বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে ভারতকেও একচোট নিলেন ট্রাম্প

জি-সেভেন সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
জি-সেভেন সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

পুরোই খেপেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারে বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে ভারতকেও একচোট নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। গত শনিবার জি-সেভেনের বৈঠকে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে একেবারে লুটেপুটে খাচ্ছে। এ নিয়ে বন্ধুরাষ্ট্র কানাডার সঙ্গে টানাপোড়নও তৈরি হয়েছে তাঁর।

পরে ট্রাম্প তাঁর অভিযোগের তির ছোড়েন ভারতের দিকে। তিনি বলেছেন, ‘কেবল জি-সেভেন নয়; আমি বলতে যাচ্ছি ভারতও রয়েছে। ভারত অনেক পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। ১০০ শতাংশ। আর আমরা কিছুই চার্জ করিনি। এটা হতে পারে না।’ যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যায্য বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

গত শনিবার কানাডার কুইবেকে দুই দিনের জি-সেভেন সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা পিগি ব্যাংকের মতো, সবাই আমাদের লুটেপুটে খাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা তাঁরা করতে পারে না। আমরা অনেক দেশের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা সব দেশের সঙ্গেই কথা বলেছি। এখন এই শুল্ক বন্ধ করার সময় এসেছে। আর তা না হলে আমরা তাঁদের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দেব। এটিই সবচেয়ে লাভজনক উত্তর।’

জুনের শুরু থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে ইস্পাত আমদানিতে ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের বক্তব্য এই সিদ্ধান্ত দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোটরসাইকেল ও অন্য পণ্য আমদানিতে শুল্ক বসানোর ঘোষণা দেয়। পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ায় ঘোষণা দিয়েছে কানাডা ও মেক্সিকোও। এসব নিয়ে একচোট হয়ে গেছে গত শুক্রবার ও শনিবার অনুষ্ঠিত জি-সেভেন বৈঠকে। পরে বৈঠকের যৌথ সমাপনী ঘোষণা থেকে নিজের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কানাডা প্রতারণা করেছে, এমন অভিযোগ করেন তিনি। ট্রাম্পের অভিযোগ, অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বিরাট অঙ্কের শুল্ক বসাচ্ছে। তবে ট্রাম্প সমর্থন না দিলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বাকিরা পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে সমাপনী ঘোষণায়।

ভারতের ওপর অবশ্য ট্রাম্পের রাগটা প্রকাশ পায় চলতি বছরের শুরুতেই। যুক্তরাষ্ট্র থেকে হার্লি ডেভিডসন মোটরসাইকেল আমদানিতে ভারতের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের বিষয়ে সমালোচনা করেন ট্রাম্প। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ভারত থেকে মোটরসাইকেল আমদানিতেও অধিক শুল্ক বসাবেন। যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে মোটরসাইকেল আমদানি করে।

এরপর ভারত ওই মোটরসাইকেলে শুল্ক ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করে। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর প্রশ্ন, ভারত থেকে আসা মোটরসাইকেলে যখন তাঁরা কর বসান না, তখন তা মার্কিন বাইকে কেন? ওই সময় ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথোপকথনের পর তাঁকে ‘অসাধারণ মানুষ’ ও ‘নিপাট ভদ্রলোক’ বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, নরেন্দ্র মোদিই তাঁকে কর কমানোর কথা বলেছেন।