আমেরিকায় প্রথম ক্রিকেট দর্শনের অভিজ্ঞতা


বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে সাংবাদিকেরা প্রায়শ বিভিন্ন দেশ সফর করেন। মাছরাঙা টেলিভিশনের ক্রীড়া বিভাগের প্রধান রাকিবুল হাসান তাদের একজন। চলতি বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় তাঁর ম্যাচ বিশ্লেষণ টেলিভিশনের পর্দায় আপনারা দেখেছেন। বাংলাদেশের ক্রীড়া সাংবাদিকদের অন্যতম রাকিব। ৭ আগস্ট এক সৌজন্য সফরে জ্যাকসন হাইটসে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার কার্যালয়ে এসেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অফিশিয়াল ফটোগ্রাফার রতন গোমেজ। রাকিব ও রতন দুজনেই জানালেন, ক্রিকেট চর্চা হয় না এমন একটি দেশে এসে খেলা কভার করার অভিজ্ঞতা অন্যরকম। আগে যে সব দেশে গিয়েছি, সবাই ক্রিকেট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। এবারই ঘটল ব্যতিক্রম। তবে বেশ ভালো হলো। পাশাপাশি পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাবান দেশ আমেরিকা সম্পর্কে জানা হলো।
মাশরাফি-সাকিব আল হাসানের আমেরিকা অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচ হেরে গিয়েও সিরিজ জয় করে তারা। ফ্লোরিডায় যে ভেন্যুতে খেলা হয়েছে, সেখানে আইসিসির আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের অনুমতি আছে। এটা আসলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি আন্তর্জাতিক ভেন্যু। ফ্লোরিডার বিখ্যাত শহর মায়ামি থেকে সড়ক পথে ৪৫ মিনিট দূরে জায়গাটির নাম ফোর্ট লটারডেল। স্টেডিয়ামের নাম সেন্ট্রাল ব্রডওয়ে রিজওনাল পার্ক। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচ নিয়মিত হয় এখানে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের মতো সিপিএল মানে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগ এই অঞ্চলে খুব জনপ্রিয়। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান-মাহমুদুল্লাহর অভিজ্ঞতা আছে এই লীগে খেলার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ চাইলে ফ্লোরিডার এই ভেন্যুতে টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করতে পারে। বাংলাদেশের আগে ২০১৬ সালে ভারতের বিরুদ্ধে একটি সিরিজের আয়োজন করেছিল তারা। ওই সিরিজে এক ম্যাচে ভারত আগে ব্যাট করে ১৪৫ রান করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ রুদ্ধশ্বাস সেই খেলাতে এক রানে জয়ী হয়। রাকিব জানালেন, বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই সিরিজটাও ছিল দারুণ উপভোগ্য। মাঠে বসে খেলা দেখাটা বেশ উপভোগ্য। দর্শকদের মধ্যে এ দেশের মূল ধারার মানুষ কম ছিল। বেশির ভাগ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান। আর বাঙালি ছিল প্রচুর। বহু মানুষ অন্যান্য স্টেট থেকে গাড়ি ড্রাইভ করে এই স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে এসেছিল।
রতন গোমেজ অনেকগুলো ক্রিকেট জার্সি নিয়ে এসেছিলেন। সব এখানকার বাংলাদেশি দর্শকদের দিয়েছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের ক্রিকেট প্রেমে তিনি মুগ্ধ। পাশাপাশি তাদের আতিথেয়তায়। তিনি বলেন, ফ্লোরিডা এমনিতে এত সুন্দর। আর সেই সঙ্গে মানুষজনও দারুণ। অনেক দেশেই তো গিয়েছি। কিন্তু আমেরিকায় ঘোরার মজাই আলাদা।
রাকিব যে হোটেলে ছিলেন সেখানে অনেকে ক্রিকেট বোঝে না। তাদের বেসবলের মাধ্যমে ক্রিকেট কী বোঝানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। যে ভেন্যুতে খেলা হয়েছে সেটা অনেক বিখ্যাত। রাকিব বললেন, ‘আমি ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বললাম এখানকার ক্রিকেট ভেন্যুতে যাব। সে তো ক্রিকেট ভেন্যু চেনে না। পরে জায়গার নাম বলার পরে বুঝতে পারল। বলল, “ওখানে অনেক ক্রাউড-সাউন্ড, সামথিং হ্যাপেন্ড।”’
রতন গোমেজ ছবি তোলার সূত্রে স্টেডিয়ামের চারদিকে ঘুরেছেন। অনেক বাঙালির সঙ্গে কথা বলেছেন। সবাই খুব উৎসবের আমেজে ছিল এখানে খেলা দেখতে পেরে। রতন জানালেন, ওরা বারবার বলছিল, এখানে আরও ক্রিকেট খেলা দেখতে চায় তারা।