নিউইয়র্কবাসী ঘুমাচ্ছে কম, স্থূলতা বাড়ছে

নিউইয়র্ক নগরবাসীদের মধ্যে অনিদ্রার হার বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে স্থূলতার সংকটও। নগরবাসীর এক-তৃতীয়াংশই এখন স্থূলতার সংকটে ভুগছে। এক দশক আগেও অবস্থা এতটা ভয়াবহ ছিল না। ১০ জুলাই আরবান হেলথ নামের এক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্ঘুম শহর হিসেবে এমনিতেই সুখ্যাতি রয়েছে নিউইয়র্কের। বলা হয় এই শহর কখনোই ঘুমায় না। কিন্তু শহরের মতো করে শহরবাসীকেও ধরেছে না ঘুমানোর রোগে। একই সঙ্গে মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যাও বাড়ছে নগরবাসীর মধ্যে।

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক দীর্ঘ ১০ বছর ধরে গবেষণা করে সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। আরবান হেলথ জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্ক নগরের বাসিন্দাদের ৩২ দশমিক ৪ শতাংশই স্থূলতার সংকটে ভুগছেন। দশ বছর আগেও এই পরিমাণ ছিল মোট নগরবাসীর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত নগরীর স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই তথ্য দিয়েছে গবেষক দল। মুটিয়ে যাওয়ার এই সমস্যার পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে খাদ্যাভ্যাস। নগরবাসীদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমছে। বিশেষত ফল ও শাকসবজি খাওয়ার প্রবণতা কমে গেছে। বিপরীতে বেড়েছে চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের হার।

গবেষণার তথ্যমতে, ২০১৪ সালে নগরবাসীদের মধ্যে মাত্র ৯ দশমিক ৯ শতাংশ সপ্তাহে অন্তত একবার সবজি খান। অথচ এক দশক আগেও এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ। একইভাবে দশকের ব্যবধানে ফল গ্রহণের হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে এসে ঠেকেছে। এর বিপরীতে রেস্তোরাঁমুখিতা বেড়েছে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায়। নগরবাসীরা সপ্তাহে গড়ে প্রায় চারবার খাবার গ্রহণ করেন রেস্তোরাঁতে গিয়ে। তবে পাতাল রেল ও গণপরিবহনে বিদ্যমান নৈরাজ্য নিউইয়র্কবাসীর জন্য কিছুটা হলেও শাপে বর হয়েছে। কারণ গণ পরিবহন ব্যবস্থার দুর্দশার কারণে নিউইয়র্কবাসীকে ইচ্ছার বাইরে হলেও অনেকখানি হাঁটাচলা করতে হয়। এ কারণে আমেরিকাজুড়ে মুটেয় যাওয়ার সংকট যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে নিউইয়র্কবাসী এখনো কিছুটা পিছিয়ে আছে!

মুটিয়ে যাওয়ার সংকটের পেছনে খাদ্যাভ্যাস ছাড়াও রয়েছে অন্য অনেক কারণ। নিউইয়র্কবাসীদের মধ্যে আলসেমির প্রবণতা বেশি বলে গবেষণা প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছেন গবেষকেরা। তাঁরা জানান, ২০০৪ সালে নিউইয়র্কবাসীদের মাত্র ৪৮ শতাংশ দিনে গড়ে তিন ঘণ্টা করে টেলিভিশনের সামনে বসে থেকে সময় কাটাতেন। এক দশকের মাথায় এই সংখ্যা বেড়ে ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে কমেছে শরীরচর্চার হার। মাসে নিয়ম করে খুব কমসংখ্যক নিউইয়র্কবাসীই শরীরচর্চা করেন। রয়েছে ঘুমের সমস্যাও। বিশেষত ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে ঘুমের সমস্যা ব্যাপক মাত্রায় রয়েছে।