অন্য আলোয় ফাতেমা তুজ জোহরা

ফাতেমা তুজ জোহরা
ফাতেমা তুজ জোহরা

আমরা সচরাচর সাধারণ মানুষের অসাধারণ হয়ে ওঠার বিরল গল্পগুলো শুনতে বা বলতে অনেক ভালোবাসি। দেখা যায় সেই অসাধারণ হয়ে ওঠা মানুষগুলো একসময় আকাশের তারার মতো হয়ে যায়। আকাশের তারা যেমন কেবল দূর থেকেই দেখা যায়, এসব মানুষও তেমনি হয়ে ওঠেন। তাদের কাছ থেকে একটু দেখা, তাদের ভালোবাসার ছোঁয়া পাওয়া, তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়া কেমন যেন আকাশকুসুম কল্পনার মতোই। বেশির ভাগ সময়ই সেই সব তারকা নিজেরাই সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে উঠতে নিজেদের সবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে তোলেন। ভাবেন, বেশি সাধারণ মানুষ থেকে যত দূরে থাকবেন, ততই তাঁদের সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বাড়বে। ততই মানুষ তাঁদের নিয়ে মাতামাতি করবে, তাঁদের নিয়ে আকাশকুসুম স্বপ্ন দেখবে। তা সে চিত্রতারকা, সংগীততারকা বা অন্য যে রাজ্যের তারকাই হোক না কেন। আজ সে রকম অসাধারণ একজন মানুষের সাধারণ জীবনের গল্প তুলে ধরব পাঠকদের জন্য।
একজন তারকাকে খুব কাছ থেকে দেখার, জানার আর ভালোবাসার সুযোগ হয়েছিল আমার। উজ্জ্বল শ্যামবর্ণের, মাঝারি উচ্চতার মিষ্টি একটি মেয়ে। ঈষৎ চাপা নাক, কমলার কোষের মতো ঠোঁট, হালকা ঢেউখেলানো চুল, পানপাতার মতো মুখ। আসলে এভাবে বললে তাঁর সৌন্দর্যর কথা কিছুই বলা হয় না। তিনি হাসলে তাঁর অসম্ভব সুন্দর চোখ দুটিও হেসে ওঠে। ঠোঁটে সব সময় লেগে থাকে চাপা কৌতুকময় মুচকি হাসি। এই মানুষটিকে বাংলাদেশের সবাই মোটামুটি নাম শুনলেই চিনতে পারবেন। তিনি বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা। যাঁকে ভালোবেসে ‘টগর আপু’ বলে ডাকার অধিকারটুকু তিনি আমায় দিয়েছেন।
সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা শুধু সংগীতে নয়, বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের গান নিয়ে গবেষণা ও বিস্তর লেখালেখি করেছেন, করছেন। এখানে তাঁর শিল্পীজীবন নয়, কয়েক দিনের জন্য আমার দেখা মানুষ ‘টগর আপা’কে নিয়ে বলব এখানে। অসাধারণ হয়েও যিনি খুব সাধারণ জীবনে অভ্যস্ত। একজন বিখ্যাত শিল্পীকে তাঁর নানা মানবিক রূপে খুব কাছ থেকে দেখার এবং জানার সুযোগ হয়েছিল। তাঁর স্ত্রী, কন্যা, বোন, নানি, বন্ধু এবং সর্বোপরি মাতৃরূপটি দেখেছিলাম। সাধারণ মানুষ টগরকে যতটা দেখেছি, তার চেয়ে একজন সংগীত পাগল মানুষকেই বেশি খুঁজে পেয়েছি তাঁর মধ্যে। সংসার, স্বামী, ছেলে, মেয়ে, ছেলের বউ, নাতনি—সবার সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের চিন্তা তাঁকে সদাই আচ্ছন্ন করে রাখে। তাঁদের সামান্য সমস্যাও অস্থির করে তোলে তাঁকে। সবকিছু, সব