পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে জনসেবার শপথ

জর্জিয়া সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শেখ রহমানকে শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন
জর্জিয়া সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শেখ রহমানকে শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন

আমেরিকার জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটে প্রথম নির্বাচিত বাংলাদেশি-আমেরিকান সিনেটর শেখ রহমান শপথ নিয়েছেন। ১৪ জানুয়ারি স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে জর্জিয়া স্টেট সিনেট হাউসে পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে তিনি শপথ নেন। শপথ পাঠ করান জর্জিয়া সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চার্লস বেথেল।
শপথ গ্রহণের আগে একজন ইমাম পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়াসহ বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে স্ব স্ব ধর্মীয় স্কলাররা বিশেষ অংশ পাঠ করে শোনান।
আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ডিসট্রিক্ট-৫-এ ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়নে স্টেট সিনেটর নির্বাচিত হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শেখ রহমান। এর আগে প্রার্থমিক বাছাই পর্বের নির্বাচনে এই আসনে তিনি ৩৪ হাজার ১৫৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। এই আসনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির কার্ট থমসন। কার্ট থমসন পেয়েছিলেন ১ হাজার ৮৮৫ ভোট। 

জর্জিয়ার ইতিহাসে শেখ রহমানই প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশি যিনি জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটে যাওয়ার গৌরব অর্জন করলেন।
রিপাবলিকানদের রাজ্য জর্জিয়ায় প্রথম নির্বাচিত বাংলাদেশি আমেরিকান সিনেটর শেখ মোজাহিদুর রহমান চন্দন ওরফে শেখ রহমান কিশোরগঞ্জের সন্তান। তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে শেখ রহমানের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার বা অ্যাসালের ন্যাশনাল কমিটির সেক্রেটারি এম করিম চৌধুরী, অ্যাসাল জর্জিয়া চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী হোসেনসহ বাংলাদেশি কমিউনিটির অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেখ রহমান
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেখ রহমান

শপথ গ্রহণ শেষে শেখ রহমান প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে বলেন, ‘জর্জিয়ার প্রথম মুসলিম ও একমাত্র বাংলাদেশি-আমেরিকান হিসেবে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটর হতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি। কিন্তু আমি সবার প্রতিনিধি। নির্বাচনী প্রচারণায় একজন অভিবাসী হিসেবেই নিজেকে তুলে ধরেছি। কেননা অন্য অভিবাসীদের মতোই আমি এখানে এসেছি। সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালনে সবার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।’
শেখ রহমান বলেন, ‘আমি একজন অভিবাসী হিসেবে প্রচারণা চালাই, আমার মনে কখনোই আসেনি যে, মানুষ প্রথম মুসলিম হিসেবে আমাকে পক্ষে ভোট দেবে। আমি গর্বিত, জর্জিয়ার মানুষের সমর্থনে প্রথম মুসলিম আইন প্রণেতা হতে পেরে।’
এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সিনেটর বলেন, ‘এ দেশে আসা অন্য অভিবাসীদের মতো আমিও একজন জর্জিয়ান। আমি গর্বিত মুসলিম, কিন্তু আমি সবাইকে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি। কারণ, আমি আমার ধর্মকে এখানে রাজনীতি থেকে আলাদা রাখতে চাই।’
শেখ রহমান বলেন, একটি গ্রামীণ অঙ্গরাজ্য হিসেবে জর্জিয়ার খ্যাতি আছে...। কিন্তু আমি জর্জিয়াকে একটি প্রগতিশীল অঙ্গরাজ্য মনে করি। তারপরও বলব, জর্জিয়া অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের তুলনায় অনেক ভালো। আমি এই অঙ্গরাজ্যের সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি এলাকার প্রতিনিধিত্ব করব। এ জন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।’