সৌদি তরুণীর জন্য নিরাপত্তারক্ষী

কানাডার টরন্টোয় পৌঁছানোর পর গত শনিবার সৌদি তরুণী রাহাফকে স্বাগত জানান কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। ছবি: রয়টার্স
কানাডার টরন্টোয় পৌঁছানোর পর গত শনিবার সৌদি তরুণী রাহাফকে স্বাগত জানান কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। ছবি: রয়টার্স

বাড়ি থেকে পালানো সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুনের জন্য নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। কানাডায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়ের পাওয়ার ক্ষেত্রে রাহাফের জন্য কর্মরত কস্টি নামের প্রতিষ্ঠান ওই নিরাপত্তারক্ষী ভাড়া করেছে।

আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মারিও কালা গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাহাফকে অনলাইনে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাই নিরাপত্তাঝুঁকির আশঙ্কায় রাহাফের জন্য রক্ষী নেওয়া হয়েছে। তিনি স্বাভাবিক জীবন শুরু করেছেন। এখন যে তিনি ‘কখনো একা নন’—এটা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তারক্ষী রাখা হয়েছে।

৭ জানুয়ারি ১৮ বছর বয়সী সৌদি তরুণী রাহাফের বাড়িপালানোর ঘটনা আলোড়ন তোলে আন্তর্জাতিক মহলে। রাহাফের পরিবারের অনেক সদস্য কুয়েতে থাকেন। রাহাফ বাড়ি থেকে পালিয়ে কুয়েত থেকে থাইল্যান্ড হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছিলেন। থাইল্যান্ডের ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থেকে তাঁকে কুয়েতে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয় থাই কর্তৃপক্ষ। তবে যে হোটেলে তাঁকে রাখা হয়, সেখানের কক্ষে নিজেকে তালাবদ্ধ রাখেন রাহাফ। একের পর এক টুইটে জানান, তিনি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন। পরিবারের কাছে ফেরত পাঠালে তাঁকে মেরে ফেলা হবে।

পরে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার অনুরোধে কানাডা রাহাফকে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়। গত শনিবার তিনি কানাডায় পৌঁছান।

গতকাল রাহাফ টরোন্টোতে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সাবা আব্বাস নামের একজন বিবৃতিটি ইংরেজিতে পড়ে শোনান।

লিখিত বিবৃতিতে রাহাফ বলেন, ‘আমি জানি, বিশ্বের প্রতিটি মানুষ আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং তাঁরা জানতে চান—আমি এখন কী করছি। আমি এখানে কানাডার অন্য সব তরুণীর মতো স্বাভাবিক স্বাধীন জীবন শুরু করেছি।’

কানাডায় পৌঁছাতে পারার জন্য রাহাফ কানাডীয় সরকার ও থাই সরকার এবং জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভাগ্যবানদের একজন। আমি জানি, অনেক অভাগা নারী পালানোর চেষ্টা করার জন্য হারিয়ে গেছেন অথবা নিজেদের বাস্তবতা পরিবর্তনের জন্য কিছুই করতে পারেননি।’

রাহাফকে এমন এক সময় কানাডা আশ্রয় দিয়েছে, যখন দুই দেশের সম্পর্কে তিক্ততা বিরাজ করছে। গত বছর সৌদি আরব কয়েকজন নারী অধিকারকর্মীকে কারাবন্দী করলে কানাডা তাঁদের মুক্তির দাবি করেছিল। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সৌদি আরব কানাডার সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে এবং কানাডা থেকে তাদের অনেক শিক্ষার্থীকে সৌদি আরবে ফিরে যেতে বাধ্য করে।

তাই শনিবার বিমানবন্দরে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের নিজে গিয়ে রাহাফকে স্বাগত জানানোর ঘটনা সৌদি আরবকে আরও ক্ষুব্ধ করেছে বলে মনে করছেন সমালোচকেরা।

এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গতকাল সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তিনি সেটাই করেছেন, যা নিজের মেয়ের জন্য করতেন।

আরও পড়ুন: