ক্যারোলাইনায় আঘাত হেনেছে 'ফ্লোরেন্স'

হারিকেন ফ্লোরেন্স আঘাত হানার পর নিউ বার্ন শহরের অনেক বাড়িতে পানি উঠেছে। ছবি: রয়টার্স
হারিকেন ফ্লোরেন্স আঘাত হানার পর নিউ বার্ন শহরের অনেক বাড়িতে পানি উঠেছে। ছবি: রয়টার্স

আমেরিকার নর্থ ক্যারোলাইনা উপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফ্লোরেন্স’। ঘণ্টায় ৯০ মাইল (১৫০ কিলোমিটারের) বেগে আঘাত হানা এ ঝড়ে এরই মধ্যে উপকূলবর্তী অনেক মানুষ আটকা পড়েছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী দুর্গত অঞ্চল থেকে প্রায় ১০০ লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে পেরেছে উদ্ধারকর্মীরা। তবে এখনো অনেকে আটকা পড়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছে সিএনএন।

ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নর্থ ক্যারোলাইনা উপকূলের রাইটসভিলে আঘাত হানে ফ্লোরেন্স। বাতাসের তীব্র বেগ ও সমুদ্রের ১০ ফুটেরও বেশি উচ্চতার ঢেউ উপকূলবর্তী এলাকায় এরই মধ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। সঙ্গে রয়েছে এক নাগারে বৃষ্টি। ফ্লোরেন্সের প্রভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তিন দিনেই স্বাভাবিক সময়ে আট মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শক্তিশালী এ ঝড়ের প্রভাবে এরই মধ্যে শুধু নর্থ ক্যারোলাইনাতেই ৩ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে অঙ্গরাজ্যটির নিউ বার্ন শহরের কিছু অংশ এখন তিন মিটার পানির তলায় নিমজ্জিত। শহরটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত দেড় শ মানুষ আটকা পড়েছে।

ফ্লোরেন্সের প্রভাবে নর্থ ক্যারোলাইনার নিউ বার্ন শহরের অনেক এলাকার রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে। ছবি: রয়টার্স
ফ্লোরেন্সের প্রভাবে নর্থ ক্যারোলাইনার নিউ বার্ন শহরের অনেক এলাকার রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে। ছবি: রয়টার্স

নিউ বার্নের আটকা পড়া মানুষদের একজন পেগি পেরি। তিনি ও তাঁর তিন আত্মীয় নিজের বাড়িতে আটকা পড়েছেন। সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘চোখের পলকেই আমার ঘরে কোমর সমান পানির তলায় চলে গেল। এখন এ পানি বুক সমান উচ্চতায় উঠে গেছে।’
এর আগে আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল যে, ক্যাটাগরি-৩ মাত্রার শক্তিশালী ঝড় ফ্লোরেন্স আমেরিকার স্থানীয় সময় ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে নর্থ ক্যারোলাইনা উপকূলে আঘাত হানবে। ধেয়ে আসা এ ঝড়ের কারণে নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনার পাশাপাশি ভার্জিনিয়াতেও সতর্কতা জারি করা হয়। ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়। একই সময়ে ফ্লোরেন্সের কারণে অন্তত টানা এক দিন ভারী বর্ষণ হবে বলে জানিয়েছিল ক্যাটাগরি-১ হারিকেন সেন্টার।

অনুমিত সময়ের কাছাকাছি সময়েই নর্থ ক্যারোলাইনা উপকূলে আঘাত হানে ঝড়টি। সিএনএন জানায়, এরই মধ্যে নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনা অঞ্চল মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। নর্থ ক্যারোলাইনার জ্যাকসভিলের একটি হোটেলের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় কারও হতাহত হওয়ার খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
ফ্লোরেন্সের কারণে এরই মধ্যে পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের ১ হাজার ৩০০ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। তবে আশার কথা এই যে, শুরুতে ফ্লোরেন্সের যে শক্তি ছিল, ভূমির কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করেছে। তবে ধীরে এগিয়ে আসা ঝড় নিয়ে রয়েছে ভিন্ন আশঙ্কা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এ ধরনের ঝড়ের কারণে দীর্ঘস্থায়ী প্লাবনের আশঙ্কা বেশি থাকে।