পর্যটন ভিসায় এসে সবচেয়ে বেশি অবৈধ

অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। যদিও হালের তথ্য বলছে, আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসীর অধিকাংশই মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে আসছে না। পর্যটন ভিসা নিয়ে আমেরিকায় আসা লোকজনও ভিসার মেয়াদের পর এদেশে থেকে যাচ্ছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৭ সালে আমেরিকায় পর্যটন ভিসায় আসা প্রায় সাত লাখ লোক ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও এ দেশে থেকে গেছে। এর মধ্যে প্রায় ছয় লাখ বছর শেষেও আমেরিকা ছেড়ে যায়নি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেয়াল নির্মাণে অটল অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার আংশিক বন্ধ করে রেখেছেন। কিন্তু পরিসংখান বলছে ভিন্ন কথা। বিগত কয়েক মাসে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে আমেরিকায় আশ্রয়প্রার্থী হাজার হাজার অভিবাসীর যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে, কাগজপত্রবিহীন অবৈধ অভিবাসীরা আসলেই সেদিক দিয়ে নিয়মিত প্রবেশ করছে না। তথ্য বলছে, বেশির ভাগ অবৈধ অভিবাসী তিজুয়ানা সীমান্ত দিয়ে এ দেশে প্রবেশ করেনি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য জানান দিচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প তাঁর কেন্দ্রীয় সরকারে অচলাবস্থার ২০তম দিবসে ১০ জানুয়ারি সফর করেন মেক্সিকো সীমান্তবর্তী ম্যাকএলেন শহর। আমেরিকায় অনুপ্রবেশকারীরা মেক্সিকো সীমান্তবর্তী ম্যাকএলেন শহর বা টেক্সাস দিয়েও ঢুকে না—অন্তত রেকর্ড এমন তথ্যই দিচ্ছে।
যেসব মানুষ আমেরিকায় আসে, তাদের বেশির ভাগ আইনসম্মতভাবেই এসে থাকে। এর অধিকাংশই ভিসার মেয়াদের পর থেকে যাওয়ার ফলে তারা কাগজপত্রবিহীন অবৈধ অভিবাসী হয়ে যায়। এই অবৈধ অভিবাসীর বেশির ভাগ অংশই মেক্সিকোর সীমান্ত অতিক্রম করে প্রবেশ করে না। একই বছরে পরিসংখ্যান অনুযায়ী দক্ষিণ সীমান্তে (ম্যাক্সিকোর ভূখণ্ডে) তিন লাখ বিদেশি নাগরিক মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তার হাতে ধরা পড়েছে। যারা ধরা পড়ছে তাদের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসার অভিবাসীর সংখ্যাই বেশি। তাই তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা হচ্ছে, সীমান্ত দেয়াল টপকে আসা অভিবাসীর এখানে সংখ্যা অনেক কম।
ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের সংখ্যা বেড়েছে। যদিও হোয়াইট হাউসের এক সাম্প্রতিক ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, যেসব এলাকায় দেয়াল বা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে—সেসব এলাকায় সীমান্ত অতিক্রমের হার ৯০ শতাংশ কমে যাচ্ছে।
টেক্সাসের বিভিন্ন সীমান্তে এর মধ্যে কাঁটাতারের বেষ্টনী আছে, কোথাও আছে অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা। দক্ষিণ আমেরিকায় রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার লোকজন সীমান্তে এসে আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করছে। আশপাশের দেশে নিগ্রহের শিকার এসব আশ্রয়প্রার্থী লোকজন শুধু শরণার্থী বলে নাগরিক সংগঠনগুলো মনে করে। এদের দেয়াল দিয়ে ঠেকানোর কথা বলছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
আমেরিকার নাগরিকদের মধ্যে অভিবাসীভীতি সঞ্চার করে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেয়াল নির্মাণ নিয়ে হাঁকডাক দিচ্ছেন। বিশেজ্ঞরা বলছেন, যে সমর্থক গোষ্ঠীকে উসকে দিয়ে ট্রাম্প নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাদের সন্তুষ্ট করেই তিনি পুনর্নির্বাচিত হতেই এমনটি করছেন। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য আমেরিকায় জরুরি অবস্থাও জারি করতে পারেন বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।