ট্রাম্পের 'নোংরা কাজে' অনুতপ্ত কোহেন

মাইকেল কোহেন।। ছবি: রয়টার্স
মাইকেল কোহেন।। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন মাইকেল কোহেন। ট্রাম্পের সাবেক এই ব্যক্তিগত আইনজীবী ছিলেন তাঁর সব ধরনের কর্মের সাক্ষী। একসময় কোহেন গর্ব করে বলতেন, ট্রাম্পের জন্য গুলি বুক পেতে নিতে প্রস্তুত তিনি। পাশার দান যেমন উল্টে যায়, কোহেনও এখন তেমনি ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর। ফাঁদে পড়ে ট্রাম্পের ‘নোংরা কাজের’ ফিরিস্তি দেন আদালতে।

গতকাল বুধবার আইন লঙ্ঘনের দায়ে মাইকেল কোহেনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন নিউইয়র্কের আদালত। মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য দেন দুই মাসের কারাদণ্ড। কারাদণ্ড ছাড়াও কোহেনের ২০ কোটি ডলার জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডাদেশের পর ট্রাম্পের ‘নোংরা কাজের’ কঠোর সমালোচনা করেন কোহেন।

ট্রাম্পের দ্বারা অপমানিত এই আইনজীবী বিচারপতি উইলিয়াম পাওলিকে বলেন, ট্রাম্পের কারণে আলোর বদলে অন্ধকারের পথ অনুসরণ করেছিলেন তিনি। তিনি বলেন, তাঁর দুর্বলতা ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আনুগত্য। তিনি অনুভব করেছিলেন যে তাঁর ‘নোংরা কাজগুলো’ ধামাচাপা দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

ট্রাম্পের হয়ে বিভিন্ন কাজে মধ্যস্থতাকারীও ছিলেন কোহেন। তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ দণ্ড পান কোহেন। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে কোহেনই প্রথম, যিনি কারাদণ্ড পেলেন। কোহেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে অর্থ দিয়ে দুই নারীর মুখ বন্ধ করা, রাশিয়ায় প্রস্তাবিত ট্রাম্প টাওয়ার প্রজেক্ট নিয়ে কংগ্রেসকে মিথ্যা বলা এবং কর ফাঁকি দেওয়া। এসব অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন কোহেন। এর আগে কোহেন দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশেই এসব কাজ করেছেন তিনি।

রায় ঘোষণার সময় ম্যানহাটনে ডিস্ট্রিক্ট জজ উইলিয়াম পলি বলেন, দুই সাজাই একই সঙ্গে ভোগ করবেন কোহেন। বিচারক কোহেনকে আগামী বছরের ৬ মার্চের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

আদালতে কোহেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে নিউইয়র্কে সরকারি কৌঁসুলিরা বলেছিলেন, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দেন এবং সাবেক প্লেবয় মডেল ক্যারেন ম্যাকডোগালকে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার দিতে সহায়তা করেন। ট্রাম্পের সঙ্গে পূর্বসম্পর্কের বিষয়ে ওই দুই নারীর মুখ বন্ধ রাখতে কোহেন ওই কাজ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য ওই দুই নারীর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।