সমস্যা নিজের হাতে সমাধান করে সবাইকে ভালো রাখতে চান তিনি। তাই মোটেই সুরেলা নয় তাঁর ব্যক্তি জীবন। কিন্তু সেই অ–সুর আর সুরকে তিনি বিস্ময়করভাবে ব্যালেন্স করে চলেন। হাজারো সমস্যার ভিড়ে, অনায়াসেই সব ভুলে, তিনি হারিয়ে যেতে পারেন তাঁর সুরের ভুবনে। তাঁর সেই জীবন যেন কেবল সুর, তাল আর লয়ে বাঁধা। তিনি খুনসুটি করতে করতে, গল্প করতে করতে, আড্ডা দিতে দিতে কেবলই সুরের জগতে হারিয়ে যান। সেখানেই যেন তাঁকে খুব মানায়।
বাস্তব জীবনের ব্যস্ততা, রূঢ় বাস্তবতা, বঞ্চনা, ছলনা, মান-অভিমান তারকারাও এড়াতে পারেন না। তাঁদের জীবনও এই আমাদের মতো সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা নয়। বাস্তব জীবনে তাঁরাও কারও মা, বাবা, স্ত্রী, স্বামী, ভাই, বোন বা পুত্রকন্যা। তাঁদের প্রিয়জন বা কাছের মানুষের সুখ–দুঃখ, হতাশা–ব্যর্থতা তাঁদের জীবনেও ঝড় তোলে। তারাও ব্যথিত বা আনন্দিত হন। তাঁদের তারকা হওয়ার পেছনের সংগ্রাম এবং এই খ্যাতি ধরে রাখার চেষ্টাও অন্তহীন। কোনো কিছুই সহজলভ্য নয়। আমরা আমজনতা হয়তো দূর থেকে জ্বলজ্বলে তারাদের দেখি আর ভাবি—আহা, ওই আকাশে, ওই তারাদের জীবনে কতই না জানি সুখ। কিন্তু ওখানেও কৃষ্ণগহ্বর আছে, উল্কা আছে। আছে তারাদের খসে পড়া বা নতুন তারার জন্ম নেওয়ার নানা কাহিনি।
শিশুর মতোই কোমল, চঞ্চল মানুষটির ছেলেমানুষী, দুষ্টুমি দেখলে নিজের বয়সের কথা ভুলে যেতে হয়। শিশুর মতো কলকল করে কথা বলতে, হাসতে কজন পারে? একটি চিরশিশু যেন ঘুমিয়ে আছে এই মানুষটি মধ্যে। মাঝে মাঝে সে জেগে ওঠে, তখন আশপাশের মানুষের মনের গহিনে ঘুমন্ত শিশুকে তিনি জাগিয়ে তোলেন। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো তিনি বাঁশিতে ফুঁ দিলে আমরা সম্মোহিত হয়ে তার চারপাশে ঘুরঘুর করি। এমনি সম্মোহনের মধ্যেই যেন টগর আপুর সঙ্গে কেটে গেল দশটি দিন।
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার অফিসে বসে আড্ডা হচ্ছিল। গায়িকা বন্ধু মরিয়ম মারিয়ার কাছে শুনলাম, তিনি যাচ্ছেন ফাতেমা তুজ জোহরার সঙ্গে দেখা করতে। তিনি গ্র্যান্ড অ্যাভিনিউতে তবলা বাদক তপন মোদকের বাসায় আছেন। শুনে আমার মন চঞ্চল হলো। বললাম, আমিও যাব প্রিয় শিল্পীর সঙ্গে দেখা করতে। তাঁর সঙ্গে দেখা হলো। আমি আবার দ্বিতীয়বারের মতো তাঁকে দেখে মুগ্ধ হলাম। প্রথমবার তাঁকে দেখেছিলাম ইডেন কলেজে। আমাদের কলেজের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। তার ঘুমঘুম চোখ, মিষ্টি মিষ্টি হাসি আমাকে মুগ্ধ করেছিল। আমাদের সেই তরুণ বয়সে অনেকেরই শখ ছিল বিখ্যাত মানুষদের অটোগ্রাফ, ফটোগ্রাফ সংগ্রহ করা। আমারও সেই শখ ছিল।
ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর নববর্ষ উপলক্ষে ক্যালেন্ডার ও ডায়েরি বের করে। সম্মানিত গ্রাহকদের তারা সেগুলো বিলি করে। আব্বা ব্যাংকার হওয়ার সুবাদে একটি ডায়েরি বাগানো আমার আরেকটি শখ ছিল। সেই সময় সুদৃশ্য গদিওয়ালা মলাটের একটি ডায়েরি নিজের সম্পত্তি হিসেবে পাওয়াও আমাদের কাছে ছিল বড় রকমের বিলাসিতা। আমাদের ছয় বোনের মধ্যে সেই সম্পত্তির বিলি–বণ্টন নিয়ে প্রচুর কাড়াকাড়ি হতো। এরকম একটি ডায়েরিকে আমি আমার অটোগ্রাফ সংগ্রহ খাতা হিসেবে ব্যবহার করতাম। ততদিনে আমার সেই ডায়েরিতে অভিনেতা গোলাম মোস্তফা, ফেরদৌসী মজুমদারসহ গায়িকা সাবিহা মাহবুব, কাদেরি কিবরিয়া, সাবিনা ইয়াসমিনের অটোগ্রাফে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল। সেদিন সুযোগ পেয়েই ফাতেমা তুজ জোহরার অটোগ্রাফ নিয়েছিলাম। তিনি লিখেছিলেন, ‘শেলী, তোমার সুন্দর জীবন কামনা করছি’। বহুদিন সেই ডায়েরি আমার কাছে সযত্নে রক্ষিত ছিল। কিন্তু পরে কালের পরিক্রমায় কবে, কোথায় সেই অটোগ্রাফ খাতা হারিয়ে গেছে—তা আর মনেও নেই।
সেই রাতে ফাতেমা আপু আর মারিয়ার সঙ্গে কেমন করে যেন আমিও ভিড়ে গেলাম। তপন মোদকের বাসা থেকে আমরা গেলাম লোয়ার ম্যানহাটনে। মারিয়ার বন্ধু হালিমার বাসায়। হাডসন রিভারের পাশে তার দুকামরার বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে। হালিমা লটারি জিতে স্বল্প ভাড়ায় ম্যানহাটনের মতো দামি জায়গায় এই অ্যাপার্টমেন্টটি পেয়েছে। সেই জোছনা ভরা রাতে আমরা হাডসন নদীর পাড়ে পার্কে বসে অনেক গল্প করলাম, ছবি তুললাম। হালিমার রান্না করা সুস্বাদু বিরিয়ানি খেয়ে আমরা গেলাম অ্যাপার্টমেন্টের ছাদে। সেই সুসজ্জিত ছাদ আমাদের মুগ্ধ করল। জোছনায় ভেসে যাওয়া রাত, বারো তলার ওপর থেকে দেখা নিচে হাডসনের নয়নাভিরাম দৃশ্য, আম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, ম্যানহাটন আর ব্রুকলিন ব্রিজের আলো আমাদের অভিভূত করে তুলেছিল। ছাদের ওপর কাঠের গদিওয়ালা সোফায় শুয়ে শুয়ে ফাতেমা আর মারিয়া আপন মনে গেয়ে যাচ্ছে একের পর এক গান। আহা, কী বিস্ময়কর আর মধুর সেই স্মৃতি। খালি গলায় প্রিয় শিল্পীদের গান শোনার সুযোগ আর আনন্দের কোনো তুলনা হয় না।
গল্পে গল্পে অনেক রাত হল। টগর আপু আর মারিয়ার ফিরতে দেরি হয়ে গেল বলে তারা আমার বসায় এলেন রাত কাটাতে। সেই যে এলেন, আর তাদের ফেরা হলো না। দুই গানের পাখিই রয়ে গেল আমার নিকুঞ্জে। গানে গানে তারা মাতালেন আমার ঘর। এই যুগেও এই নিউইয়র্ক শহরেই আমরা বাস করছি একটি একান্নবর্তী পরিবারে। আমার দুই ছেলে আর স্বামীর সংসারে এখন যোগ হয়েছে মা, ভাই, বোন আর বোনের ছেলেমেয়ে। মাঝে যোগ হয়েছিল দেশ থেকে বেড়াতে আসা ছোট বোন শামীম। সুতরাং আমরা একাই হলাম এক শ। তার ওপর অতিথি এলে তো কথাই নেই। হইহই কাণ্ড, রইরই ব্যাপার, আবার তাঁরা যদি হন গায়িকা!
