দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মাহবুব কি থেমে যাবে?

সহপাঠীদের সঙ্গে মাহবুবুর রহমান
সহপাঠীদের সঙ্গে মাহবুবুর রহমান

জন্মান্ধ হয়েও মাহবুবুর রহমান রনি বিশেষ মেধা বৃত্তি পেয়ে বোস্টন কলেজে মাস্টার্স অব এডুকেশনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় আসেন। জীবনের শুরু থেকে অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরেই তিনি আজকের এ অবস্থানে পৌঁছেছেন। কিন্তু এখন এই অভিযাত্রায় ছেদ পড়ার উপক্রম হয়েছে। নিজের পুরো কোর্সের ব্যয় বহন করা তাঁর পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ মাহবুবের মেধার পরিচয় পেয়ে বিষয়ভিত্তিক বৃত্তি প্রদানে সম্মত হয়েছে। কিন্তু এটি তাঁর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।
অন্ধদের শিক্ষা প্রদান বিষয়ে নিজেকে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে গড়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমেরিকায় এসেছিলেন মাহবুব। কারণ নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই মাহবুব জানেন বাংলাদেশে অন্ধদের শিক্ষাদানে বিশেষজ্ঞের অভাব খুবই প্রকট। ইতিমধ্যেই মাহবুব পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নামকরা কলেজে অধ্যয়ন করে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। এর মধ্যে নরওয়ের ইউনিভার্সিটি অব অসলোতে তিনি সমাপ্ত করে এসেছেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য শিক্ষা পদ্ধতি ও দর্শন নিয়ে মাস্টার্স করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ইংরেজির স্নাতক।
আর্থিক কষ্ট, বইপত্রের অপ্রতুলতা, কোনো কিছুই দমিয়ে রাখতে পারেনি মাহবুবুর রহমানকে। মৌলভীবাজারের এই মেধাবী এখন আমেরিকায় এসেছেন নিজের মেধার পরিচয় রেখেই। তাঁর লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের অন্ধ শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে তোলায় অবদান রাখা। বাংলাদেশ ও এর সমাজের জন্য কাজ করাই তাঁর লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পূরণের পথেই তিনি বোস্টন কলেজে ভর্তি হয়েছেন। এখন আর্থিক সংকট তাঁর পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় মাহবুবের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বোস্টন কলেজে দুই বছরের কোর্সে মোট টিউশন ফি আসে প্রায় ৪২ হাজার ডলার। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কম বেশি ২০ হাজার ডলারের বৃত্তি দেবে বলে নিশ্চিত করেছে। বাকি ২২ হাজার ডলার জোগাড় করতে পারলে মেধাবী মাহবুব বিশেষায়িত শিক্ষাদানে যে বিশেষজ্ঞ জ্ঞান অর্জন করবেন, তা বাংলাদেশেরই কাজে লাগবে। বর্তমানে মাহবুবুর রহমান সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। মাহবুবকে সহায়তা করতে চাইলে তাঁর ফোন নম্বর ১ (৯২৯) ৪৬২-২৯৩৩-এ ফোন করে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।