কাব্যিক কথনে কানাডীয় 'ইলাস্ট্রেশন'

গ্রন্থে ‘ইলাস্ট্রেশন’ বা অলংকরণ সংযুক্ত করার সংস্কৃতির চর্চা শুরু হয়েছে প্রাচীন ইউরোপ থেকে। তখনকার দিনে বাইবেলের কাহিনির মর্মার্থ অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে অন্য ধর্মের অনুসারীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো শিল্পীর আঁকা ছবির সাহায্যে। মধ্যযুগে একটি ধারণা খুব প্রবল ছিল; কোনো বার্তা কারও নয়নের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হলে, সেই বার্তা অনায়াসে পৌঁছে যায় তাঁর আত্মার পরিমণ্ডলে। তাই, হাজার বছর আগের কবি-সাহিত্যিকেরা তাঁদের ভাব ও বক্তব্যকে পাঠকের কাছে সহজবোধ্য করে তোলার জন্য আশ্রয় নিতেন চিত্রকরের রং ও কারুকাজে। কালের পরিক্রমায় রং ও বর্ণমালা হয়ে ওঠে পরস্পরের পরিজন। পরিণয়সম বন্ধনে তুলি ও কলম ক্রমশ নিমগ্ন হতে থাকে সহবাসের ইন্দ্রজালে।
১৮৬৫ সালে প্রকাশিত বিশ্বখ্যাত ম্যাকমিলান কোম্পানির উপন্যাস লিউইস ক্যারল (১৮৩২-১৮৯৮) রচিত ‘অ্যালিস’স অ্যাডভেঞ্চার ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’কে উদাহরণ হিসেবে আমরা দেখতে পারি। অ্যালিস নামের মেয়েটি কীভাবে একদিন এক খরগোশকে অনুসরণ করতে করতে সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে পৌঁছে যায় এক রাজা আর রানির ‘ওয়ান্ডারল্যান্ড’ নামের রহস্যময় এক দেশে। এই ‘ওয়ান্ডারল্যান্ড’ থেকে অ্যালিসের প্রত্যাবর্তনের কাহিনি নিয়েই গড়ে উঠেছে ‘অ্যালিস’স অ্যাডভেঞ্চার ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ উপন্যাস। উপন্যাসটি প্রকাশের পরপরই উঠে আসে সর্বাধিক বিক্রিত গ্রন্থের (১৮৬৬) তালিকায় এবং লেখকের চাইতেও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এই গ্রন্থের চিত্রশিল্পী ইংরেজ ইলাস্ট্রেটর ও রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট স্যার জন টেনিয়েল (১৮২০-১৯১৪), যিনি তাঁর অলংকরণে কিশোরী অ্যালিসকে জাগিয়ে রেখেছিলেন অসাধারণ পরাবাস্তবতা আর বিষণ্নতার উদ্ভাসে। উপন্যাসের পাতায় পাতায় তাঁর রং আর কারুকাজের মাদকতায় পাঠক সেদিন নির্ঘুম সময় অতিক্রম করে মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলেন ‘ওয়ান্ডারল্যান্ড’ থেকে।
একজন চিত্রশিল্পীর নিজস্ব প্রতিবোধন কীভাবে পাঠকের প্রতিভারস মাত্রাকে প্রভাবিত করে তাঁর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ১৯২২ সালে প্রকাশিত আইরিশ লেখক জেমস জয়েসের (১৮৮২-১৯৪১) একটি আঠারো অধ্যায়ের উপন্যাস ‘ইউলিসিস’, যার কাহিনি গড়ে উঠেছে নায়কের জীবনের একটিমাত্র দিনকে অবলম্বন করে। নায়কের সারা দিনের কর্মযজ্ঞ উপন্যাসের পাতায় হয়ে উঠেছে লেখকের চেতনা যজ্ঞ। চৈতন্য বর্ণনার অনবদ্য প্রয়োগ, অভিনব গদ্যশৈলী, চরিত্রায়ন ও অসাধারণ রসবোধ উপন্যাসটিকে শতাব্দীর আধুনিক ‘সেরা শত উপন্যাসের সেরা’ হিসেবে স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। উপন্যাসটি এখন পড়ানো হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের কোর্সের অংশ হিসেবে।
