তরুণদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান

ভিসিআরবির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শহীদুল আলম
ভিসিআরবির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শহীদুল আলম

মর্যাদাপূর্ণ ইনফিনিটি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী, সাংবাদিক, অধিকারকর্মী বাংলাদেশের ড. শহীদুল আলমকে সংবর্ধনা দিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ভয়েস ফর সিভিল রাইটস ইন বাংলাদেশ (ভিসিআরবি)। ৪ এপ্রিল রাতে জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে তাঁকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সাংবাদিক মুনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শহীদুল আলমকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মনজুর আহমেদ, মইনুদ্দিন নাসের, আবু তাহের, আকবর হায়দার কিরণ, নাজমুল আহসান, কনক সরওয়ার, সাহেদ আলম, রিমন ইসলাম, নিহার সিদ্দিকী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা শামীমা খান, মানবাধিকারকর্মী ফৌজিয়া, তথ্য প্রযুক্তিবিদ মুশফিকুর রহমান মিলন, সমাজকর্মী মাহমুদুর রহিম মান্না, ফয়জুন নবি, রওশন হক প্রমুখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শহীদুল আলম বলেন, ‘পুরস্কার প্রাপ্তি অবশ্যই উৎসাহব্যঞ্জক। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো যাদের সামর্থ্য রয়েছে, তাদের সঠিক সময়ে সঠিক ভূমিকা রাখা। দেশ এখন ভয়ংকর অস্থির সময় পার করছে। মানুষে-মানুষে বিশ্বাস কমে গেছে। মানুষ সত্য বলতে ভয় পায়। বাংলাদেশে বর্তমানে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তা একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত। তবে এ অবস্থার মধ্যেও অনেক তরুণ সাহসী ভূমিকা রেখে চলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোটাই হচ্ছে সঠিক ভূমিকা পালন।’
কেমন নেতৃত্ব দেখতে চান, এমন প্রশ্নের উত্তরে শহীদুল আলম বলেন, ‘আমরা যারা বড়, আমাদের পচন ধরে গেছে। তরুণদের মধ্যেই আমি আশার আলো দেখতে পাই।’ কারাগারের সময়গুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অনেক বই পড়েছি। বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজানমচা’ খুব ভালো লেগেছে। তাই আমিও নিজের কারাজীবন নিয়ে লিখব। নির্দোষ কারাবন্দীদের জন্য কাজ করব।’
অনুষ্ঠানে শহীদুল আলম বলেন, ‘প্রকৃত পক্ষে খুব অল্পসংখ্যক মানুষই বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সমর্থন করে। অধিকাংশ মানুষই চায় এই অবস্থার অবসান হোক এবং দেশে একটি মুক্ত পরিবেশ ফিরে আসুক। শেষ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ইচ্ছারই জয় হবে বলে আমি আশাবাদী।’
মনজুর আহমদ বলেন, ‘স্বাধীন দেশে শহীদুল আলমের মতো আন্তর্জাতিক পরিসরে সমাদৃত একজন মানুষকে যেভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে, তা খুবই হতাশাব্যঞ্জক। এমন দৃষ্টান্ত দেখে গুণীজনদের অনেকেই এখন দেশে ফেরার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হন।’
মইনুদ্দিন নাসের বলেন,আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ও স্বাধীনচেতা যেকোনো মানুষের জন্যই বাংলাদেশের বর্তমান দশা খুবই হতাশার। গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যেভাবে সততা ও নৈতিকতাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, তাতে এটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সহজ হবে না। তারপরও নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় রেখে সাহসের সঙ্গে সত্য উচ্চারণের কোনো বিকল্প নেই।’