আদালতের রায়ের দিকে সবার দৃষ্টি

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন নিয়ে আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে উত্তর আমেরিকার বসবাসকারী ২৭ হাজার ভোটার। দুই প্রার্থীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় নির্বাচন অনুষ্ঠান স্থগিত হয়ে যায়। আদালতে ইতিমধ্যে কয়েক দফা শুনানি হয়েছে। দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের পর চূড়ান্ত রায়ের কার্যতালিকায় রয়েছে মামলাটি।
প্রবাসে বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন আবার হবে কি না, এ নিয়ে নিউইয়র্কের পাঁচ বোরোতে ভোটারদের মধ্যে তুমুল আলোচনা চলছে। নির্বাচন আদৌ হবে কি না, তাও নিয়ে চলছে কানাঘুষা। তবে শিগগিরই চূড়ান্ত রায় আসবে বলে ভোটাররা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রবাসে বাংলাদেশিদের জনপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ২১ অক্টোবর। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের তিনদিন আগে ১৮ অক্টোবর আদালতের নির্দেশে হঠাৎ নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের যাচাই–বাছাইয়ে বাদ পড়া দুই সদস্য আকবর আলী ও জেড আলম লিটু বাদী হয়ে জ্যামাইকায় অবস্থিত সুপ্রিম কোর্ট সাটফিন ব্লুবার্ডে মামলা করেন। সেই মামলায় পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্বাচন স্থগিত করে।

কেন নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দুই প্রার্থী বাদ দেওয়া হয়েছে মর্মে আদালতে আপিল করা হয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়। আদালতের নির্দেশে আবার তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে দুই প্রার্থীর প্যানেল নয়ন-আলী পরিষদ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। নয়ন-আলী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন বলেন, ‘নির্বাচন হওয়া না হওয়া এবং দুই প্রার্থীর ভবিষ্যৎ এখন আদালতের ওপরই নির্ভর করছে। তবে আমরা আশা করি আদালত শিগগিরই চূড়ান্ত রায় দেবেন।’
সোসাইটি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন স্থগিত হওয়ার কারণে সোসাইটির বিভিন্ন স্তরে হাজার হাজার ডলার খরচ হয়ে গেছে। নির্বাচনের কেন্দ্র বুকিং, জনবল নিয়োগ, মেশিন ভাড়াসহ যাবতীয় বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ভাড়ায় চুক্তি করেন। এতে খরচ হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ। কিন্তু এসব ডলার সংগঠনের সাধারণ সদস্যদের। অহেতুক মামলার গ্যাঁড়াকলে পড়ে অর্থব্যয়ের বিষয়টি এখন সবার মুখে মুখে। এসব ডলার সোসাইটির কোষাগারে থাকলে নিঃসন্দেহে সংগঠনের বড় কোনো উন্নয়নে খরচ করা যেতো বলে সচেতন মহল মনে করেন। কিন্তু মামলার কারণে তা আর সম্ভব হবে না। কিন্তু এ দায় কার, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আদালতের রায়ে মামলা স্থগিত হওয়ার পর নয়ন-আলী ও রব–রুহুল প্যানেলের প্রার্থীদের গণসংযোগ কিছুদিন থেমে থাকলেও আবার তারা মাঠে নেমেছেন। দিন–রাত তারা ভোটারদের সমর্থন আদায়ে ব্যস্ত। তারা মনে করেন, আদালতের রায়ে শিগগিরই আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই তারা গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ ছাড়া নির্বাচন স্থগিত হওয়া নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ এবং আপত্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দায়ী করছেন। আবার কেউ কেউ নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করছেন। এ নিয়ে উভয় প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হচ্ছে মাঝেমধ্যে।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে কী হবে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন। আদালতের নির্দেশে আবারও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমন আশা করছেন ভোটাররা। সোসাইটি ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, চলতি জানুয়ারি মাসেই আদালতের চূড়ান্ত রায় আসতে পারে।