এই আইরিশ গ্রন্থটি প্যারিসের প্রকাশক সিলভিয়া বিচ বাজারে নিয়ে আসেন লেখকের ৪০তম জন্মদিনে (০২ ফেব্রুয়ারি ১৯২২)। ইংরেজি ভাষায় রচিত জনপ্রিয় এই উপন্যাসটি ১৯২৯ সালে ফরাসি ভাষায় অনূদিত হলে ১৯৩৫ সালে ফ্রান্সের বিখ্যাত চিত্রকর হেনরি ম্যাটিসের (১৮৬৯-১৯৫৪) অলংকরণে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। এক হাজার কপির বিশেষ এই সংখ্যার একটি বিশেষত্ব ছিল; দুশো পঞ্চাশ কপিতে চিত্রকর ও ঔপন্যাসিক দুজনের স্বাক্ষর ছিল। অবশিষ্ট সাত শ পঞ্চাশ কপিতে চিত্রকর ম্যাটিস একাই সই করেছিলেন। বর্তমান বাজারে চামড়া দিয়ে বাঁধাই করা এই ঐতিহাসিক বইগুলো কেউ হাতছাড়া করলেই বিক্রি হচ্ছে সাত থেকে আট হাজার মার্কিন ডলারে। বাইশ ক্যারেট স্বর্ণের ‘ইউলিসিস’ ফলক, ফ্যাব্রিক কাগজ, সোনালি বর্ডার, সাটিন কাপড়ের পেইজ মার্কার আর লেদার বাইন্ডিং- সব মিলিয়ে নকশা ও বর্ণমালার সমাহারে অনন্য শিল্পপণ্যের উদ্ভাস নিয়ে একটি এপিক সাম্রাজ্যের পত্তন হয়েছে ‘ইউলিসিস’-এর সীমানা জুড়ে।
কাব্যক্ষেত্রে এই ধরনের একটি ব্যতিক্রমী প্রয়াসে প্রথম অসাধারণ যে কর্মটি সম্পাদিত হয়েছিল, সেটি হচ্ছে বিংশ শতাব্দীর একেবারে শুরুতে ফরাসি গীতিকবি পল ভার্লেইনের (১৮৪৪-১৮৯৬) ‘প্যারালেলমেন্ট’ কাব্যের পশ্চাতপট পরিক্রমণে ফরাসি চিত্রকর পিয়েরে বনার্ডের (১৮৬৭-১৯৪৭) তুলির ব্যবহার। সাহিত্যে আধুনিক যুগের শুরুতে কালার লিথোগ্রাফির ফরাসি গুরু অগাস্ট ক্লটের (১৮৫৮-১৯৩৬) ছাপাখানায় পাথরে খোদাই করা নকশা দিয়ে সম্পাদিত এমন একটি সৃজনশীল কর্মযজ্ঞের সাক্ষী হতে পারেননি ‘ফরাসি কাব্যের যুবরাজ’ খ্যাত পল ভার্লেইন। কারণ, ‘প্যারালেলমেন্ট’ কাব্যগ্রন্থটি ১৮৮৯ সালে প্রকাশিত হলেও, ফ্রান্সের প্রখ্যাত চিত্র ব্যবসায়ী অ্যামব্রইস ভলার্ডের (১৮৬৬-১৯৩৯) উদ্যোগে ভার্লেইনকাব্যের পাতায় পাতায় বনার্ডের রং-তুলির কারুকাজের এই পর্বটি প্রতিপাদিত হয়েছিল ১৯০০ সালে, কবির প্রয়াণের চার বছর পর।
মদ ও একাধিক নারীতে আসক্ত এই কবি, প্রাবন্ধিক, গাল্পিক ও জীবনীকার মাত্র বায়ান্ন বছর বয়সে প্রয়াত হন। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত নষ্ট জীবনের আলোকে যৌনতা ও ধর্মচারিতাকে সমান্তরাল রেখায় টেনে নিয়ে গেছেন ভিন্ন দুটি জীবনধারার মধ্যে আনুরুপ্যের সন্ধানে। এমন একটি সাহসী বীক্ষণকে কবিতার ভাষায় প্রকাশ করতে গিয়ে কবি সৃষ্টি করেছিলেন কাব্যিক নান্দনিকতা ও রহস্যের ইন্দ্রজাল। কবির মৃত্যুর পর চিত্রকর বনার্ড এক শ নয়টি লিথোগ্রাফিক ডিজাইনে গোলাপি রঙের বাহারে উন্মুক্ত করেছেন কবির সৃষ্ট সেই দুর্বোধ্যতা তথা রহস্যের পর্দা। চিত্রশিল্পী বনার্ডের আঁকা ছবি এক নতুন ভার্লেইনকে তুলে ধরল পাঠকের মনন ভূমে। বর্ণ ও চিত্রের দ্বৈত অস্তিত্ব সংযুক্ত হলো একটি মহাপ্রাণে; পঞ্চ ধাপে অনুরণিত হলো সুরের ঐকতান নতুন শতাব্দীর প্রাণ ভূমে।
