ট্রাম্পের আইনজীবীকে অর্থ দিতে হবে স্টর্মির
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলায় পর্নো তারকা স্টর্মি ডেনিয়েলসকে প্রায় তিন লাখ ডলার গুনতে হবে। ট্রাম্পের আইনজীবীদের এই অর্থ দিতে ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতের এক বিচারক স্টর্মি ও তাঁর আইনজীবীকে এই নির্দেশ দিয়েছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে স্টর্মি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
মামলার শুনানিকালে গত সপ্তাহে ট্রাম্পের আইনজীবী চার্লস হার্ডার আদালতে এই পর্নো তারকার কাছে প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার চান। এর মধ্যে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ডলার আইনজীবীর ফি বাবদ আর ৩ লাখ ৮৯ হাজার ডলার অন্যান্য খরচ বাবদ। শুনানি শেষে আদালত ২ লাখ ৯৩ হাজার ডলার পরিশোধ করার জন্য স্টর্মিকে নির্দেশ দেন।
এক বিবৃতিতে আদালতের এ আদেশকে প্রেসিডেন্টের বিজয় বলে মন্তব্য করেছেন চার্লস হার্ডার।
প্রকৃত নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড হলেও স্টর্মি ডেনিয়েলস নামে পরিচিত এই পর্নো তারকার হয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন লস অ্যাঞ্জেলেসের আইনজীবী মাইকেল অ্যাভেনাত্তি। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘নীরব থাকার যে চুক্তি’ ট্রাম্পের সঙ্গে স্টেফানির হয়েছিল, তা মূলত অকার্যকর। কারণ, এতে ট্রাম্প সই করেননি।
মার্কিন সাময়িকী ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করে, ২০০৬ সালে স্টর্মির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন ট্রাম্প। তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একজন ধনকুবের। ওই ঘটনার চার মাস আগে বর্তমান ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প তাঁর ছেলে ব্যারনের জন্ম দেন। স্টর্মির মুখ বন্ধ রাখতে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাস আগে ট্রাম্প তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন। পরে স্টর্মিকে অর্থ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও এর সঙ্গে ট্রাম্প বা তাঁর প্রচারণা দলের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের আইনজীবী মাইকেল কোহেন।
স্টর্মি প্রথম মামলায় অভিযোগ করেন, ২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলে প্রার্থিতার লড়াইয়ে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর যখন একের পর এক নারী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনছিলেন, স্টর্মি তখনই মুখ খুলতে চেয়েছিলেন। এ সময় আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে স্টর্মির মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্প উদ্যোগী হন বলে মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার সুপিরিয়র কোর্টের সিলমোহর রয়েছে এই নথিতে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্পের নির্দেশে কোহেন মুখ বন্ধ রাখার চুক্তির খসড়া প্রস্তুত করেন। এই খসড়ায় এসেনশিয়াল কনসালট্যান্টস এলএলসি নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে স্টর্মির নীরবতার বিনিময়ে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। মামলায় এই চুক্তির একটি কপিও সংযুক্তি হিসেবে দিয়েছেন স্টর্মি। তাঁর নথিতে এই পর্নো তারকা আরও বলেন, এসেনশিয়াল কনসালট্যান্টসের সঙ্গে চুক্তিতে ডেভিড ডেনিসন ও পেগি পিটারসন ছদ্মনামে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প ও স্টর্মি।
ট্রাম্প এসব অভিযোগ অস্বীকার করলে স্টর্মির পক্ষ থেকে একটি মানহানির মামলা করা হয়। সেই মামলাতেই আদালত ট্রাম্পের আইনজীবীকে অর্থ দিতে স্টর্মির প্রতি নির্দেশ দেন।