#মি টুর পাল্টা হিসেবে এল #হিম টু!

কিছুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ব্রেট কাভানি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত কাভানির নিয়োগ নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছিল যৌন হয়রানির অভিযোগ। কিন্তু শেষতক ট্রাম্পই জিতে যান। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে যোগ দেন কাভানি।

ঠিক এই ঘটনার সূত্র ধরেই মার্কিন মুলুকে নতুন আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে। এত দিন নারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনা প্রকাশ করেছেন #মি টু দিয়ে। এবার নতুন শব্দ নিয়ে হাজির হয়েছেন পুরুষেরা। যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগে ফেঁসে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে চালু হয়েছে #হিম টু!

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, যেদিন কাভানি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে শপথ নেন, সেদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন জনৈক পিটার হ্যানসনের মা। ৩২ বছর বয়সী ছেলের পক্ষ নিয়ে তিনি লেখেন, #মি টু-এর জোয়ারে এখন ডেটিংয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন পিটার! তিনি মনে করছেন, এতে করে যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগের শিকার হওয়ার আশঙ্কা আছে।

পিটার হ্যানসনের মা ওই অনলাইন পোস্টে লিখেছেন ‘#হিম টু’। অনলাইন পোস্টে নিজের সুদর্শন ছেলের একটি ছবিও দিয়েছেন তিনি। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ধারণা অমূলক নয় যে, #মি টু-এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবেই চালু হয়েছে #হিম টু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টটি খুব কম সময়ের মধ্যেই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন অনেকেই এ নিয়ে আলোচনা করছেন। কেউ কেউ আবার ঠাট্টা-মশকরাও করছেন।

তবে মায়ের দেওয়া #হিম টু-এর সঙ্গে পিটার হ্যানসন নিজেই দ্বিমত পোষণ করেছেন। পৃথক এক অনলাইন পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা যেসব মানুষকে ভালোবাসি, মাঝে মাঝে তাঁরা না বুঝেই এমন কিছু কাজ করে বসেন, যা আমাদের দুঃখ দেয়। আমি নারীদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস করি। আমি কখনোই #হিম টু-কে সমর্থন করি না এবং করবও না।’ পরে কিছু টিভি শোয়ে হাজির হয়েও একই কথা বলেছেন পিটার। ওই সময় তাঁর সঙ্গে ছোট ভাই জনও ছিল।

অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পিটার হ্যানসনের মতো নন। শুরু থেকেই #মি টু আন্দোলন নিয়ে মশকরা করছেন তিনি। কিছুদিন আগে ব্রেট কাভানির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা নারীকে নিয়েও ঠাট্টা করেছেন ট্রাম্প। তাঁর নিজের বিরুদ্ধেও যৌন হয়রানির কিছু অভিযোগ উঠেছে। তবে ট্রাম্প সবই অস্বীকার করেছেন। সম্প্রতি ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমেরিকার তরুণদের জন্য এটি খুবই আতঙ্কের সময়। যে কাজের জন্য আপনার নিজেকে অপরাধী মনে করার দরকার নেই, এখন সেটির জন্যও আপনাকে অপরাধী করা হতে পারে।’

অবশ্য পিটার হ্যানসনের মা #হিম টু আবিষ্কার করেননি। কাভানির নিয়োগ নিয়ে হই-হট্টগোলের সময়ই এর আবির্ভাব। মূলত কাভানির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা নারী ও তাঁর সমর্থকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষপ্রসূত #হিম টু। এ বিষয়ে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সামাজিক মনোবিজ্ঞানী ক্লারা উইলকিনস বলেন, ‘পুরুষেরা মনে করেন, নারীরা জিতলে তাঁরা হেরে যান।’ কিছু গবেষণালব্ধ তথ্যের বরাত দিয়ে ক্লারা মনে করেন, বর্তমানে মার্কিন পুরুষেরা আগের চেয়ে ঢের বেশি পক্ষপাতিত্ব করছেন। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প বলেছেন, কাভানি মিথ্যা অভিযোগের শিকার। ধারণাটি এখন পুরুষদের বদ্ধমূল বিশ্বাসে পরিণত হচ্ছে এবং এই হার আগের চেয়ে অনেক বেশি।’