কেকেকের কুখ্যাত খুনি এডগার রে মারা গেছেন

এডগার রে কিলেন
এডগার রে কিলেন

কু ক্লাক্স ক্ল্যানের (কেকেকে) ষাটের দশকের নেতা এডগার রে কিলেন কারাগারে মারা গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে তিন মানবাধিকারকর্মীকে হত্যার অভিযোগে তাঁর ৬০ বছরের জেল হয়েছিল। মিসিসিপি ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনস বলেছে, মৃত্যুর আগে ৯২ বছর বয়সী এডগারের স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো ছিল।

১৯৬৪ সালে জেমস চ্যানে, অ্যান্ড্রু গডম্যান ও মাইকেল শুয়েরনার নামের তিন তরুণ মানবাধিকারকর্মী খুন হন। তাঁদের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার এবং পরে কেকেকে সদস্যদের হাতে নিহত হওয়ার ঘটনাটি সে সময় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এতটাই তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল যে কর্তৃপক্ষ নাগরিক অধিকার আইন প্রণয়ন করে। নাটকীয় সেই ঘটনা নিয়ে মিসিসিপি বার্নিং নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। ১৯৮৮ সালে চলচ্চিত্রটি অস্কার জয় করে।

কেকেকে হলো যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী কট্টরপন্থী সংগঠন। এই সংগঠনের সদস্যরা অভিবাসন-বিরোধীও।

জেমস চ্যানে, অ্যান্ড্রু গডম্যান ও মাইকেল শুয়েরনার ছিলেন শিকাগোভিত্তিক অলাভজনক সংগঠন কংগ্রেস অব রেসিয়াল ইকুয়ালিটির (কোর) সদস্য। ১৯৬৪ সালের ফ্রিডম সামার প্রচারণায় দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোতে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের নিবন্ধন করানোর কাজ করছিলেন তাঁরা। মিসিসিপির নেশোবা কাউন্টিতে একটি গির্জায় সে সময় স্থানীয় আফ্রিকান-আমেরিকানদের শিক্ষা ও নিবন্ধন কার্যক্রম চলছিল। ওই গির্জায় বোমা হামলার পর সেখানে যান ওই তিন তরুণ। স্থানীয় পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। যে রাতে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়, সে রাতেই আবার তাঁরা নিখোঁজ হন। কেকেকের সদস্যরা তাঁদের মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি আগে থেকেই জানত। সে অনুযায়ী ওত পেতে ছিল তারা। ছয় সপ্তাহ পর স্থানীয় একটি কৃষিজমি থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)।

তদন্তের সময় এফবিআই নেশোবা কাউন্টির ডেপুটি শেরিফসহ ডজনখানেক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে। ১৯৬৭ সালে এই ঘটনার বিচার শুরু হয়। এডগার ছিলেন সাবেক একজন ব্যাপ্টিস্ট মতপ্রচারক। শ্বেতাঙ্গ জুরিদের কনিষ্ঠ এক নারী সদস্য ব্যাপ্টিস্ট মতপ্রচারকের বিচার করতে পারবেন না বলে জানালে বিচারপ্রক্রিয়াটি ঝুলে যায়। ২০০৫ সালে নতুন করে বিচারের মুখোমুখি হন এডগার। এরপর তাঁর ৬০ বছরের কারাদণ্ড হয়।