শিল্পী ফাতেমা অনেক আগে থেকেই আমাদের সবার প্রিয় গায়িকা। সুতরাং তাঁকে আমাদের মাঝে পেয়ে সবাই আনন্দিত, আপ্লুত। আমার স্বামীর সঙ্গে পরিচিত হয়ে টগর আপু বলেছিলেন, ‘ইস্‌ শেলী, তোমার বরকে দেখেই আমার স্বামীর কথা মনে পড়ে গেলরে। দুজন মনে হচ্ছে একই রকমের মানুষ।’
কথাবার্তায় জানলাম, টগর আপু আর আমার স্বামী দুজনই সমবয়সী। একই বছর তাঁদের জন্ম, তারা ইয়ারমেট। আপু দুষ্টুমি করে বলতেন, ‘এই মেয়ে শোন, আমার বন্ধুকে আদর–যত্ন করো ঠিকমতো। এমন নিরীহ ঠান্ডা মানুষটাকে কখনো কষ্ট দিওনা’। আমার স্বামী মানুষটি রোবটের মতোই সময় মেনে চলেন। তার রাতের খাবার, ঘুম আর সকালে ঘুম থেকে ওঠা—সবই সময়মত হওয়া চাই। এহেন মানুষও রাত জেগে জেগে টগর আপু আর মারিয়ার গান শুনতে শুরু করলেন। আমার মাকে জড়িয়ে ধরে টগর আপুর দুচোখ জলে ভরে উঠেছিল, নিজের হারিয়ে যাওয়া মায়ের মুখটি মনে করে। এমনি নরম আর কোমল তাঁর মন।
আমাদের রাত কাটতে লাগল গানে গানে আর আড্ডায়। কিছুক্ষণ গান হয়, কিছুক্ষণ আড্ডা চলে। মাঝরাতেও ধূমায়িত চা বা কফির ট্রে হাতে শামীম আমাদের আড্ডাকে আরও উসকে দিত। এই কদিন আমরা ঘুমাতে যেতাম ভোর রাতে। সকালের ব্রেকফাস্ট করতাম অপরাহ্ণে। জীবন পুরাই উল্টাপাল্টা। আমার লেখালেখি শিকেয় উঠল। একুশের বইমেলায় প্রকাশিতব্য আমার উপন্যাস ‘এক মোহনার জীবন’ অসমাপ্ত পড়ে রইল। টগর আপু বা মারিয়ার প্রোগ্রামগুলোতে আমরা বোনরাও দল বেঁধে যাচ্ছি। তাদের শপিং, ভক্তের দাওয়াত, স্থানীয় বাংলাদেশি টেলিভিশন চ্যানেলে রেকর্ডিং বা শুটিং—সব জায়গায় আমিও যথারীতি ছিলাম তাঁদের সঙ্গে। এভাবেই একটা ঘোরের মাঝে কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো।
এমন একজন বিখ্যাত শিল্পী আমার ঘরে ছিলেন, কিন্তু তাঁর জন্য একটু বিশেষ খাবারদাবারের আয়োজন করারও সুযোগ হয়নি আমার। আমার ঘরোয়া রান্না তিনি আগ্রহ নিয়ে খেয়েছেন। রান্নাঘরেও তিনি আমায় সঙ্গ দিতেন। আমি রান্না করতাম, তিনি ডাইনিং টেবিলের চেয়ারে পা তুলে বসে গল্প করতেন। মাঝে মাঝে উঠে এসে বলতেন, ‘শেলী, আমাকে দাও তো। এই মাছটা আমি রান্না করে দিই। সবজিটা বা ভর্তাটা আমার রেসিপিতে করি। তোমরা খেয়ে দেখ।’ টগর আপুর রান্না করা কাজলি মাছ, অ্যাভোকডো ভর্তার স্বাদ আজও মুখে লেগে আছে। মাঝে মাঝে আমি ভুলেই যেতাম, তিনি আমার অতিথি, একজন জনপ্রিয় গায়িকা। মনে হতো, বহুকাল ধরে তাঁকে চিনি। তিনি আমাদেরই একজন। এত সাধারণ, এত অমায়িক একজন মানুষ তিনি।
আমাদের রাতের আড্ডার গল্প শুনে আমার ছোট বোন ইতি একদিন নর্দান বুলেবার্ড থেকে চলে এল। সেও দুরাত কাটিয়ে গেল। গল্প আর কৌতুকে আসর মাতালেন টগর আপু। আমাদের দর্শক শ্রোতাদের হাসতে হাসতে পেটে খিল লেগে গেল। আমি হলফ করে বলতে পারি, তিনি গায়িকা না হলে হতে পারতেন স্বনামধন্য কৌতুক শিল্পীও। তাঁকে যারা কাছে থেকে দেখেছেন বা তাঁর ঘরের মানুষেরা নিশ্চয়ই সবাই তার এই অপূর্ব গুণটির সঙ্গে পরিচিত। টগর আপুর সান্নিধ্যে এমনি নির্মল আনন্দ আর হাস্যরসে কেটে গেছে আমার জীবনের স্মরণীয় এই কটি দিন। ধন্যবাদ টগর আপু! এমন বিরল আনন্দ দেওয়ার জন্য। দীর্ঘদিন আনন্দময়ী হয়ে বেঁচে থাকো আমাদের মাঝে।
টগর আপু চলে গেলেন ভার্জিনিয়ায় নজরুল সম্মেলনে যোগ দিতে। তারপর ফিরে গেলেন কানাডায়, মেয়ের কাছে। সেখান থেকে দেশে। কখনোই কুশলাদি নিতে ভোলেন না। মেসেঞ্জারে ফোন করেন। আমরা সুখ–দুঃখের কথা বলি। তিনি আমার লেখালেখির খোঁজ নেন। মজার মজার ভিডিও শেয়ার করেন। আমি দেখে থাম্পস আপ দিই। তার মেসেঞ্জারে সবুজ বাতি জ্বলতে দেখলেই প্রশ্ন করি, ‘আপু কি কর?’ তিনিও আমার উপস্থিতি না দেখলে খোঁজ করেন।’ স্ক্রিনে তার লেখা দেখি, ‘কই গেলা? কী কর?’
টগর আপু, আমার এই লেখা পড়লে তুমি কী ভাববে জানি না। অনেক ব্যক্তিগত কথা শেয়ার করার লোভ সামলানো গেল লা। তবুও বলব, ‘আপু, তুমি সারা জীবন এমনি থেকো। বড় হওয়া তোমাকে মানাবে না। এমনি কিশোরীর সরলতায় ভরা মুখ, এমনি হাসি হাসি চোখ, কৌতুকপ্রিয় মুচকি হাসি। এটাই তোমাকে বড় মানায়। তোমার জন্য আমার ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা আজীবন