আমাকে খুঁজতে

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

বাইরে লোক পাঠিয়েছি
আমাকে খুঁজতে
বললাম, যত টাকা লাগে খুঁজে আনো তাকে
সকাল গেল, সন্ধ্যা হলো আঁধার কেটে আলো এল
আমাকে কেউ নিয়ে এল না।
বললাম, লাশ কাটা ঘরে খোঁজ নিয়েছ?
হাসপাতাল, পুলিশ ফাঁড়ি, জেলখানা কিংবা চৌরাস্তার মোড়ের ওই ড্রেনের ধারে
প্রায়ই তো দেখি চাদরে ঢাকা কেউ একজন শুয়ে থাকে
মাঝে মাঝে কুকুর এসে তাকে শুঁকে যায়
কিংবা কবরস্থানে, ওখানেও তো অনেকে শুয়ে আছে, থাকে,
কেউ কেউ বেঁচে থেকেও যে ঘুমিয়ে পড়ে
কিংবা শ্মশানের ধূলিতে
মানুষের গন্ধ তো কখনো ফুরায় না।

আমাকে খুঁজতে অসংখ্য লোক বের হয়েছে
রেল-বাস স্টেশন, পতিতালয়, রেস্তোরাঁ, বাড়ির ছাদে
মিটিং, মিছিল, সিনেমা হলে
কী আশ্চর্য, আমি কোথাও নেই, কোথাও।

শেষমেশ নিজেই বের হলাম নিজেকে খুঁজতে
সন্ধ্যা হয় হয়, রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের বাতি তখনো জ্বলে ওঠেনি
হঠাৎ বুড়ো হয়ে যাওয়া ফেরিওয়ালার কাছে জানতে চাইলাম কাউকে কি দেখেছে সে
না, না, না সবাই তো আগের লোক, নতুন কিছু নেই
তবে শুনেছে এলাকায় নাকি নতুন পাগল এসেছে
বড় রাস্তার ড্রেনের ধারে তার আস্তানা
আমি দ্রুত সেদিকে এগিয়ে যাই
সন্ধ্যার অন্ধকারে পাগল উল্টোমুখে বসা
নোংরা কুপির আলোতে ধোঁয়াশা চারদিক
অসময়ে পেছনে তার ছায়া পড়ে লম্বাটে
আমি খুব সতর্ক হয়ে তাকে জানতে চাই
আলতো করে কাঁধ স্পর্শ করি
পাগল দ্রুত মুখ ঘোরায়, আমি চিৎকার দিয়ে সরে যাই
না, না, না এ কী এতো আমি, এতো আমার মুখ
আমি কী করে এখানে এলাম, কী করে পাগল হলাম।
...

জামাল সৈয়দ: মিনেসোটা, যুক্তরাষ্ট্র।
ইমেইল: <[email protected]>