এই ধরনের আরেকটি কালজয়ী ঘটনা ঘটেছে কানাডায় মার্গারেট অ্যাটউডের (জন্ম ১৯৩৯) ‘দ্য ইলাস্ট্রেটেড জার্নালস অব সুজানা মুডি’ গ্রন্থটিকে কেন্দ্র করে। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত অ্যাটউডের ক্ল্যাসিক এই কাব্যগ্রন্থটি একজন ব্রিটিশ কানাডীয় সুজানা মুডিকে (১৮০৩-১৮৮৫) নিয়েই। ব্রিটেনের একটি মধ্যবিত্ত পড়ুয়া পরিবার থেকে এসে ১৮৩২ সালে তিনি অভিবাসিত হয়েছিলেন কানাডায়। ১৮৫২ সালে লন্ডন থেকে এবং ১৮৭১ সালে টরন্টো থেকে প্রকাশিত সুজানা তাঁর ‘রাফিং ইট ইন দ্য বুশ’ গ্রন্থে কানাডার প্রত্যন্ত অঞ্চল তথা জঙ্গল জীবনে বেঁচে থাকার কাহিনিকেই জীবন্ত করে তুলেছেন। গ্রন্থটির কিছু অংশ একজন অভিবাসীর আত্মজীবনী, কিছু অংশ উপন্যাসের আকারে এবং কিছু অংশ ঐতিহাসিক। মুডির অভিবাসী জীবনের অভিজ্ঞতালব্ধ এই দর্শন পরবর্তীকালে অ্যাটউডকে নানানভাবে প্রভাবিত ও প্রণোদিত করে। এই গ্রন্থের প্রতিটি পাতায় অ্যাটউড উপলব্ধি করেছেন নানান বৈরিতার বিপরীতে কীভাবে বুনন দিতে হয় একটি লড়াকু প্রাণের পরিবেষ্টনে, অবলোকন করেছেন এই লড়াইয়ের ইতিকথাকে কীভাবে গর্ভজাত করতে হয় কাগজ ও কলমের সঙ্গমকলার নানান চাতুর্য দিয়ে।
গ্রন্থটিতে তিনটি জার্নাল আছে। একটি হচ্ছে জার্নাল ওয়ান (১৮৩২-১৮৪০), যেখানে রয়েছে কানাডায় সুজানার অভিবাস যাপনের প্রথম আট বছরের জঙ্গল জীবনের কথা। বেলবিলে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করা থেকে ১৮৬৯ সালে স্বামী ডানবারের মৃত্যুর পর বড় বোন ক্যাথরিনের বাড়িতে অন্য জীবন শুরুর সময়কাল নিয়ে তৈরি হয়েছে জার্নাল টু (১৮৪১-১৮৭০)। জার্নাল থ্রি (১৮৭০-১৯৬৯) থেকে উচ্চারিত হয়েছে একজন প্রয়াত সুজানার কণ্ঠস্বর, যেখানে তিনি বিংশ শতাব্দীর কানাডা সম্পর্কে আগাম বার্তা সঞ্চালন করেছেন অ্যাটউডের টাইপ রাইটারের মাধ্যমে।
মার্গারেট অ্যাটউড ও সমকালীন কানাডার অন্যতম সেরা চিত্রকর, একজন ‘অফিসার অব দ্য অর্ডার অব কানাডা’, চার্লস প্যাকটারের (জন্ম ১৯৪২) দ্বৈত গ্রন্থনায় এবং এই চিত্রকরের নান্দনিক ও মননদৃপ্ত ইলাস্ট্রেশনে সমৃদ্ধ হয়ে বইটি পুনঃ প্রকাশিত হয় প্রথম প্রকাশের সাতাশ বছর পর ১৯৯৭ সালে।
একজন সাহিত্যশিল্পীর চৈতন্য যজ্ঞ আরেকজন চিত্রশিল্পীর প্রতিবোধননৈপুণ্যে পাঠকের দরবারে কত উচ্চমাত্রার উদ্ভাসনে উন্মোচিত হতে পারে, ১৬” x ৩০” সাইজের রেশমি পর্দার ব্যবহারে হ্যান্ডমেশিনে মুদ্রিত দ্বৈত গ্রন্থনার লিথোগ্রাফজাত এই প্রকাশনাটি বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে একটি বিরল উদাহরণ। গ্রন্থটি ১৯৭০ সালে প্রকাশিত হলেও প্যাকটার তার একটি পাণ্ডুলিপি অ্যাটউডের কাছ থেকে পেয়েছিলেন ১৯৬৮ সালে। তারপর, ১১ বছর ধরে সময় নিয়ে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি এই অসাধারণ সাতাশটি কবিতার অন্তর্নিহিত বার্তা অনুধাবন করেছেন, লিথোগ্রাফির কাজ করেছেন। নিজ বাড়িতে পুরোনো কাপড় দিয়ে নিজ হাতে কাগজ বানিয়েছেন। অর্থাভাবে এগোতে