প্রথম আলো উত্তরের নকশার বর্ষপূর্তিতে প্রাণের উচ্ছ্বাস

দেশের মতো প্রথম আলো প্রবাসেও নানা বৈচিত্র্যে পাঠকের চাহিদা পূরণ করে আসছে। এক বছরের মধ্যেই উত্তর আমেরিকায় প্রথম আলো বাঙালিদের আকৃষ্ট করেছে নানা বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে। উদ্যম আর সৃষ্টিশীলতায় প্রথম আলো দেশের মতো প্রবাসেও এগিয়ে যাক। 

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার মাসিক সংযোজন ‘উত্তরের নকশা’র প্রথম বর্ষপূর্তিতে এমন কথাই উচ্চারিত হয়েছে বারবার। জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজা মিলনায়তনে চমৎকার সাজে সেজে এসেছিলেন প্রত্যেকে। অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয় ঘরে বানানো মুখরোচক সব খাবার। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রথম আলো’র একটি জনপ্রিয় বিভাগ ‘নকশা’। তারই অনুসরণে উত্তর আমেরিকার মানুষের জীবন যাপন, খাবার, ফ্যাশন নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘উত্তরের নকশা’। স্বতন্ত্র এই পাতা এক বছরেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে যাত্রা শুরু হয় এই বিভাগটির। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে উত্তরের নকশার এক বছর পূর্তিতে আয়োজন করা হয় এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের। উত্তরের নকশার লেখক, মডেল, রান্নার রেসিপি পাঠিয়েছেন যাঁরা, যাঁদের সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে—মূলত তাঁদের নিয়েই ছিল অনুষ্ঠান। পাশাপাশি সাপ্তাহিক উত্তর আমেরিকা প্রথম আলোর সুহৃদরাও ছিলেন এই আয়োজনে।

১০ জানুয়ারি কর্মদিবস সত্ত্বেও আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল আশা জাগানিয়া। নিউইয়র্ক শহরের নানা প্রান্ত থেকে, এমনকি লং আইল্যান্ড থেকেও এসেছেন কয়েকজন। সব মিলিয়ে অনেক দিন মনে রাখার মতো অনুষ্ঠান ছিল এটি।
অনেকটা ঘরোয়া ভাবে বৈঠকি মেজাজে মাইক্রোফোন ছাড়া অনুষ্ঠান শুরু হয়। ফলে প্রত্যেকের অনুভূতি প্রকাশ ছিল আন্তরিকতায় পূর্ণ। ছিল প্রাণের উচ্ছ্বাস। তাহরিনা পারভিন প্রীতির চমৎকার উপস্থাপনায় পুরো অনুষ্ঠান ছিল একদম টান টান। আহম্মেদ হোসেন বাবুর কণ্ঠে নাজিম হিকমতের কবিতা ‘জেলখানার চিঠি’ দিয়ে শুরু হয় আড্ডা পর্ব। এরপর উত্তর আমেরিকা প্রথম আলোর লেখকদের লেখালেখি নিয়ে কথা বলেন প্রাবন্ধিক ও লেখক আহমাদ মাযহার। এরপর একে একে সবাই তাঁদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। সিনিয়র সাংবাদিক মাহাবুবুর রহমান, অভিনেতা টনি ডায়েস, কবি শামস আল মমীন, কমিউনিটি কর্মী রুবাইয়া রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, অভিনেতা ও উপস্থাপক খাইরুল ইসলাম পাখী, অভিনেত্রী রেখা আহমেদ, নৃত্যশিল্পী প্রিয়া ডায়েস, উত্তরের নকশার প্রথম সংখ্যার দুই লেখক রিমি রুম্মান ও পলি শাহীনা, কবি সৈয়দ আহমেদ জুয়েদ, প্রাবন্ধিক শামসাদ হুসাম, লেখক আবদুশ শহীদ, আবৃত্তিকার শুক্লা রায়, সাংবাদিক আকবার হায়দার কিরন, কবি রওশন হাসান, মডেল মনিকা হক, কমিউনিটি কর্মী রুপা খানম, লেখক নাসরিন চৌধুরী, লেখক সোনিয়া কাদের, আবৃত্তিকার গোপন সাহা, সংস্কৃতিকর্মী মিনহাজ আহমেদ, কবি শিমু আফরোজা, অভিনেত্রী শিরীন বকুল ও প্যাট্রিক রোজারিও কথা বলেন। সংক্ষিপ্ত অনুভূতি প্রকাশে প্রত্যেকেই উত্তরের নকশার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত পুলিশ অফিসার ও জন কে কলেজের অধ্যাপক ড. রাজু ভৌমিকের এই দিন ছিল জন্মদিন। তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।


উত্তর আমেরিকা প্রথম আলোর আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী ও উত্তরে নকশার বিভাগীয় প্রধান মনিজা রহমান উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। এরপর ছিল নিউইয়র্কের নামকরা শিল্পীদের সংগীত পরিবেশনা। গান গেয়ে শোনান জেরিন মাঈশা, অধরা, ক্রিস্টিনা লিপি রোজারিও, শাহ মাহবুব ও সুতপা মন্ডল। শেষে ছিল অনুষ্ঠানের মূল চমক। সেরা সাজ ও সেরা রেসিপি বিভাগে চারজনকে পুরস্কৃত করা হয়। সেরা সাজের পুরস্কার পান মাকসুদা আহমেদ, শাম্মী আক্তার হ্যাপি, লুবনা কাইজার ও কামরুন্নাহার ডলি। সেরা সাজের বিচারক ছিলেন রেখা আহমেদ, শামসাদ হুসাম ও রুখশান আরা। সেরা রেসিপির পুরস্কার জেতেন জান্নাতারা বেগম, মাজেদা লুবনা, মিথিলা শারমীন ও স্মৃতি ভদ্র। বিচারক ছিলেন ইশতিয়াক রূপু আহমেদ ও মুন্তাকিম বিল্লাহ তুষার।


অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন হেলিম আহমেদ, মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক, সানজিদা উর্মী, রওশন হক, শেলী জামান খান, এইচ বি রিতা। উপস্থিত ছিলেন শাহানা বেগম, তামান্না মজুমদার কিম, ছন্দা খান, অনিক রহমান, লুসি হাসান, জেকে অরণী গুনগুন, শিউলি আতিক, ইয়াসমিন হোসেন, সন্ধি খান, মাসুম আহমেদ, স্বপ্নকুমার, আরিফ মাহমুদ শৈবাল, মইনুল হিরা, ফজলুর রহমান, নুসরাত এলিন, জেবুন্নেসা জোৎস্নাসহ অনেকে। ছবি তুলেছেন নিহার সিদ্দীকি ও শাহ জে চৌধুরী। কেক কেটে ও ডিনার পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।