রুহানির সঙ্গে যেকোনো সময় বৈঠকে প্রস্তুত ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হাসান রুহানি। ছবি: রয়টার্স
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হাসান রুহানি। ছবি: রয়টার্স

বৈঠকি মেজাজে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত জুনে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকের পর এবার আরেক শত্রু ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গেও বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কোনো রকম পূর্বশর্ত ছাড়াই যেকোনো সময় এ বৈঠক হতে পারে।

গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ট্রাম্প। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যে-কারও সঙ্গে দেখা করতে রাজি। কারণ, আমি বৈঠকে বিশ্বাস করি।’ ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান চাইলে আমি দেখা করব।’

ট্রাম্পের বক্তব্যের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানান, ইরান যদি দেখিয়ে দেয় যে সে তার আচরণে পরিবর্তন আনতে ইচ্ছুক, তখন এই বৈঠকে সহায়তা করবেন তিনি। গণমাধ্যম সিএনবিসিকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে পম্পেও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বৈঠক করতে চান এবং সমস্যার সমাধান করতে চান।’

ট্রাম্পের এই প্রস্তাব তার আগের কার্যকলাপ ও হুমকির সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। গত সপ্তাহেই ইরানের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিলে তার এমন জবাব দেওয়া হবে যে বিশ্ব আগে তা কখনো দেখেনি। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে কখনো আর হুমকি দেবেন না। দিলে এমন পরিণাম ভোগ করবেন, ইতিহাসে যাদের সংখ্যা খুব অল্পই। এর আগে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

গত মে মাসে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে এসে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন প্রশাসন। তেহরানের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন এই নীতি অনুসরণ করায় ওয়াশিংটনের ওপর ক্ষিপ্ত হয় তেহরান। যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে হাসান রুহানি বলেন, ‘ইরানের সঙ্গে শান্তি মানেই সব শান্তির প্রসূতি। আর ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ হলে তা হবে “সব যুদ্ধের মা”।’ এরপরই ইরানকে ‘নজিরবিহীন শিক্ষা’ দেওয়ার হুমকি দেন ট্রাম্প। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানির আপত্তি সত্ত্বেও তেহরানের বিরুদ্ধে আরও অবরোধ খুব শিগগির দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

আসলে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের কর্মকাণ্ড নিয়ে খুবই সন্দিহান যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে ইরানের দুই শত্রু ইসরায়েল ও সৌদি আরবের সঙ্গে সখ্য বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এখনো ট্রাম্পের সর্বশেষ এ প্রস্তাবের ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। তবে তাঁর উপদেষ্টা হামিদ আবুতালেবি এক টুইটে বলেছেন, ‘আলোচনায় বসতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে সবার আগে পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসতে হবে এবং ইরানের অধিকারগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’

দুই নেতার মধ্যে এই বৈঠক হলে এটি হবে ১৯৭৯ সালে ইরানি অভ্যুত্থানের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম বৈঠক।