সময় লেগেছে। পাথরে খোদাই করা কবিতা ও ছবির নকশার নমুনা দেখিয়ে ছয় হাজার ডলার অনুদানের জন্য আবেদন করলে ‘দ্য কানাডা কাউন্সিল’ কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে তিনি ঋণের টাকায় ১৯৮০ সালে নয় মাস একটানা সময় নিয়ে হাতমেশিন দিয়ে এই জার্নালের এক শ বিশ কপির বক্স সংস্করণের কাজ সম্পন্ন করেন। প্রতি কপি বক্স কাব্যে সাতাশটি কবিতা অবস্থান নিয়েছে সাতাশটি স্বতন্ত্র ক্যানভাসে। এই ইলাস্ট্রেটেড বক্স কাব্যগুলো এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন পাঠক ও প্রতিষ্ঠানের আর্কাইভে। আজকের বাজারে, যদি কেউ বিক্রি করেন, এই ইলাস্ট্রেটেড জার্নালের এক কপির মূল্য চৌদ্দ হাজার কানাডীয় ডলার। উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালে প্রকাশিত ‘ইলাস্ট্রেশন’বিহীন অ্যাটউডের এই কাব্যগ্রন্থটির মূল্য ছিল মাত্র এক ডলার পঁচানব্বই সেন্ট।
প্যাকটার-অ্যাটউডের এই যৌথ প্রকল্পটি অনেকটা আধুনিক যুগের পৌরাণিক কাহিনির মতো মনে হয়। একজন আঁকিয়ে, অপরজন লিখিয়ে। একজনের রং, আরেকজনের অক্ষর। কারও তুলি, কারও কলম। কেউ সরিয়ে দেন রহস্যের পর্দা, কেউ তৈরি করেন রহস্যের ইন্দ্রজাল। দুজনের প্রচেষ্টায় জেগে ওঠে অখণ্ড কানাডার জাতীয় পরিচয়ঃ ঊদ্বর্তনের ইতিহাসে একটি কানাডীয় অধ্যায়। একটি কবিকণ্ঠ নিনাদিত হয় একজন শিল্পীর চিত্র পল্লবে। অনুভবক্ষম পাঠক কান পেতে শুনতে পান ভিন্ন দুটি স্বর অভিন্ন মেজাজে একই তীব্রতায়; উপলব্ধি করেন সুজানার দিবসগাথায় কানাডীয় জীবনের ঊর্ধ্বতন।
জার্নাল টু-এর শেষ কবিতার নাম ‘দ্য ডাবল ভয়েস’। মার্গারেট তাঁর এই কবিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন সুজানার স্বাভাবিক জীবনাচার আর সংবেদনশীলতার মধ্যে একটি কাব্যিক সংঘাত। আর শিল্পী প্যাকটার কবিতাটিকে ভাগ করে অধিষ্ঠিত করেছেন পাশাপাশি দুটো পৃষ্ঠায়। দুচোখের দৃষ্টির তাড়নায় দুটি কণ্ঠস্বরকে তিনি ধারণ করেছেন ভিন্ন দুটি রেকর্ডে। এই যেন একটি লালিত সত্তার অপ্রত্যাশিত দ্বিবিভাজন। একটি প্রকাশিত ও শ্রুত; অপরটি অপ্রকাশিত ও অশ্রুত। প্রথম কণ্ঠস্বরকে তিনি ধারণ করিয়েছেন বাম পৃষ্ঠায় কবিতার শিরোনাম ও প্রথম আট লাইন দিয়ে গোছানো একটি জলরঙের শৈল্পিক অবয়বকে দিয়ে; এই কণ্ঠস্বরে বিলেতী কন্যা সুজানার হয়তো একটি কাব্যিক প্রত্যাশা ছিল। ডান দিকের পৃষ্ঠায় কবিতার অবশিষ্ট সতেরো লাইন দিয়ে শিল্পী প্যাকটার নির্মাণ করেছেন কানাডীয় অভিবাসী সুজানার একটি অস্পষ্ট অসম্পূর্ণ মস্তকস্তম্ভ, যেটি দেখতে কিছুটা রঞ্জনরশ্মি দিয়ে তোলা ছবি কিংবা কুমোরের মাটিতে তৈরি মানব গর্দানের মতো মনে হয়। লিথোগ্রাফি (পাথরে খোদাই করা ছাপ) প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে কালো গর্দানের এই ছবিতে একজন জীবনযোদ্ধার আশা আর প্রত্যাশার সংঘাত কাব্যিক ছন্দে অসাধারণভাবে বিমূর্ত হয়ে উঠেছে পাশবিক যন্ত্রণায় অন্যরকম এক মাত্রা ও উচ্চতায় ।
[email protected]