ট্রাম্পের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে পেলোসি নারাজ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ বছরের ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে রাজি নন কংগ্রেসের ডেমোক্রেটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ বছরের ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে রাজি নন কংগ্রেসের ডেমোক্রেটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। ছবি: রয়টার্স
>
  • ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণের আমন্ত্রণ যাচ্ছে না
  • ভাবতেও পারেননি ট্রাম্প
  • চালে জিতে গেলেন পেলোসি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ বছরের ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের ডেমোক্রেটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। ২৯ জানুয়ারি তাঁর এই ভাষণ দেওয়ার কথা। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার এক চিঠিতে ট্রাম্পকে পেলোসি জানিয়েছেন, ফেডারেল সরকারে অচলাবস্থার কারণে হাজার হাজার নিরাপত্তাকর্মী বেতন ছাড়া ঘরে বসে আছেন। এই অবস্থায় প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রিপরিষদ, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও কংগ্রেসের উভয় কক্ষের সদস্যদের নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কাজেই অচলাবস্থা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই ভাষণ মুলতবি থাক।

পেলোসি অবশ্য ট্রাম্পকে অন্য ব্যবস্থার কথাও বলেছেন। তিনি চাইলে এই ভাষণ লিখিত আকারে বিলি করতে পারেন অথবা হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বসে ভাষণ দিতে পারেন। ১৯১৩ সালের আগ পর্যন্ত এই ভাষণ লিখিত আকারে দেওয়ার রীতি প্রচলিত ছিল।

ট্রাম্প অথবা হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা ভাবতেও পারেননি, ভাষণ বাতিল হতে পারে। জানা গেছে, ট্রাম্পের ভাষণ লিখিয়েরা সীমান্তে নিরাপত্তা ও মেক্সিকোর সঙ্গে দেয়াল নির্মাণের যৌক্তিকতার ওপর জোর দিয়ে ট্রাম্পের ভাষণের খসড়া লিখে শেষ করেছেন। এখন কী করা হবে, ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউস ঠিক করে ওঠেনি।

যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের সামনে প্রতিবছর স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ দেওয়া দীর্ঘদিনের রীতি। কিন্তু স্পিকার ভাষণের জন্য প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণপত্র পাঠান। এবারে সে আমন্ত্রণ যাচ্ছে না বলেই মনে হয়।

এ নিয়ে ট্রাম্প নিজে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে রিপাবলিকান নেতাদের অনেকেই পেলোসির সিদ্ধান্তকে ক্ষতিকর রাজনীতি মনে করছেন। এটি রাজনীতি, তাতে কোনো ভুল নেই। এটা স্পষ্ট, এই রাজনীতিতে ট্রাম্পের চেয়ে এক কদম এগিয়ে রয়েছেন পেলোসি।

ওয়াশিংটন পোস্ট মন্তব্য করেছে, খেলোয়াড় হিসেবে ট্রাম্পের তুলনায় পেলোসি অনেক বুদ্ধিমান। একজন রিপাবলিকান কর্তাব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, পয়সা ছুড়ে মারলে তার ‘হেড’ বা ‘টেইল’ যেটাই পড়ুক, উভয় ক্ষেত্রেই পেলোসি জিতছেন।

ফেডারেলে অচলাবস্থার ২৬তম দিনে ট্রাম্পকে ভাষণে আমন্ত্রণ না করার সিদ্ধান্ত হয়। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়ালের জন্য ট্রাম্পের অর্থ দাবি প্রশ্নে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই তাদের অবস্থান থেকে সরেনি। পিউ রিসার্চের জনমত জরিপ বলছে, রিপাবলিকানদের ৬৩ শতাংশ এবং ডেমোক্র্যাটদের ৮৪ শতাংশ দেয়াল প্রশ্নে কোনো রকম আপসের বিরোধী। সম্ভবত নিজেদের সমর্থকদের থেকে হারানোর কিছু নেই ভেবেই ট্রাম্প অথবা ডেমোক্রেটিক নেতারা মত বদলানোর কোনো তাগিদ পাচ্ছেন না।

ডেমোক্র্যাট নেতারা বলছেন, সীমান্ত নিরাপত্তা প্রশ্নে আলাপ-আলোচনা হবে, কিন্তু তার আগে সরকারের কাজকর্ম শুরু করতে হবে।

কোনো কোনো রিপাবলিকান সিনেটর এই প্রস্তাব সমর্থন করেন। কিন্তু ট্রাম্পের আপত্তির কারণে এই প্রস্তাব নিয়ে এগোতে পারছেন না। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম তিন সপ্তাহের জন্য সরকারের কাজ উন্মুক্ত করে সেই সময়ে দেয়াল প্রশ্নে আলোচনার প্রস্তাব রেখেছেন। আরেক রিপাবলিকান সিনেটর জন কেনেডি তাঁর সেই প্রস্তাবের জবাবে বলেছেন, ‘কবে এই প্রস্তাব গৃহীত হবে জানো? যেদিন তোমার জানালা দিয়ে দেখবে গাধারা উড়তে শিখেছে।’