পছন্দের জিনিসের দিকে আঙুল দিয়ে বলুন ‘এই দেখো কী সুন্দর পুতুল’। শিশুটি কি সঙ্গে সঙ্গে ওই জিনিসটির দিকে তাকায়?
৫. শিশুটিকে খেলনা গাড়ি দিয়ে বলুন, এই গাড়ি দিয়ে তুমি একটু ঢাকা থেকে ঘুরে আসো। মোবাইল ফোন দিয়ে বলুন আপনাকে ফোন করতে, খেলনা পুতুল দিয়ে বলুন পুতুলকে গোসল করিয়ে নিয়ে আসতে। স্বাভাবিক শিশুরা এমন মিছেমিছি খেলাগুলো অনায়াসেই খেলতে পারে।
৬. ঘরের দেয়ালঘড়ি, লাইট বা ফ্যান আঙুল দিয়ে দেখাতে বলুন। সে দেখাতে পারছে কি না, তা লক্ষ করুন।
৭. তার পছন্দের খেলনাটি তার সামনে আনুন এবং হুট করে তা সরিয়ে ফেলুন। এতে শিশুর কোনো প্রতিক্রিয়া হয় কি না, তা খেয়াল করুন। খেলনাটি খুঁজতে সে আশপাশে তাকাচ্ছে কি না অথবা নিজেই খুঁজতে শুরু করে কি না, অস্থির হয়ে যাচ্ছে কি না তা লক্ষ করুন।

যে শিশুর অটিজম সমস্যা রয়েছে, সে এসব পরীক্ষায় সাধারণভাবে উত্তীর্ণ হতে পারে না। ওপরের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণের মাধমে আপনি নিজেই আপনার শিশুর অটিজম আছে কি না তা প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। ১৮ মাসের কোনো শিশু এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলে তার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না। এ বিষয়ে শিশু বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি যোগাযোগ করতে পারেন অডিওলোজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাংগুয়েজ প্যাথোলজি বিভাগ, পাইজার, বিইউপি, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এবং যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; বিশেষায়িত স্কুল-প্রয়াস, অটিজম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, সূচনা ফাউন্ডেশন, সোয়াক, তরী ফাউন্ডেশন; ও সিআরপি, সাভারের সঙ্গেও।

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

করোনার এ সময়ে বিশেষ শিশুর জন্য করণীয়

কোভিড-১৯-এর আক্রমণের পর এ বছরের মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সব সাধারণ শিশুর মতো আমাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরাও বাসায় আছে। আমাদের শ্রাবণের মতো প্রায় সব বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু যেহেতু এখন সারাক্ষণ বাসায় থাকছে, সেহেতু তাদের জন্য পরিবারের বিভিন্ন করণীয় দিক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এমন সময়ে তাদের আচরণ, ভাষা ও সামাজিক যোগাযোগ দক্ষতার বিকাশ সাধনের জন্য অভিভাবক হিসেবে আপনি বা আপনারা নিম্নোক্ত কাজগুলো করতে পারেন—

১. এ সময় যেহেতু আপনার শিশুটি বাসাতেই আছে, তাই সবার প্রথমেই যে বিষয় গুরুত্ব দেওয়া উচিত, তা হলো, এই সময়ে শিশু কোনো মানসিক চাপের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে কি না, সেটা লক্ষ করা। কারণ, আমাদের এই শিশুরা অনেক কিছু বলে প্রকাশ করতে পারে না; তাই তাদের অস্থিরতা থাকে অন্য সবার চেয়ে বেশি। বাবা-মা, ভাইবোন যাঁরা থাকবেন, তাঁদের সবার সঙ্গে বাচ্চাটি যেন কাজ করতে পারে বা পরিবারের কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে, সেভাবে একটা রুটিন তৈরি করতে পারেন। রুটিন তৈরি করতে হবে এমনভাবে, যেন এটিতে সে স্বাছন্দ্যবোধ করে এবং এই রুটিন মেনে চলতে তাকে সাহায্য করতে হবে। এখানে উদ্দেশ্য একটাই, পরিবারের সবার সঙ্গে বাচ্চাটির যেন একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হয় এবং বাচ্চাটি যেন ব্যস্ত থাকে।

২. বিশেষ শিশুরা তাদের শিক্ষক, থেরাপিস্ট বা বন্ধুদের ভীষণ পছন্দ করে। তাই অনেক দিন তাদের থেকে দূরে থাকার ফলে তার মন খারাপ হতে পারে এবং সে অস্থির আচরণ করতে পারে। এ জন্য তার বন্ধুবান্ধব, শিক্ষক, থেরাপিস্টদের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

৩. বাচ্চাটির বয়স এবং দক্ষতা অনুযায়ী তাকে পরিবারে কিছু কাজের দায়িত্বও দেওয়া যেতে পারে। যেমন: ছোট ছোট আদেশগুলো মানা, বাবা বা মায়ের কাজের সময় তাদের নানা জিনিসপত্র এগিয়ে দেওয়া, ঘর গোছানো, ঘর মোছা ও পরিষ্কার করা, ফার্নিচার পরিষ্কার করা, বিছানা করা, কাপড় ভাঁজ করা, সবজি ছিলা ও কাটা বা পরিষ্কার করা, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র অপারেট করতে শেখা, রান্নাবান্না শেখা, সেফটি সিকিউরিটি সম্বন্ধে শেখা ইত্যাদি।

৪. সে যদি ভালো কাজ করে, সে ক্ষেত্রে তার অনেক বেশি করে প্রশংশা করা উচিত, তাকে উপহারও দেওয়া উচিত, যেন পরের দিন সে নতুন উদ্যমে কাজ করার আগ্রহ নিয়ে থাকে। এভাবে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

৫. স্বাস্থ্য সুরক্ষার সব নিয়মকানুন পালন নিশ্চিত করতে হবে এবং এগুলো অভ্যাসে পরিণত করতে সাহায্য করতে হবে। যেমন: বারবার হাত ধোয়া, বেশি করে পানি পান করা বা নির্দিষ্ট সময়ে টয়লেট ব্যবহার করা অথবা নির্দিষ্ট সময়ে সবার সঙ্গে একসঙ্গে বসে খাবার খাওয়া।

৬. শিশুটির যেন পর্যাপ্ত ঘুম হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি তার খাবারের দিকেও নজর রাখা লাগবে।

৭. শিশুর সঙ্গে প্রচুর ছড়া ও শিশুতোষ গান করুন। গান বা ছড়ার সুর এবং ছন্দ তাকে ভাষার প্রতি আকৃষ্ট করবে।

৮. আপনার বিশেষ শিশুকে এ সময়ে ধীরে ধীরে নতুন নতুন শব্দ শেখান, কিন্তু জোর করবেন না। মনে করুন সে বলেছে, ‘বল’। আপনি বলুন, ‘লাল বল’ এভাবে তাকে নতুন শব্দ শেখান।

৯. প্রতিদিন কিছু সময় একান্তে বিশেষ শিশুটির সঙ্গে কাটান। তার সঙ্গে বেশি বেশি কথা বলুন। কথা বলার সময় শিশুটির দিকে তাকিয়ে স্পষ্ট উচ্চারণে এবং ধীরে কথা বলুন। দুজনে মিলে কোনো ছবির বই দেখে তা নিয়ে গল্প করুন। যত বেশি ওয়ান টু ওয়ান সেশন দেবেন, ততই তার যোগাযোগ দক্ষতা বাড়বে।

১০. যখনই দেখবেন যে বাচ্চাটি খেলছে, তখনই তাকে জিজ্ঞেস করবেন, সে কী করছে বা তার খেলা নিয়ে প্রশংসাসূচক ছোট ছোট শব্দ বলুন। আপনার মনোযোগ পেয়ে সে আনন্দিত হবে এবং তার মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। তা ছাড়া এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে নতুন শব্দ শিখবে এবং তার শব্দভান্ডার বাড়বে।

১১. এ সময়ে আপনার বিশেষ শিশুকে বাসায় থাকা জিনিসপত্র ব্যবহার করে ক্র্যাফট জাতীয় জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে। এতে তাদর সৃজনশীলতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

১২. এসব শিশুর নিয়মিত প্রয়োজনীয় ব্যায়াম, ইয়োগা ও নির্দিষ্ট থেরাপির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শিশুর শিক্ষক ও থেরাপিস্টের সঙ্গে ভিডিও কল করে এ বিষয়ে সহায়তা পেতে পারেন।

১৩. বিনোদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনের একটা সময় অবশ্যই বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা। সেটা হতে পারে সবাই মিলে ভালো কোনো সিনেমা দেখা, কোনো ইনডোর গেম খেলা। বিশেষ শিশুদের বিভিন্ন রকম ফান অ্যাক্টিভিটির সঙ্গে যুক্ত রাখতে হবে। কার্টুন দেখা, সিনেমা দেখা, নাটক দেখা, ছবি আঁকা, নাচ, গান, পাজল ম্যাচিং বা মজার মজার ইনডোর গেমস খেলা, যেগুলো দৈহিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষ সাধনে ভূমিকা রাখবে।

১৪. বর্তমান সময়ে অন্যদের মতোই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর মধ্যে সামান্য যেকোনো শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতার উপসর্গ দেখা দিলে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক বা পেশাদার ব্যক্তির সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

১৫. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের আগ্রহ ও পছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। অনেক সময়ই ওদের চাহিদাগুলো আমাদের সঙ্গে মিল না থাকায়, অথবা অন্যান্য কারণে প্রাধান্য দিই না। ওরা যখন রেগে যায় বা অন্যান্য আচরণের মাধ্যমে জোরাজুরি করে, তখন আমরা ওদের কথা শুনি; এমনটা বারবার করলে ওরা ধরেই নেয়, খারাপ আচরণেই শুধু তাদের কথা মনোযোগ পাওয়া সম্ভব। তার মানে কিন্তু এটাও নয়, কোনো অন্যায্য চাহিদাকে প্রাধান্য দিতে হবে। অন্যায্যের ক্ষেত্রে অভিভাবকের শক্ত থাকাটাই বাঞ্ছনীয়। তবে সে ক্ষেত্রে খুব নেতিবাচক ব্যবহার করা যাবে না। তাকে বোঝার চেষ্টা করুন এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিন।

আপনার ও আমার সচেতন প্রয়াসে এই বিশেষ শিশুরা পেতে পারে খানিকটা স্বাভাবিক ও সুন্দর জীবন। তাদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখুন। প্রয়োজনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিন। আমরা চাই যে আমাদের বিশেষ পাখিরাও ডানা মেলে উড়ুক। প্রতিটি পাখি কথা বলুক, প্রতিটি প্রাণ হাসুক।

*লেখক: প্রভাষক, অডিওলোজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজি বিভাগ, প্রয়াস ইনস্টিটিউট অব স্পেশাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পাইজার), বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)