পুলিশের কাছে হার্ভি ওয়াইনস্টিনের আত্মসমর্পণ, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ গঠন

হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এ সময় হাতকড়া পরিয়ে তাঁকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ২৫ মে। ছবি: এএফপি
হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এ সময় হাতকড়া পরিয়ে তাঁকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ২৫ মে। ছবি: এএফপি

হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিন আত্মসমর্পণ করেছেন। নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, হার্ভির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, হার্ভি ওয়াইনস্টিনের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন নারী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছেন। ৬৬ বছর বয়সী এই প্রযোজক বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। তাঁর বক্তব্য, জোর করে কিছুই করেননি তিনি।

নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হার্ভি ওয়াইনস্টিনকে ‘গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে দুই ভিন্ন নারীর প্রতি ধর্ষণ, অপরাধমূলক ফৌজদারি অপরাধ, যৌন নিপীড়ন এবং যৌন অসদাচরণে জড়িত থাকার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।’

তবে হার্ভির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত তথ্য এখনো দেওয়া হয়নি। বিবৃতিতে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা নারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবারই আদালতে হাজির করা হতে পারে হার্ভিকে। আত্মসমর্পণের পর তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।

তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, অভিনেত্রী লুসিয়া ইভান্সের একটি অভিযোগকে আমলে নেওয়া হয়েছে। তিনি হার্ভির বিরুদ্ধে জোরপূর্বক যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে ধর্ষণের অভিযোগ যিনি তুলেছেন, তাঁর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, হার্ভির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ গঠন করা হতে পারে। কারণ, এ-সংক্রান্ত তদন্তের সঙ্গে জড়িত গ্র্যান্ড জুরির কাছে কমপক্ষে আরও চারজন নারী সাক্ষ্য দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ৭০ জন নারী হার্ভির বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। হার্ভির বিরুদ্ধে অভিযোগের সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ ঘটে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শুরু হওয়া সামাজিক আন্দোলনের পর। ওই সময় #মিটু দিয়ে নারীরা নিজেদের যৌন হয়রানির ঘটনাগুলো প্রকাশ করতে থাকেন। এতে যুক্ত হন হলিউডের নামীদামি তারকারাও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই হার্ভির মতো প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন।

হার্ভি প্রভাবশালী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দ্য ওয়াইনস্টিন কোম্পানির প্রধান ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন মিরাম্যাক্স ফিল্মসের প্রতিষ্ঠাতা। হলিউডের প্রায় সব বড় তারকাই হার্ভির সঙ্গে কাজ করেছেন। তবে যৌন হয়রানির ব্যাপক অভিযোগ ওঠায় তাঁকে এসব প্রতিষ্ঠানের পদ থেকে সরে যেতে হয়। অস্কারের সদস্যপদ থেকেও বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।

হার্ভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের খবরে ফের সরব হয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করা বিভিন্ন পেশার নারীরা। অভিনেত্রী রোজ ম্যাকগোয়ান বলেন, ‘বিশ বছর আগে, আমি শপথ নিয়েছিলাম যে এই অন্যায়কে ন্যায়ের পথে নিয়ে আসব। আজ আমরা বিচারের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।’ অন্যদিকে এক শব্দে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইতালীয় অভিনেত্রী এসিয়া আরজেনটো। এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘বুম’।