অভিযোগকে সত্যি বললেন নারী সাংবাদিক, ক্ষমা চেয়েছিলেন ট্রুডো

জাস্টিন ট্রুডো
জাস্টিন ট্রুডো

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে যে নারী সাংবাদিকের সঙ্গে অশালীন আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে, অবশেষে সেই নারী মুখ খুলেছেন। গতকাল শুক্রবার সাবেক এই সাংবাদিক বলেন, ১৮ বছর আগের সেই ঘটনা সত্যি। তবে তিনি বিষয়টি সেখানেই শেষ বলে মনে করেন।

সিএনএনের পার্টনার সিবিসি নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে রোজ নাইট নামের ওই নারী সাংবাদিক বলেন, ‘২০০০ সালের আগস্টে ক্রেসটেন ভ্যালি অ্যাডভান্স পত্রিকায় সম্পাদকীয় পাতার ‘ওপেন আই’ অংশে প্রকাশিত খবরের সেই নারী আমি। সেই ঘটনা সত্যি কি না, তা নিশ্চিত হতে গণমাধ্যমের চাপের মুখে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমি এই বিবৃতি দিলাম।’

নাইট বলেন, ‘পরের দিনই ট্রুডো ক্ষমা চেয়েছিলেন। আমি ঘটনাটিকে তখনই আর ঘাঁটাঘাঁটি করতে চাইনি, ভবিষ্যতেও চাইব না। ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে বা পরে কখনোই আমরা সঙ্গে যোগযোগ ছিল না।’

ট্রুডোর বিরুদ্ধে যে সময়কার এই অভিযোগ তোলা হয়েছে, তখন তাঁর বয়স ছিল ২৮ বছর। তখন তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়নি। কানাডার প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর ছেলে হিসেবে পরিচিতি ছিল তাঁর। ২০০০ সালে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ক্রেসটনে দাতব্য সংস্থার তহবিল গঠন করতে গিয়ে ট্রুডো এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে আসা এক নারী সাংবাদিকের সঙ্গে অশালীন আচরণ করার অভিযোগ ওঠে ট্রুডোর বিরুদ্ধে।

গত মাসে কানাডার রাজনৈতিক বিশ্লেষক ওয়ারেন কিনসেলা এই ঘটনাকে নিয়ে তৎকালীন ক্রিস্টান ভ্যালি অ্যাডভান্স পত্রিকার সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের একটি ছবি টুইট করেন এবং হ্যাশট্যাগ মি টুতে শেয়ার করেন। এরপরই আগের সেই ঘটনা আবার আলোচনায় আসে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার কানাডার সাসকেচুয়েনের রেসিনা এলাকায় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রুডো বলেছিলেন, সেদিন কোনো নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছিল বলে তিনি মনে করতে পারছেন না।

অথচ তিন দিন পেরোতেই ট্রুডো বললেন, সেদিন তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন। তবে তিনি সেদিন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কিছু করেননি বলে আবারও দাবি করেন। ট্রুডো বলেন, ‘তবে হ্যাঁ, ওই নারীর অনুভূতিকে আমি সম্মান করি। আমি বুঝতে পেরেছি, কোনো কারণে তিনি অস্বস্তি বোধ করেছেন, তাই আমি ক্ষমা চেয়েছি।’

অ্যাডভান্স পত্রিকার সাবেক প্রকাশক ভ্যালেরি বোন সিবিসি নিউজকে বলেন, ২০০০ সালে এই নারী কর্মীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘যতদূর মনে পড়ে, একধরনের অস্বস্তি নিয়ে সে আমার কাছে এসেছিল। যা হয়েছিল, তার তা ভালো লাগেনি। কারণ সে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে তিনি দেশের জনগণের কাছে এক পরিচিত মুখ। তাই ওই সময় এই নারী ঠিক কী করবেন তা বুঝতে পারছিলেন না।’

বোন বলেন, ‘আমি সেদিনের ঘটনাকে কোনো শ্রেণিতে ফেলব না বা যৌন হয়রানিও বলব না। কিন্তু এই নারী সহকর্মী বলেছিলেন, ট্রুডোর আচরণে মোটেও সৌজন্যবোধ ছিল না।’