১৯১০ সালের পর সবচেয়ে কম মৃত্যু

নিউইয়র্ক নগরের সড়ক ব্যবস্থাপনা উন্নত হয়েছে। টানা পাঁচ বছর ধরে কমছে শহরটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার। গত বছর সড়ক দুর্ঘটনা কমার ক্ষেত্রে রীতিমতো রেকর্ড করেছে এই নগর।

নগর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে নিউইয়র্ক নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ২০০ জনের। ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ২২১ জন নিহত হয়েছিল। ১৯১০ সালের পর নিউইয়র্ক নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় এত কম মানুষের মৃত্যু আর হয়নি।
সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমার বিষয়টিকে বড় অর্জন হিসেবে দেখছে নগর কর্তৃপক্ষ। নগর প্রশাসনের তথ্যমতে, ২০১৪ সালে বর্তমান মেয়র বিল ডি ব্লাজিও প্রথম মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমছে। বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২০১৩ সালে মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে ৩০ শতাংশ কম। বিল ডি ব্লাজিও মেয়র পদে বসেই সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে ‘ভিশন জিরো’ ঘোষণা করেন। অর্থাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নেন তিনি। তাঁর এ উদ্যোগ যে সাফল্যের পথেই হাঁটছে, তা ২০১৮ সালের অর্জনই তা বলে দিচ্ছে।
পিক্স ১১-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, মেয়র ব্লাজিও তাঁর ‘ভিশন জিরো’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে নগরজুড়ে গতিরোধক বসান। এ ছাড়া আইন প্রয়োগের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাঁর প্রশাসন একই সঙ্গে নতুন বাইক লেন চালুর পাশাপাশি সড়কের পুনর্বিন্যাসও করে। এই সার্বিক উদ্যোগের কারণে সড়কে প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা রোধে অনেকখানি সফল হয়েছে নগর প্রশাসন।
তবে এখনো অনেক কিছু অর্জন বাকি আছে। কারণ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও পথচারী মৃত্যুর হার বেড়েছে। গত বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২০০ জনের ১১৪ জনই ছিলেন পথচারী। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ১০৭। গত বছর পথচারী মৃত্যুর ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ছিল দুই শিশুর মৃত্যু। এক ও চার বছর বয়সী দুই শিশু তাদের মায়ের হাত ধরে ঘুরতে বেরিয়েছিল। কিন্তু একটি গাড়ি তাদের চাপা দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু হলেও তাদের মায়েরা বেঁচে যান।
সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কিত পরামর্শকদের মতে, নিউইয়র্ক নগরের সড়কগুলোকে পুনর্বিন্যস্ত করে সড়কগুলোকে আরও নিরাপদ করা সম্ভব। কিন্তু এ সম্পর্কিত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অনেক ধীর হয়ে গেছে। এই প্রকল্পের গতি বাড়িয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করে সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।