কঠোর হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থনার নিয়ম

ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে বহিরাগত নাগরিকদের আশ্রয় প্রার্থনার নিয়মকানুন ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে বিপুলসংখ্যক বহিরাগতের আগমন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের প্রধান কিরস্টেন নিয়েলসন ইতিমধ্যে তাঁর চাকরি খুইয়েছেন। বাদ যাওয়ার তালিকায় রয়েছেন অভিবাসন সার্ভিসের প্রধান ফ্রান্সিস সিসনা ও এই বিভাগের প্রধান আইনজীবী। এমনকি র‍্যানডলফ ‘টেক্স’ অ্যালেসকেও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের (ইউএসএসএস) প্রধানের পদ থেকে। অভিবাসনব্যবস্থা আরও কঠোর করার এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কট্টরপন্থী হিসেবে বিবেচিত ট্রাম্পের অন্যতম উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার।
হোয়াইট হাউস সূত্রে বলা হয়েছে, যে নিয়মের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে ‘অ্যাসাইলাম’ বা আশ্রয় দেওয়া হয়, তা বহিরাগতদের নিরস্ত করার বদলে উৎসাহিত করে। বর্তমানে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পেতে হলে যেকোনো বহিরাগতকে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া তাঁর জন্য বিপজ্জনক, এটি প্রমাণ করতে হয়। হোয়াইট হাউস চাইছে এই নিয়ম পরিবর্তন করে আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশের ভেতরেই কোনো নিরাপদ স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে।

একাধিক সূত্র বলেছে, বহিরাগতদের আশ্রয় প্রার্থনাকে নিরুৎসাহিত করতে ট্রাম্প বয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গে আসা শিশুদের বিচ্ছিন্ন করার নিয়ম পুনর্বহাল করতে চান। অনেকের ধারণা, এই প্রশ্নে মতভেদ হওয়ার কারণেই নিয়েলসনকে পদচ্যুত করা হয়। প্রেসিডেন্ট নিজে অবশ্য বলেছেন, ‘পারিবারিক পৃথক্‌করণ’ পুনর্বহালের কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই। তবে তিনি এ কথাও বলেছেন, আশ্রয় গ্রহণের যে নিয়ম এখন চালু রয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বহিরাগতদের আগমন মন্থর করতে ট্রাম্প প্রশাসন যেসব নিয়ম চালু করেছে, তার অন্যতম হলো দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের সীমান্ত এলাকার বদলে মেক্সিকোর অভ্যন্তরে সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করা। এই নিয়ম অনুসারে তাঁদের আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক আশ্রয়প্রার্থীকে মেক্সিকোতে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত এই নিয়ম আইনসম্মত নয় যুক্তিতে সাময়িকভাবে তার বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে।

যাঁরা ইতিমধ্যে এ দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও নতুন কড়াকড়ি আরোপের চেষ্টা চলছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্ত একজন বাংলাদেশি নিজ দেশে ছুটি কাটানোর পর ফিরে আসার সময় তাঁকে বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠানো হয়। নিজ দেশ তাঁর জন্য নিরাপদ নয়, এই যুক্তিতে তিনি এ দেশে আশ্রয় পেয়েছিলেন।