কানাডার সম্মানসূচক নাগরিকত্ব হারালেন সু চি, পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। ছবি: রয়টার্স
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে দেওয়া কানাডার সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস করেছেন দেশটির এমপিরা। মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা নিপীড়ন বন্ধ করতে সু চি ব্যর্থ হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার কানাডার হাউস অব কমন্সে এই প্রস্তাব পাস করা হয়েছে।

মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করার স্বীকৃতি হিসেবে সু চিকে ১৯৯১ সালে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। ওই সময় মিয়ানমারে সামরিক শাসন ছিল।

গত মাসে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে গণহত্যার দায়ে দেশটির জেনারেলদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা উচিত। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর নিপীড়নে গত এক বছরে সাত লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, কানাডার হাউস অব কমন্সে এই প্রস্তাব পাস করার আগের দিন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পার্লামেন্টে বলেছিলেন, সু চিকে দেওয়া সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পুনর্বিবেচনার কথা ভাবা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শুধু এর মাধ্যমেই বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশ মিয়ানমারের লাখ লাখ সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের দুরবস্থা ঘুচবে না।

২০০৭ সালে কানাডা সু চিকে সম্মানসূচক এই নাগরিকত্ব দেয়। সু চিসহ ভিনদেশি ছয়জন দেশটির এই নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই একটি যৌথ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এ ধরনের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। নাগরিকত্ব বাতিল করতেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।

প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার লিবারেল এমপি এন্ড্রু লেসলি সাংবাদিকদের বলেন, এর পরের পদক্ষেপটি স্পষ্ট। এটি বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে যা যা করতে হবে, তা এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো করবে।

এই মাসের শুরুতে হাউস অব কমন্সে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

মিয়ানমারে গণতন্ত্র শুরু হওয়ার পর ২০১৫ সালে সু চি দেশটির উপদেষ্টা হন। তিনি এখন দেশটির প্রশাসনের প্রধান ব্যক্তি। রোহিঙ্গা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনে মিয়ানমার নৃশংস নিপীড়ন চালায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর। গত বছর এই অভিযানের পর সাত লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালায়। সেনাবাহিনীর এমন নৃশংস ঘটনার বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর জন্য সু চি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েন। তবে তিনি তা করতে অস্বীকৃতি জানান।

২০১৭ সালের এপ্রিলে বিবিসির সঙ্গে সবশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, সেখানে জাতিগত নিধন চলছে। আমি মনে করি, যা ঘটছে, সেটাকে জাতিগত নিধন বললে খুব কঠিনভাবে প্রকাশ করা হয়ে যায়।’